ব্রিজ না করে কাজ সমাপ্ত দেখিয়ে চূড়ান্ত বিল উত্তোলন
কুড়িগ্রামে ব্রিজ না করেই কাজ সমাপ্ত দেখিয়ে প্রায় দেড় কোটি টাকা বিল দেয়ার অভিযোগ উঠেছে সড়ক ও জনপদ বিভাগের বিরুদ্ধে। স্থানীয়দের অভিযোগ বিল পাওয়ায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ধীরগতি ও নিম্নমানের কিছু কাজ করলেও কর্তৃপক্ষ উদাসীন। নির্ধারিত সময়েও ব্রিজের কাজ শেষ না হওয়ায় দুর্ভোগে পড়েছে সাত ইউনিয়নের কয়েক লাখ মানুষ।
২০১৭ সালে ভয়াবহ বন্যায় কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার কালিগঞ্জ ইউনিয়নের মন্নেয়ার পাড় স্থানে সড়ক ও জনপদের বিভাগের ১৬০ ফুট দৈর্ঘ্যের একটি ব্রিজ ভেঙে যায়। উপজেলার সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে কালিগঞ্জ, ভিতরবন্দ, কচাকাটা, নুনখাওয়াসহ সাত ইউনিয়নবাসীর। কিছুদিন সেখানে চলে খেয়া পারাপার। পরে স্থানীয়রা নিজ খরচে ড্রাম ও বাঁশ দিয়ে তৈরি করে একটি বাঁশের সাকো। সেটি ধরে অতিকষ্টে পাড়ি দেয় মানুষ।
-------------------------------------------------------
আরও পড়ুন : বরিশালে ৩২ হাজার পিস ইয়াবাসহ আটক ২
-------------------------------------------------------
পরবর্তীতে কুড়িগ্রাম সড়ক ও জনপদ সেখানে ১ কোটি ৩০ লাখ টাকা ব্যয়ে ১৬০ ফুট দৈর্ঘ্যরে একটি বেইলি ব্রিজ নির্মাণের জন্য টেন্ডার আহ্বান করে। চলতি বছরের এপ্রিল মাসে বেইলি ব্রিজ নির্মাণের কাজ পায় ঢাকার রানা বিল্ডার্স ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। অভিযোগ আছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সাব ঠিকাদার হিসেবে কুড়িগ্রামের বেলাল কনস্ট্রাকশনকে দিলেও পাঁচ মাসেও ব্রিজের চার ভাগের এক ভাগ করতে পারেনি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। অথচ জুন মাসেই কাগজ-কলমে কাজ সমাপ্ত দেখিয়ে কুড়িগ্রাম সড়ক ও জনপদ বিভাগ পুরো বিল পরিশোধ করে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে।
এলাকাবাসী আমজাদ, ফজলু মিয়া, বেলাল হোসেন, আব্দুস সালাম, ময়না বেগম, সুমি আক্তারসহ অনেকের অভিযোগ শুরু থকেই বেইলি ব্রিজটি নির্মাণ কাজ অত্যন্ত ধীরগতিতে চলছে। ব্রিজ নির্মাণে তথ্য সম্বলিত কোনও সাইনবোর্ডও না থাকায় তারা এ সম্পর্কে কিছুই জানেন না।
স্থানীয় ঠিকাদারের প্রতিনিধি ফখরুল ইসলামের দেখা পেয়ে বেইলি ব্রিজের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি তথ্য দিতে অস্বীকৃতি জানান এবং সংবাদকর্মীদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন।
সড়ক ও জনপদ বিভাগের উপ-প্রকৌশলী মজনু মিয়া কাছে বেইলি ব্রিজের তথ্য সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ১৬০ ফুট দৈর্ঘ্যের ব্রিজটি নির্মাণাধীন রয়েছে। এখানে ব্রিজের সম্মুখে এক হাজার ২২০টি সিসি ব্লক দেয়া হবে। আরও বিস্তারিত জানতে হলে নির্বাহী স্যারের কাছ থেকে তথ্য নিতে হবে।
কুড়িগ্রাম সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আমির হোসেন জানান, বেইলি সংকট থাকায় ব্রিজের কাজে কিছুটা ধীর গতিতে চলছে। তবে বেইলি দু-একদিনের মধ্যে আসলেই ব্রিজের কাজ সমাপ্ত হবে।
আগাম বিল দেয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, অর্থ বছর শেষ হওয়ার কারণেই বিল উত্তোলন করা হয়েছে। তবে পুরো অর্থ ঠিকাদারকে দেয়া হয়নি এখনও ৬০ লাখ টাকা আমাদের হাতে জমা আছে।
আরও পড়ুন :
এসএস
মন্তব্য করুন