• ঢাকা শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
logo

এক গ্রাম থেকেই রপ্তানি আয় হবে ৩০ হাজার কোটি টাকা

চৌধুরী ভাস্কর হোম, মৌলভীবাজার

  ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০৯:১৩

শিল্পের কেন্দ্রীকরণে গড়ে উঠছে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল। এর মধ্যে মৌলভীবাজারের প্রত্যন্ত গ্রাম শেরপুরে গড়ে উঠছে শ্রীহট্ট অর্থনৈতিক অঞ্চল। এখানে স্থাপিত কারখানার উৎপাদিত পণ্য প্রায় শতভাগই বিদেশে রপ্তানি করা হবে।

এখানকার পণ্য রপ্তানি করে দেশের প্রতিবছর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জিত হবে তিনশ’ ৫২ কোটি ৬৯ লাখ ডলার, বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা। কারখানাগুলোয় সব মিলিয়ে প্রায় ৪৪ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হবে। বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা) ও বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

বেজা জানায়, সিলেট, হবিগঞ্জ ও সুনামগঞ্জ জেলাবেষ্টিত মৌলভীবাজারের সদর উপজেলার শেরপুর গ্রামে তিনশ’৫২ একর জমিতে শ্রীহট্ট অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার জন্য ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শিল্পের বিকেন্দ্রীকরণের এ উদ্যোগটি বাস্তবায়নের কাজ পুরোদমে এগিয়ে চলছে।

এখানে শিল্প স্থাপনের জন্য ছয়টি শিল্পগ্রুপকে জমি বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। ওই গ্রুপগুলো ২৫টি কারখানা করতে সর্বমোট বিনিয়োগ করবে একশ’ ৪০ কোটি ডলার (প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকা)। তাদের দেয়া হয়েছে দুইশ’ ৩১ একর জমি। অঞ্চলের বাকি জমিতে করা হবে শিল্পের অন্যান্য অবকাঠামো ও বনায়ন। এছাড়া তৈরি করা হবে দৃষ্টিনন্দন একটি পর্যটনকেন্দ্রও।

এখানে ডিবিএল গ্রুপের ফ্লামিঙ্গো ফ্যাশন ২০টি কারখানা করার জন্য ১৭০ একর জমি পেয়েছে। এ গ্রুপটি বিনিয়োগ করবে একশ’ ১৮ কোটি ডলার। ৩৮ হাজার চারশ’ জনের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হবে এ গ্রুপের কারখানাগুলোয়। এখানে উৎপাদিত পণ্য পুরোটাই বিদেশে বিক্রি করা হবে। গ্রুপটির বার্ষিক রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে তিনশ’ ৩৩ কোটি মার্কিন ডলার।

পাঁচ কোটি ৪৮ লাখ ডলার বিনিয়োগের জন্য সাত একর জমি পেয়েছে আয়েশা ক্লথিং কোম্পানি। তাদের একটি কারখানায় কাজ করবে দুই হাজার ১০০ মানুষ। উৎপাদিত পণ্য বিদেশে বিক্রি করে নয় কোটি ৭০ লাখ ডলার বছরে আয় করবে প্রতিষ্ঠানটি।

এছাড়া এখানে আসওয়াদ কম্পোজিট মিল সাত একর, গ্রেটওয়ালস সিরামিক ২৫ একর, ডাবল গ্রেজিং তিন একর এবং আবদুল মোনেম সিরামিক্স ২১ একর জমি বরাদ্দ পেয়েছে। প্রস্তাবনা অনুযায়ী শুধু গ্রেটওয়ালই দেশে পণ্য বিক্রি করবে। অন্যরা রপ্তানি করবে। বেজা কর্মকর্তারা জানান, পরিকল্পনা অনুযায়ী চলতি বছরের ডিসেম্বর থেকে শিল্প স্থাপনের কাজ শুরু হবে। আগামী বছরের জুন নাগাদ এখানকার কারখানা থেকে উৎপাদন শুরু হবে।

বেজার চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী বলেন, প্রায় শতভাগ রপ্তানিমুখী শিল্প হবে শ্রীহট্ট অর্থনৈতিক অঞ্চল। এখানে ইতোমধ্যে একশ’ ৪০ কোটি ডলারের বিনিয়োগ প্রস্তাব পাওয়া গেছে। বিদ্যুৎ, গ্যাস সংযোগের কাজ চলছে। অবকাঠামো নির্মাণ করা হচ্ছে। আশা করছি, যথাসময়ে এটি বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে।

এ অঞ্চলের কারখানাগুলো চালু হওয়ার পর স্থানীয়দের বেকারত্ব অনেকটা কমে আসবে। প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে এখানে অনেকের কর্মসংস্থান হওয়ার সুযোগ রয়েছে। গ্যাস সংযোগ দিতে জালালাবাদ গ্যাস কাজ শুরু করেছে। গ্যাসভিত্তিক শিল্পের জন্য শ্রীহট্ট অর্থনৈতিক অঞ্চল হবে সবচেয়ে উৎকৃষ্ট স্থান। বিদ্যুতায়নের কাজও চলছে।

এ ব্যাপারে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সহসভাপতি এমএ রহিম শহিদ (সিআইপি) বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে সিলেটে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার দাবি জানিয়ে আসছিলাম। অঞ্চল প্রতিষ্ঠা হলে সিলেট বিভাগে শিল্পের প্রসার ও প্রবাসীদের বিনিয়োগে আকর্ষণ বাড়বে বলে জানান তিনি।

মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক তোফায়েল ইসলাম জানান, মাটি ভরাটের কাজ চলছে। বেজার মাধ্যমে অধিগ্রহণ করা জায়গা ইতোমধ্যে লিজ দেয়া হয়েছে। এখানে এলাকার কয়েক হাজার মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। বিদেশিরা বিনিয়োগ করবেন, পাশাপাশি দেশি বিনিয়োগ বাড়বে। প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতের যে কয়টি রাজ্য সিলেটের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে, তারা যদি বিনিয়োগ করতে চায়, তা হলে আমরা একটি বড় মার্কেট পেতে পারি। সবকিছুই প্রায় শেষদিকে। সব কিছুই আমরা গুছিয়ে নিচ্ছি।

আরও পড়ুন :

জেবি/ জেএইচ

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরে আমদানি-রপ্তানি শুরু 
হিলি স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি শুরু
আখাউড়া স্থলবন্দরে আমদানি-রপ্তানি শুরু
হিলি স্থলবন্দর দিয়ে সোমবার থেকে আমদানি-রপ্তানি শুরু
X
Fresh