• ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
logo

নেত্রকোনা- ৪

আওয়ামী লীগ চায় আসনটি ধরে রাখতে, বিএনপি চায় পুনরুদ্ধার

গজনবী বিপ্লব, নেত্রকোনা

  ২৩ জুলাই ২০১৮, ১৩:২০

নেত্রকোনার হাওরাঞ্চল অধ্যুষিত মদন-মোহনগঞ্জ-খালিয়াজুরী উপজেলা নিয়ে গঠিত জাতীয় সংসদের ১৬৪, নেত্রকোনা-৪ (মদন- মোহনগঞ্জ- খালিয়াজুরী) আসন। এ আসনে তিন উপজেলায় ২১টি ইউনিয়ন ও দুইটি পৌরসভায় মোট ভোটার সংখ্যা দুই লাখ ৯২ হাজার ২৩৬ জন। এর মধ্যে মদন উপজেলায় ১লাখ ৯ হাজার ১৩৯, মোহনগঞ্জে ১লাখ ১৮ হাজার ৫৪৪ এবং খালিয়াজুরীতে ৬৪ হাজার ৬৫৩ জন। আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও অন্যান্য রাজনৈতিক দলের একাধিক মনোনয়ন প্রত্যাশী নির্বাচনী মাঠে তৎপরতা শুরু করেছেন। তারা নির্বাচনী এলাকায় প্রায়শই আসা যাওয়া করছেন। নৌকার ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত এ আসনটি ধরে রাখতে চায় আওয়ামী লীগ। অন্যদিকে বিএনপি চায় আসনটি পুনরুদ্ধার করতে। এ আসনটিতে জাতীয় পার্টির মনোনয়ন প্রত্যাশীর তেমন কোনও তৎপরতা নেই। নির্বাচনী এলাকার তিন উপজেলা সদর থেকে শুরু করে ইউনিয়নের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলোতে শোভা পাচ্ছে দলীয় প্রধানসহ মনোনয়ন প্রত্যাশীদের ছবি সম্বলিত পোস্টার, বিলবোর্ড এবং ব্যানার।

--------------------------------------------------------
আরও পড়ুন : চট্টগ্রামে ডিবি কার্যালয়ে আগুন
--------------------------------------------------------

হাওরাঞ্চল অধ্যুষিত এ আসনটি বড় দুই রাজনৈতিক দলের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ-বিএনপি থেকে কে পাবেন দলীয় মনোনয়ন এ নিয়ে সর্বমহলে আলোচনা শোনা যাচ্ছে। সম্ভাব্য প্রার্থীরা নিজেদের জানান দিতে রাজনৈতিক কর্মসূচির পাশাপাশি এলাকায় বিভিন্ন ধর্মীয়, সামাজিক, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করছেন। এ আসনে মদন, মোহনগঞ্জে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের অবস্থান সুদৃঢ়। খালিয়াজুরীতে রয়েছে কিছুটা দলীয় দ্বন্ধ ও কোন্দল। এই তিন উপজেলায় বিএনপির অনেকটা নড়বড়ে অবস্থা। তবে বিএনপির অধিকাংশ নেতাকর্মীরা সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরের ব্যাপারে খুবই দুর্বল। সবাই চায় আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে লুৎফুজ্জামান বাবরের অংশগ্রহণ। বিগত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে এ আসনের মদন, মোহনগঞ্জ, খালিয়াজুরী উপজেলায় আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীরা পরাজিত হয়েছেন। দলীয় মনোনয়ন বঞ্চিত হয়ে খালিয়াজুরী উপজেলা যুবলীগের সভাপতি সামছুজ্জামান তালুকদার সোয়েব সিদ্দিকী স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে এবং মদন ও মোহনগঞ্জে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীরা বিজয়ী হয়েছেন। এ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীরা এলাকায় একে অপরকে প্রকাশ্যে সভা-সমাবেশে দোষারোপ করে চলেছেন।

স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে ১৯৭৩ সালে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে এমপি নির্বাচিত হন আবদুল খালেক। তার মৃত্যুতে আসন পুনর্বিন্যাস হলে আবদুল মোমেন আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পেয়ে এমপি নির্বাচিত হন এবং বঙ্গবন্ধু সরকারের ত্রাণ পুনর্বাসন ও খাদ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৬ সালে জাতীয় পার্টি থেকে দেওয়ান শাহজাহান ইয়ার চৌধুরীর পর ১৯৯১ সালে বিএনপি থেকে দলীয় মনোনয়ন পেয়ে প্রথমবারের মত এমপি নির্বাচিত হন লুৎফুজ্জামান বাবর। ১৯৯৬ সালে নির্বাচনে এ আসনে ফের বিজয় লাভ করেন আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী আবদুল মমিন। পরবর্তী সময়ে ২০০১ সালে বিএনপির মনোনয়ন পেয়ে লুৎফুজ্জামান বাবর দ্বিতীয়বার এমপি নির্বাচিত হন। সে সময় বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী হিসেবে তাকে দায়িত্ব দেয়া হয়। ২০০৮ সালের নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করে প্রয়াত আবদুল মমিনের সহধর্মিণী রেবেকা মমিন বিজয়ী হন। সর্বশেষ ২০১৪ সালে অনুষ্ঠিত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করায় রেবেকা মমিন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আবারও এমপি নির্বাচিত হন।