পদ্মা ভাঙন: কতবার ঘুরে দাঁড়ানো যায়?
কতবার ঘুরে দাঁড়ানো যায়? প্রতিবছরই ভাঙা-গড়ার খেলায় পুতুল হচ্ছেন শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার পদ্মা পারের মানুষ। একবার ভাঙনের পর ৫শ’ কিংবা এক হাজার মিটার ভেতরে এসে নতুন ঠিকানা গড়ছেন। কিন্তু বছরান্তে আবারো ছুটতে হচ্ছে নতুন জায়গার খোঁজে। এভাবেই পদ্মার সঙ্গে চির বৈরি সম্পর্কের বন্ধন তৈরি হয়েছে পাড়ের মানুষের।
এখন যেখানে পদ্মার পার, গেল বছরও ছিল তার এক কিংবা দেড় কিলোমিটার ভেতরে। লোকমুখের গল্প অনুযায়ী, তারও আগে পাঁচ, ছয় কিংবা সাত কিলোমিটার ভেতরে ছিল পদ্মার পার।
নড়িয়ার একেক বছর একেক দিকে থেকে ভাঙে। কোনও কোনও পরিবারের ভাঙনের গল্পটা শুরু ২৫ থেকে ৩০ বছর আগে। তবে ২০১৩ সালের পর থেকেই নিঃস্ব মানুষের সংখ্যাটা বেশি হতে থাকে। বাড়তে থাকে হাহাকার।
কারো হয়তো কয়েক বছর পর ভাঙছে। কিন্তু এক বছরেই কয়েকবার ভাঙনের কবলে পড়তে হয় এমন মানুষের সংখ্যাটাও দিনদিন বাড়ছে নড়িয়ায়।
নড়িয়াবাসীর ক্ষোভ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপর। তাদের অভিযোগ, বোর্ডের অবহেলাতেই বছরের পর বছর নিঃস্ব হচ্ছে মানুষ। তাদের শেষ ভরসা তাই, উপরওয়ালাই।
এদিকে নড়িয়া ভাঙবে এমন পূর্বাভাস ছিল। সে পূর্বাভাস সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোকে জানানোও হয়েছিল। কিন্তু জানেননি নড়িয়ার মানুষ। ক্ষতিগ্রস্তরা বলছেন, ভাঙনের পূর্বাভাস জানা থাকলে মৌসুমের শুরু থেকেই প্রস্তুতি নিতে পারতেন, হয়তো ক্ষতিও কিছুটা কম হতো।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিইজিআইএস এপ্রিল মাসেই এমন পূর্বাভাস দিয়েছিল। পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ সংশ্লিষ্ট সব বিভাগকে জানিয়েও দিয়েছিলো তা।
ভাঙনের শঙ্কায় থাকা এলাকাগুলোতে বিভিন্ন রঙের পতাকা দিয়ে স্থানীয় মানুষকে সতর্ক করার কথা। কিন্তু নড়িয়াবাসীর কাছে পৌঁছেনি সে সতর্কতা। কারো চোখেই পড়েনি সতর্ক সংকেত সম্বলিত কোনও পতাকা।
সরকারি-বেসরকারি সহযোগিতা নিয়ে জীবনযুদ্ধে আবারও ঘুরে দাঁড়াতে চান শরীয়তপুরের নড়িয়াবাসী।
এসএস
মন্তব্য করুন