• ঢাকা শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
logo

নদী ভাঙনে তলিয়ে গেছে স্কুল-ব্রিজ, আরও যাওয়ার পথে (ভিডিও)

আরটিভি অনলাইন রিপোর্ট

  ০২ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১৩:০২

সুগন্ধা নদীর তীব্র ভাঙনে বিলীন হচ্ছে বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার নানা স্থাপনা। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বাড়িঘর, আবাদি জমি ও দোকানপাট এরিমধ্যে নদী গর্ভে চলে গেছে। হুমকির মুখে রয়েছে দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষাকারী ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সেতুটিও। পানি উন্নয়ন বোর্ডের ব্লক বাঁধের প্রায় ৭০ শতাংশ ইতিমধ্যে চলে গেছে নদীগর্ভে। শিগগির ভাঙনরোধে ব্যবস্থা না নিলে ক্ষতিগ্রস্ত হবে এ অঞ্চলের মানুষ। ভেঙে পড়বে যোগাযোগ ব্যবস্থা।

এদিকে সুগন্ধা নদীতে একরাতেই বিলীন হয়েছে মোশারফ-রশিদা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের একাংশ। বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার এ বিদ্যালয়টির বাকি অংশও এখন বিলীনের অপেক্ষায়। এতে শিক্ষা কার্যক্রম নিয়ে শঙ্কিত শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

স্কুলের এক শিক্ষার্থী বলেন, স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে দেখি স্কুল ঠিকই আছে। সকালে ক্লাস করতে এসে দেখি স্কুল নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।

স্কুলের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, সামনে আমাদের পরীক্ষা। পড়াশোনার অনেক ক্ষতি হয়। তাৎক্ষনিকভাবে যদি কোনও ব্যবস্থা না নেয়া হয় তাহলে আমাদের পড়াশোনার অনেক ক্ষতি হবে।

-------------------------------------------------------
আরও পড়ুন : বগুড়ায় পৃথক দুর্ঘটনায় সড়কে ঝরেছে দুই প্রাণ
-------------------------------------------------------

সৈয়দ মোশারফ রশিদা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক সেলিম রেজা জানান, ২০০৩ সালে বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর (দোয়ারিকা) সেতুর পাদদেশে এ বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা হয়। ক্লাস অব্যাহত রাখার জন্য সরকারের কাছে অনুরোধ জানাচ্ছি আপদকালীন সময়ের জন্য আমাদের আর্থিকভাবে যেন সহায়তা করা হয়।

স্থানীয়রা জানান, সৈয়দ মোশারফ-রশিদা মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি বহুদিন নদী ভাঙনে ঝুঁকির মধ্যে ছিল। কিন্তু ভাঙন প্রতিরোধে সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো কোনও ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি।

জানা যায়, এ বিদ্যালয়ের মতো নদীতে মিশে গেছে, বাবুগঞ্জের বহু বসতবাড়ি, আবাদি জমি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ নানা স্থাপনা। নিঃস্ব হয়েছে বহু পরিবার। ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সেতু (দোয়ারিকা সেতু) ঝুঁকির মুখে রয়েছে। সেতুর পাদদেশে মহাসড়কের পূর্ব পাশের সংযোগ মুখের গাইড ওয়াল ভেঙে পড়েছে নদীতে। সেতুর গার্ডার অঞ্চলেও গ্রাস করেছে ভাঙন। পানি উন্নয়ন বোর্ডের ব্লক বাঁধের প্রায় ৭০ শতাংশ ইতিমধ্যে চলে গেছে নদীগর্ভে।

স্থানীয়রা বলেন, আমাদের ঘর-বাড়ি, ভিটে, সবকিছু নদীতে বিলীন হচ্ছে। তাই দ্রুত ব্যবস্থা নিয়ে ঝুঁকির মুখে থাকা সৈয়দ মোশারফ-রশিদা মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে প্রায় ১২২ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত স্বপ্নের বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর (দোয়ারিকা) সেতু রক্ষাও সরকারকে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

সুগন্ধার ভাঙন রোধে উদ্যোগ নেয়ার কথা জানালেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা। পানি উন্নয়ন বোর্ড নির্বাহী প্রকৌশলী আবু সাঈদ বলেন, টেকসই একটি প্রকল্প বর্তমানে প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে এ এলাকার ব্রিজসহ তৎসংলগ্ন এলাকায় রক্ষায় আমরা একটি কার্যকরী ভূমিকা পালন করতে পারবো।

বাবুগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান এস এম খালেদ হোসেন স্বপন বলেন, চার-পাঁচ বছর ধরে নদী ভাঙন শুরু হয়েছে। উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে স্থানীয়দের সঙ্গে সমন্বয় করে একাধিকবার অর্থ সহায়তার মাধ্যমে পারকোপাইন করেছি, এতে কিছুটা রক্ষা পেয়েছে। ভাঙন প্রতিরোধের একটি স্থায়ী সমাধানের জন্য ইতিপূর্বে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। প্রায় শত কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই সেতুটি বাঁচাতে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে।

এদিকে নদী ভাঙন রোধে সরকারের কার্যকর উদ্যোগের দাবিতে মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছেন ক্ষতিগ্রস্তরা।

আরও পড়ুন :

এমসি/এসএস

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh