• ঢাকা শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
logo

মানিকগঞ্জে জমে উঠেছে নৌকার হাট

জাহাঙ্গীর আলম বিশ্বাস, মানিকগঞ্জ

  ২১ জুলাই ২০১৮, ১৭:০৭

মানিকগঞ্জে জমে উঠেছে নৌকার হাট। জেলার ঘিওর উপজেলার ঘিওর হাট, তরা হাট, হরিরামপুর উপজেলার ঝিটকা হাট, সিংগাইর উপজেলার জামসা হাট ও দৌলতপুর উপজেলার উলাইল হাটসহ টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার গয়হাটা হাটে এখন চলছে জমজমাট নৌকার বেচাকেনা।

সম্প্রতি বেশকিছু হাটে গিয়ে দেখা যায় ডিঙ্গিসহ নানা ধরনের শত শত নৌকা বিক্রির জন্য মাঠে সাজিয়ে রাখা হয়েছে।

পদ্মা ও যমুনার পাশাপাশি মানিকগঞ্জের অভ্যন্তরীণ নদীগুলোতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নিম্নাঞ্চলে পানি ঢুকে পড়েছে। এ কারণে নৌকার চাহিদা বেড়ে গেছে।

বেশ কয়েকজন নৌকার কারিগর জানান, বর্ষা এলেই এ অঞ্চলে নৌকার চাহিদা বেড়ে যায়। সারা বছর অন্য কাজ করলেও এসময় তারা শুধু নৌকাই তৈরি করেন। বছরের তিন থেকে চার মাস তাদের এ ব্যস্ততা থাকে। এখন দিন-রাত নৌকা তৈরিতেই সময় কাটছে তাদের।

ডিঙ্গি ও কোষাসহ বিভিন্ন ধরনের নৌকা তৈরিতে তারা জামরুল, চাম্বুইল, কড়ই, আম, কদম ও শিমুল গাছের কাঠ ব্যবহার করেন। নয় ফুট থেকে শুরু করে ১৫ পর্যন্ত লম্বা নৌকা তৈরি করা হয়। কাঠ ও আকার ভেদে নৌকার দামও বিভিন্ন।

সাধারণ মানের কাঠের তৈরি প্রতিটি ডিঙ্গি তৈরিতে খরচ হয় আটারশো থেকে দুই হাজার টাকা। আর বিক্রি হয় আড়াই হাজার থেকে তিন হাজার টাকায়। অন্যদিকে কাঠের মান ভালো হলে প্রতিটি ডিঙ্গি বিক্রি হয় চার হাজার থেকে পাঁচ হাজার টাকায়।

নৌকার কারিগর ছাড়াও এসব হাটে কেনাবেচার ক্ষেত্রে বেশি ভূমিকা পালন করেন মানিকগঞ্জ ও আশপাশের জেলার নৌকার বেপারীরা। বেপারীরা এক হাট থেকে নৌকা কিনে আরেক হাটে বিক্রি করে থাকেন।

টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার কুষ্টিয়া গ্রামের নিরোদ ভৌমিক আরটিভি অনলাইনকে বলেন, তিনি গয়হাটা হাট থেকে নয়টি নৌকা ক্রয় করে বুধবার এসেছেন ঘিওর হাটে। ঠেলা গাড়িতে করে নয়টি নৌকা নিয়ে ঘিওরে আসতে তার খরচ হয়েছে দুই হাজার চারশ টাকা। তিন হাজার টাকা দরে নয়টি নৌকা বিক্রি করে পান ২৭ হাজার টাকা। এতে তার খরচ বাদে লাভ হয়েছে দুই হাজার টাকা।

মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলার গাজীসাইল গ্রামের খগেন্দ্র নাথ তরফদার আরটিভি অনলাইনকে বলেন, তিনি বিভিন্ন হাটে নৌকা কেনাবেচা করেন। গেল পাঁচ সপ্তাহ ধরে ব্যাপকভাবে নৌকার বেচাকেনা হচ্ছে।

তিনি জানান বুধবার ঘিওর হাটে প্রায় দুই হাজার নৌকা উঠেছে এবং বিক্রিও হয়েছে প্রায় এক হাজার নৌকা। আরও কয়েক সপ্তাহ এই বেচাকেনা চলবে বলে জানান তিনি।

ঘিওর হাটের ইজারাদারের প্রতিনিধি রসুলপুর গ্রামের মনির উদ্দিন আরটিভি অনলাইনকে বলেন, ঘিওর হাটে কমপক্ষে ৫০ জন বেপারি আছেন যারা মানিকগঞ্জ ও এর আশেপাশের হাটগুলোতে নৌকা বেচাকেনা করেন।

শিবালয় উপজেলার উলাইল ইউনিয়নের কাষ্টসাগ্রা গ্রামের মো. নেহাল ১০ হাত লম্বা চাম্বুইল কাঠের একটি ডিঙ্গি নৌকা কিনেছেন দুই হাজার টাকা দিয়ে। তিনি বলেন, বাড়ির চারদিকে পানি। নৌকা ছাড়া বাড়ি থেকে বের হয়ে রাস্তায় আসা যায় না। তার পঞ্চম শ্রেণি পড়ুয়া মেয়ে লাবণীর স্কুলে যাওয়া আসার কাজেও নৌকার বিশেষ প্রয়োজন বলে জানান তিনি।

ঘিওর উপজেলার কাহেতারা গ্রামের মো. ফরহাদ আরটিভি অনলাইনকে বলেন, তিনি তিন হাজার টাকা দিয়ে ১১ হাত লম্বা একটি ডিঙ্গি নৌকা কিনেছেন। তিনিও বলেন, নৌকা ছাড়া বাড়ি থেকে বের হওয়া যায় না।

চরঘিওর এলাকার শেফালী বেগম আরটিভি অনলাইনকে বলেন, তার বাড়ির চারদিকে পানি। এ কারণে তিনি বুধবার ঘিওর হাট থেকে দুই হাজার ৮০০ টাকা দিয়ে নয় হাত লম্বা কড়ই কাঠের একটি ডিঙ্গি নৌকা কিনেছেন।

ঘিওর হাটে নৌকা কিনতে আসা অনেকেই বলেন, গত বছরের তুলনায় এবার নৌকার দাম ৫০০ থেকে এক হাজার টাকা বাড়তি। অন্যদিকে নৌকা বিক্রেতারা বলেন, কাঠের দাম বৃদ্ধির কারণেই নৌকার দাম একটু বেড়েছে।

জেবি

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
নৌকা বাদ দিলেও ভোট চুরির প্রকল্প থেকে সরেনি সরকার: আমীর খসরু
মোজাম্বিক উপকূলে নৌকাডুবি, ৯০ জনেরও বেশি নিহত
ট্রলারডুবি : কনস্টেবলসহ দুজনের মরদেহ উদ্ধার
তুরস্কে অভিবাসী নৌকা ডুবি, ৭ শিশুসহ নিহত ২২
X
Fresh