• ঢাকা শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
logo

নম্বর কম পাওয়ায় দুই শিক্ষিকার ক্লাস বর্জন

কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় সংবাদদাতা

  ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১৩:৪৫

পরীক্ষার খাতায় নম্বর কম দেয়ার অভিযোগ এনে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ফোকলোর বিভাগের দুই শিক্ষিকার ক্লাস বর্জন করেছে ওই বিভাগের দুটি ব্যাচের শিক্ষার্থীরা।

এই দুই শিক্ষিকা হলেন নিগার সুলতানা ও আতিজা দীল আফরোজ।

২০১৪-১৫ সেশন থেকে চালু হওয়া ফোকলোর বিভাগটিতে বর্তমানে চারটি ব্যাচ রয়েছে।

সম্প্রতি সেই বিভাগের ২০১৫-১৬ ও ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের দুটি ব্যাচ বিভাগের দুই শিক্ষিকা নিগার সুলতানা ও আতিজা দীল আফরোজার ক্লাস বর্জন করেছে। একইসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ে তাদের সকল শিক্ষা গ্রহণে এই দুই শিক্ষিকার ক্লাস আর করবেন না বলে ঘোষণা দিয়েছেন তারা।

দুই শিক্ষিকা ইনকোর্স পরীক্ষার খাতায় নম্বর কম দেয়া ক্লাসে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বাজে ব্যবহার করার অভিযোগ তুলেছে শিক্ষার্থীরা। ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা দুই দফা দাবি জানিয়ে বিভাগীয় প্রধান বরাবর স্মারকলিপি জমা দেন । যেখানে দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে, অভিযুক্ত দুই শিক্ষিকার ক্লাসে যাবে না শিক্ষার্থীরা, পরীক্ষার ফলাফল পুনর্মূল্যায়ন বা এসাইনমেন্টসহ কোর্সের পুনরায় পরীক্ষা নেয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।

এর আগেও ২০১৭ সালের ২১ মে বিভাগীয় প্রধান ড. মো. সাইফুল ইসলাম ও তৎকালীন উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহীত উল আলমের কাছে অভিযোগ জানালেও তার কোনও ফলাফল পায়নি শিক্ষার্থীরা। বরং তার প্রভাবে শিক্ষার্থীদের ফলাফলে প্রকাশ পেয়েছে দুই শিক্ষিকার ক্ষোভ এমনটাই জানিয়েছে শিক্ষার্থীরা।

-----------------------------------------------
আরও পড়ুন :মেহেরপুরে আড়াই মাসে হাসপাতালে মৃত্যু ৩৯ শিশুর
-----------------------------------------------

বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের দ্বিতীয় বর্ষ ১ম সেমিস্টারের ফলাফলের দিকে লক্ষ্য করে দেখার আহ্বান জানালে দেখা যায় অন্যান্য কোর্সে তাদের ফলাফল জিপিএ ৩.০০-৩.৭৫ পর্যন্ত পাচ্ছে কিন্তু কোর্স নম্বর ২০৩ ও ২০৫ এ অধিকাংশ শিক্ষার্থী জিপিএ ২.০০-২.৭৫ এর মধ্যে। যার দরুন প্রভাব পড়েছে সম্পূর্ণ ফলাফলে। যেখানে সর্বোচ্চ ফলাফল হলো ৩.৪৫। যা একজন মাত্র পেয়েছেন। অকৃতকার্য হয়েছেন ১০ জন। যার মধ্যে ২০৩ নং কোর্সে ছয়জন, ২০৩ ও ২০৫ উভয় কোর্সে তিনজন এবং ২০২ নং কোর্সে একজন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষার্থী বলেন, ‘দুই ম্যাম কি ক্লাস নেয় তা আমরা বুঝি না, ক্লাসে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বাজে ভাষায় কথা বলেন। নম্বর দিবে কি দিবে না তাদের বিষয়। নম্বর নিয়ে কথা বলা যাবে না। ক্লাসে ছেলে শিক্ষার্থীদের বাজে কথা বলেন। যা সকল শিক্ষার্থীদের জন্য মানসিকভাবে বিপর্যয়ের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। দুইজনে মিলে আমাদের নম্বর নিয়ে খেলছে, আমরা শিক্ষার্থীরা নম্বর আতঙ্কে ভুগছি, আমরা মুক্তি চাই। সমস্যা সমাধানে উপাচার্য স্যার এর দ্রুত সমাধান করবেন এমনটাই প্রত্যাশা করি আমরা।

এ বিষয়ে ফোকলোর বিভাগের প্রভাষক নিগার সুলতানা বলেন, আমার নামে এগুলো মিথ্যাচার। আমরা কেন এমন করবো? তারা তো আমাদের শত্রু না। ওরা ওদের সমস্যা নিয়ে আমাদের কাছে আসে না। আমাদের কাছে আসুক বলুক কি চায় তারা। উপাচার্য স্যার বিষয়টি দেখছে তাই আমি কিছু বলতে চাই না।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের একপর্যায়ে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন তিনি এবং পরিবারের পরিচয় প্রদান করে সাংবাদিকদের ভীত করার চেষ্টা করেন।

২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরাও একই সমস্যায় অভিযোগ এনে ক্লাস বর্জন করেছে। যতক্ষণ পর্যন্ত সমস্যার সমাধান না হবে তারা কোনও ক্লাসে যাবে না বলে ঘোষণা দিয়েছে। জানা গেছে ঘোষণা অনুযায়ী ক্লাস থাকলেও ক্লাসে যায়নি শিক্ষার্থীরা।
অন্যদিকে আতিজা দীল আফরোজ বলেন, ‘এটা আমার বা আমাদের সমস্যা না। আর তারা চাইলেই তো সব হবে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম আছে সেভাবেই সব হবে। ক্লাস করবে না তারা বললেই তো হবে না। আর শিক্ষার্থীদের সবাই এটা চাচ্ছে না। কয়েকজন শিক্ষার্থী আমার কাছে এসেছিলো তাদের জোর করে কয়েকজন রেখেছে বলে জানিয়েছে তারা। এ বিষয়ে উপাচার্য স্যার দেখবেন বলেছেন তাই আমরা এখন কিছু বলতে পারবো না।

এ বিষয়ে উপাচার্য প্রফেসর ড. এ এইচ এম মোস্তাফিজুর রহমান বলেন বিষয়টি আমি শুনেছি। এটির সমাধান হবে।
প্রসঙ্গত, নিগার সুলতানা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নৃবিজ্ঞান ও আতিজা দীল আফরোজ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফোকলোর বিভাগ থেকে পড়াশোনা শেষে প্রভাষক হিসেবে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দেন। যোগ দেয়ার বছরের মধ্যেই একাধিকবার তাদের নামে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ উঠে।

আরও পড়ুন :

জেবি

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
শিশুখাদ্যে মাত্রাতিরিক্ত চিনি, পরীক্ষা করবে বিএফএসএ
টেস্ট পরীক্ষার নামে অতিরিক্ত ফি নিলেই ব্যবস্থা
এইচএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণ শুরু
শুরু হচ্ছে এইচএসসির ফরম পূরণ, জেনে নিন ফি কতো
X
Fresh