• ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
logo

নতুন লঞ্চ সার্ভিসে পাল্টে গেলো দৃশ্যপট

৩ লক্ষাধিক লোকের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের সম্ভাবনা

ইসমাইল হোসেন কিরন, হাতিয়া

  ১৪ আগস্ট ২০১৮, ২১:৪৪

জনমানবহীন জনপথ হঠাৎ সরগরম, পরিত্যক্ত ছোট ছোট খুপরি চায়ের দোকানে সাজসজ্জার প্রস্তুতি, মাথায় গামছা বাধা নৃত্য দিনের দিনমজুর শ্রমিকের নতুন কর্মসংস্থানের আনন্দ মুখ, অটোরিকশা, ভ্যান গাড়ি ও ভটভটি চালকের হঠাৎ কিছু পাওয়ার আনন্দ, ডাল, বাদাম, শুটকি বেপারিদের মোকামের সঙ্গে উচ্চ স্বরে মোবাইলে কথোপকথন। সব মিলিয়ে হাতিয়ার চরচেঙ্গা ঘাটকে কেন্দ্র করে এক শ্রেণির মানুষের মধ্যে তৎপরতা অনেকটা লক্ষ্য করার মতো।

বিচ্ছিন্ন এ জনপদের সঙ্গে রাজধানী ঢাকার নতুন বিলাস বহুল লঞ্চ সার্ভিস চালু হওয়ায় এর অন্যতম কারণ।

নোয়াখালী বিচ্ছিন্ন দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার দক্ষিণাঞ্চলের ৪টি ইউনিয়ন বুড়িরচর, সোনাদিয়া, জাহাজমারা ও নিঝুম দ্বীপ। এ ইউনিয়নগুলোতে প্রায় ৩ লাখ লোকের বসবাস। এখানকার অধিকাংশ মানুষ কৃষি, জেলে ও ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। ৪টি ইউনিয়ন নদীর কাছে এবং ব্যবসায়ীকভাবে দুর্বল যোগাযোগের কারণে অনেকটা পিছিয়ে এখানকার মানুষ।

জাহাজমারা বোট মালিক সমিতির সভাপতি রাশেদ উদ্দিন জানান, জাহাজমারা ঘাটে ছোট ছোট মাছ ধরার ট্রলার ছাড়াও দুই শতাধিক বড় বড় ফিসিং বোট (সাগরে মাছ ধরা বড় ট্রলার) রয়েছে। পূর্বে এক ঝুরি মাছ ঢাকা পৌঁছতে প্রায় চার হাজার টাকা খরচ হতো। এখন নতুন লঞ্চ সার্ভিস চালু হওয়ায় খরচ অর্ধেকের চেয়ে কম হবে।

হাতিয়ার উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, জাহাজমারা, বুড়িরচর ও সোনাদিয়া ইউনিয়নের প্রতিবছর ৪ হাজার ৭শ’ হেক্টর জমিতে বাদাম, ৫ হাজার ২শ’ হেক্টর জমিতে মুগ ডাল চাষ হয়। এই ডাল ও বাদাম স্থানীয় চাহিদার পরিমাণের অনেক বেশি হওয়ায় তা বাহিরে রপ্তানি করতে হয়। স্থানীয়ভাবে প্রতিটি বাজারে ছোট ছোট বেপারিরা গ্রাম থেকে ক্রয় করে ঢাকা রপ্তানি করে। এ ক্ষেত্রে চরচেঙ্গা ঘাটের মাধ্যমে বস্তা প্রতি খরচ অনেক কমে যাওয়ায় লাভবান হবেন ব্যবসায়ীরা।

নিঝুম দ্বীপে প্রতি বছর ইলিশ মাছ ছাড়াও শীত মৌসুমে প্রচুর চেউয়া মাছ পাওয়া যায়। জেলেরা এই মাছকে শুকিয়ে শুটকি করে বিক্রি করে। চেউয়া শুটকি দিয়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান মুরগীর খাবার ফিড তৈরি করে। ঢাকার গাজীপুরের ফিড তৈরি কারখানা প্রভিটা লি: এর কর্মকর্তারা জানান, ঢাকা থেকে সরাসরি চরচেঙ্গা লঞ্চ সার্ভিস চালু হওয়ায় নিঝুম দ্বীপ ও জাহাজমারা থেকে শুটকি কিনাটা অর্থনৈতিকভাবে সাশ্রয়ী হবে। পাশাপাশি সময়ও কম লাগবে।