পদ্মায় ২০ যাত্রী নিয়ে স্পিডবোট ডুবি, বন্ধ লঞ্চ চলাচল
শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ী নৌরুটের মাঝ পদ্মায় ২০ জন যাত্রী নিয়ে একটি স্পিডবোট ডুবে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
এদিকে বৈরী আবহাওয়ার কারণে সকাল ৯টা থেকে বন্ধ রয়েছে লঞ্চ চলাচল।
আজ বুধবার সকালে প্রবল বাতাসের কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটে বলে প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে।
স্থানীয়রা জানায়, প্রবল ঢেউয়ের আঘাতে শামীম এন্টারপ্রাইজের একটি স্পিডবোট ডুবে যায়। তবে কতজন যাত্রীকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে তা জানা যায়নি।
বিআইডব্লিউটিএর কাঁঠালবাড়ী লঞ্চ ঘাটের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর আক্তার হোসেন বলেন, সকাল সোয়া নয়টার দিকে শিমুলিয়া থেকে কাঁঠালবাড়ী আসার পথে একটি যাত্রীবাহী স্পিডবোট ডুবে গেছে। যতটুকু জানতে পেরেছি যাত্রীদের উদ্ধার করা গেছে। তবে কতজনকে উদ্ধার করা হয়েছে এর সঠিক তথ্য এখনও জানতে পারিনি।
আরও পড়ুন:
পি
মন্তব্য করুন
ইউটিউব দেখে খতনার চেষ্টা, শিশুর মৃত্যু
প্রতিবেশীর সুন্নতে খতনা করার কৌতূহল থেকে প্রাণ গেছে বাগেরহাটের চিতলমারীর সাড়ে তিন বছর বয়সী শিশু শিহাব শেখের। তাকে হত্যার দায় করেছে প্রতিবেশী কিশোর হামিম শেখ (১৭)। হাজাম হওয়ার ইচ্ছা থেকে ইউটিউবে বিভিন্ন ভিডিও দেখে এ ঘটনা ঘটায় শিহাব।
বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে তাকে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করলে সে হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দেয়। বুধবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) রাতে হামিম শেখের ঘরের পাশ থেকে শিহাবের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
নিহত শিশু শিহাব চিতলমারী উপজেলার হিজলা গ্রামের ফরহাদ শেখের ছেলে। অভিযুক্ত হামিম শেখ একই এলাকার রমজান শেখের ছেলে।
জানা গেছে, এদিন আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করে কিশোর হামিম আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে তার মধ্যে সুন্নতে খতনা দেওয়ার কৌতূহল ছিল। এজন্য সে নিয়মিত ইউটিউবের ভিডিও দেখতো। তার হাজাম হওয়ার ইচ্ছে ছিল। বুধবার বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে শিহাবকে ডেকে ঘরের মধ্যে নিয়ে যায় হামিম। শিহাবের হাত-পা ও মুখ বেঁধে সে একটি কাঁচি দিয়ে খতনা করার চেষ্টা করে। এতে শিহাবের পুরুষাঙ্গ কেটে যায়। একপর্যায়ে শিহাব অচেতন হয়ে পড়লে শৌচাগারের পাশে রেখে দেয়। সেখানেই শিহাবের মৃত্যু হয় এবং হামিম বাড়ির বাইরে ঘুরতে থাকে। অনেক খোঁজাখুঁজির পর তাকে না পেয়ে রাতে মাইকিংও করেন স্থানীয়রা। পরবর্তীতে হামিমের ঘর-সংলগ্ন শৌচাগারের পাশ থেকে শিহাবের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনায় শিশু শিহাবের মা সুমি বেগম বাদী হয়ে হামিমকে আসামি করে চিতলমারী থানায় হত্যা মামলা করেন। বুধবার রাতেই পুলিশ অভিযুক্ত হামিম শেখকে আটক করে। বৃহস্পতিবার আদালতের বিচারক মো. আছাদুল ইসলাম তাকে যশোর কিশোর সংশোধোনাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা চিতলমারী থানার ওসি (তদন্ত) মো. তরিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার শিশু শিহাবের মরদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। পারিবারিক কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয়েছে।
শপিং শেষে রেস্টুরেন্টে খেতে গিয়ে ৩ বোনের মৃত্যু
‘রিয়ার মালয়েশিয়া যাওয়ার ফ্লাইট ছিল শুক্রবার (১ মার্চ) রাতে। বিদেশ যাওয়ার আগের দিন রাতে বোনকে নিয়ে শপিং করতে যায় রিয়া। সেখানে শপিং শেষে রেস্টুরেন্টে গিয়ে আর ফেরেনি দুবোন। বৃহস্পতিবার রাতে বেইলি রোডের বহুতল ভবনে লাগা আগুনে মৃত্যু হয় আমার মায়েদের।’
শুক্রবার (১ মার্চ) গণমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এভাবেই বলছিলেন ফৌজিয়া আফরিন রিয়া ও সাদিয়া আফরিন আলিশার বাবা কোরবান আলী।
দুমেয়েকে হারানো এই বাবা কান্নাজড়িতকণ্ঠে বলেন, ‘শপিং করতে যাওয়ার আগে আমার মেয়েরা বলেছিল, আন্টির সঙ্গে দেখা করে বাবা আমরা তাড়াতাড়ি ফিরবো।’
কোরবান আলী বলেন, ‘ফেব্রুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহে তারা এলাকায় এসেছিল। কয়েক দিন বাড়িতে থেকে চলে গেছে। শুক্রবার (১ মার্চ) রাতে আমিসহ মালয়েশিয়া যাওয়ার কথা ছিল। টিকিটও কেটেছিল। কিন্তু গত রাতেই মারা গেছে। নিমু তাদের খালাতো বোন। একই সঙ্গে গিয়ে আর ফেরেনি। আমার ঘর আনন্দে ভরে থাকতো। আজ আমার ঘর শূন্য।’
তথ্যসূত্র বলছে, বেইলি রোডের বহুতল ভবনে লাগা আগুনে মারা যাওয়া ৪৬ জনের মধ্যে দুজন হলেন রিয়া ও আলিশা। তারা কুমিল্লার লালমাই উপজেলার পেরুল দক্ষিণ ইউনিয়নের চরবাড়িয়া এলাকার হাজী কোরবান আলীর মেয়ে। ফৌজিয়া আফরিন রিয়া মালয়েশিয়ার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে এমবিএ শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী। আর সাদিয়া আফরিন আলিশা ঢাকার ভিকারুননিসা নূন স্কুলের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী। একই ঘটনায় মারা গেছেন তাদের খালাতো বোন নুসরাত জাহান নিমু। তিনি সদর উপজেলার হাতিগড়া এলাকার আব্দুল কুদ্দুসের মেয়ে ও ঢাকা সিটি কলেজের শিক্ষার্থী। তারা একই সঙ্গে শপিং করতে গিয়েছিলেন। ফাঁকে কাচ্চি ভাই রেস্টুরেন্টে খেতে ঢোকেন।
কান্না করতে করতে কোরবান আলী বলেন, যখন জীবিত মানুষ উদ্ধার শেষ হলো তখন আমার শরীর কাঁপছিল। আমি ঘামাচ্ছিলাম। বুকের ভেতর কেমন জানি হয়েছিল। আমার চোখে পানি আর বুক ভারী হয়ে আসছিল। রাত যখন ১০টার কাছাকাছি, তখন আমাদের মরদেহ বুঝিয়ে দেওয়া হলো। যে মেয়েকে সন্ধ্যায় ভালোভাবে বিদায় দিয়েছি তার পোড়া লাশ দিয়েছে আমাকে। আমি আমার দুই স্বপ্নের লাশ দিয়ে বাড়ি এসেছি। বিকালে পুকুর পাশের কবরস্থানে রেখে আসবো আমার দুই স্বপ্ন।
তিনি সরকারকে দায়ী করে বলেন, আমরা যারা ঢাকায় থাকি, সবসময় আতঙ্কে থাকি। কেউ নিরাপদ নই। একটা দুর্ঘটনা ঘটলে সবাই নড়েচড়ে বসে। আবার কদিন পরে আগের মতো হয়ে যায়। তারা কেউ তেমন পুড়ে মারা যায়নি। শ্বাসকষ্টে মারা গেছে। তারা বের হতে পারেনি। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেছে ফায়ার সার্ভিস। কিন্তু ডিশ লাইনের ক্যাবল, ইন্টারনেট ক্যাবল আর বৈদ্যুতিক ক্যাবলের জন্য তাদের গাড়িও ঠিক জায়গায় স্থাপন করে পানি দিতে পারেনি। আর ফলাফল হলো লাশের পর মরদেহ।
মৃত্যুর আগে ফোনে মায়ের সঙ্গে কালেমা পড়েন রকি
রাজধানীর বেইলি রোডের গ্রিন কজি কটেজে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে মারা গেছেন কাচ্চি ভাই রেস্টুরেন্টের ক্যাশিয়ার কামরুল হাবিব রকি। মৃত্যুর আগে তিনি তার মায়ের সঙ্গে ফোনে কালেমা পড়েন বলে জানা গেছে।
শুক্রবার (১ মার্চ) সকালে তার মরদেহ যশোরের নিজ বাড়িতে পৌঁছার পর সবাই কান্নায় ভেঙে পড়েন। জানাজা শেষে দুপুরে তাকে দাফন করা হয়।
এর আগে, বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) রাতে ভবনে আগুন লাগার পর প্রথমে মামা জাহিদ হোসেনকে ফোন করেন রকি। ফোনে তিনি তার মামাকে বলেন, ‘মামা, রেস্টুরেন্টে আগুন লেগেছে। কেউ বের হতে পারছে না। আমাকে বাঁচাও, দম নিতে খুব কষ্ট হচ্ছে।’ পরে মায়ের সঙ্গেও ফোনে কথা বলেন রকি। এসময় মৃত্যু আসন্ন আশঙ্কায় মায়ের পরামর্শে কালেমা পড়েন যশোরের এই যুবক। পরে আগুনে তার মৃত্যু হয়।
নিহত রকির মামা জাহিদ হোসেন বলেন, রাতে আমি রকিকে ভিডিও কল দিয়েছিলাম। কিন্তু তখন সে ফোন রিসিভ করেনি। কিছু সময় পর সে আমাকে কল দিয়ে, বাঁচার আকুতি জানায়। আমি সাথে সাথে কুষ্টিয়া থেকে রওয়ানা দেই ঢাকায়। আহত রকিকে প্রথমে রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে ঢাকা মেডিকেল কালেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। রকির শরীরে আগুনে পোড়ার কোনো চিহ্ন নেই। অক্সিজেন সংকটে তার মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
নিহত রকির মা রিপা খাতুন বলেন, রাতে ওর মামার কাছ থেকে খবর পেয়ে আমি রকির ফোনে কল করি। ও আমাকে বলে, মা আমি হয়তো আর বাঁচব না। এরপর আমি ওকে কালেমা পড়তে বললে আমার সঙ্গে কালেমা পড়ে।
জেলখানার গল্পে বেরিয়ে এলো খুনের রহস্য
দুই বছর আগে নিখোঁজ হয় ছেলে। মা-বাবা ধরেই নিয়েছিলেন তাদের সন্তান হারিয়ে গেছে। অনেকটা ভুলেই গিয়েছিলেন সন্তান হারানোর বেদনা। তবে দুই বছর পর জানতে পারলেন তাদের সন্তানকে খুন করা হয়েছে। পুতে রাখা হয়েছে একটি মাদ্রাসার সেপটিক ট্যাঙ্কের পাশে। আর জেলখানার গল্প থেকে ওই খুনের রহস্য জানতে পেরেছে তারা।
শুক্রবার (১ মার্চ) নাটোরের গুরুদাসপুর পৌরসভার খলিফাপাড়া মাফিজুল ইসলামের খুনের কথা জানতে পারে তার পরিবার। শনিবার (২ মার্চ) সকাল থেকে ঘটনাস্থল ঘিরে রেখেছে পুলিশ।
জানা গেছে, ২০২২ সালের ১৭ এপ্রিল থেকে নিখোঁজ ছিলেন পৌরসভার খলিফাপাড়া মাফিজুল ইসলাম। প্রায় দুই বছর পর পরিবারটি জানতে পারে, তাকে খুন করা হয়েছে। পুঁতে রাখা লাশ রয়েছে চাঁচকৈড় পুরানপাড়ার একটি বালিকা মাদ্রাসার সেপটিক ট্যাঙ্কের পাশে।
আসামিদের বরাত দিয়ে র্যাব জানিয়েছে, বিস্কুট ফ্যাক্টরিতে চাকরির সময় নিহত মাফিজুল ইসলামের সঙ্গে মাদ্রাসার নৈশপ্রহরীর মেয়ের পরকীয়া সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বিষয়টি নিয়ে আবু তাহের খলিফার কাছে অভিযোগ করে জামাতা আল হাবিব সরকার। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আবু তাহের কৌশলে মাফিজুলকে ২০২২ সালের ১৭ এপ্রিল তার বাসায় ডেকে নেয়। রাতে তাকে নিজের কর্মস্থল চাঁচকৈড় বালিকা দাখিল মাদ্রাসায় নিয়ে যায়। সেখানে মাফিজুলকে হাত-পা বেঁধে ও মুখে স্কচটেপ দিয়ে হত্যা করে তারা।
হত্যাকাণ্ডের পর লাশ প্লাস্টিকের বস্তায় ভরে মাটিতে পুঁতে রাখে। ছেলে নিখোঁজের ঘটনায় মাফিজুলের মা গুরুদাসপুর থানায় একই বছরের ৭মে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছিলেন। এ হত্যাকাণ্ডের পর দম্পতির পারিবারিক কলহ বেড়ে যায়। এক পর্যায়ে স্বামীর বিরুদ্ধে যৌতুক ও নারী নির্যাতনের মামলা করে মেয়েটি। এ মামলায় জেলহাজতে রয়েছে আল হাবিব।
এরপর হাবিব কারাগারে থাকা অবস্থায় গুরুদাসপুরের খলিফাপাড়ার জাকির মুন্সির (৪০) সঙ্গে তার বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। এক পর্যায়ে হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি তাকে জানায় সে। জাকির জামিনে মুক্তি পেয়ে মাফিজুলের পরিবারকে ঘটনাটি খুলে বলে। পরে পুলিশকে জানান পরিবারের সদস্যরা। পুলিশ বিষয়টি আমলে নিয়ে অভিযুক্ত মেয়ে ও তার বাবা আবু তাহেরকে আটক করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা পুলিশের কাছে স্বীকার করে তারা।
এ ঘটনায় র্যাব গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি ও ছায়াতদন্ত শুরু করে। র্যাব-৫ নাটোর ক্যাম্পের সদস্যরা আসামি আশরাফুলকে শনিবার সিরাগঞ্জের গোলচত্বর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে।
গুরুদাসপুর থানার ওসি উজ্জ্বল হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, লাশ উত্তোলনের জন্য আদালতের অনুমতির অপেক্ষায় রয়েছেন। এ ঘটনায় মাদ্রাসার নৈশপ্রহরী আবু তাহের খলিফা (৫৫), তার মেয়ে (২৮), মেয়ের স্বামী আল হাবিব সরকার (৩৫) ও স্বজন আশরাফুল ইসলামকে (৪২) গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে তাদেরকে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
এর আগে শুক্রবার রাতে নিহত মাফিজুলের মা মাইনুর বেগম বাদী হয়ে গুরুদাসপুর থানায় হত্যা মামলা করেন। এ মামলায় গ্রেপ্তার চারজনসহ আরও তিন থেকে চারজনকে সন্দেহভাজন আসামি করা হয়েছে।
হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের শাস্তি দাবি করেছেন নিহত মাফিজুলের মা মাইনুর বেগম।
শনিবার (২ মার্চ) আদালতের অনুমতি না মেলায় মরদেহ উত্তোলন করতে পারেনি পুলিশ। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মাজাহারুল ইসলাম বলেন, রোববার মরদেহ উত্তোলন করা হবে।
রামদা দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে ২ পুলিশকে জখম
গাজীপুরের শ্রীপুরে মাওনা-কালিয়াকৈর আঞ্চলিক সড়কে গাছের গুড়ি ফেলে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় টহলরত দুই পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।
রোববার (৩ মার্চ) দিবাগত রাত পৌনে ২টার দিকে উপজেলার মাওনা ইউনিয়নের মাওনা-কালিয়াকৈর আঞ্চলিক সড়কের সিংগারদিঘি গ্রামের হাসিখালি ব্রিজ এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
আহত পুলিশ সদস্যরা হলেন, শ্রীপুর থানা পুলিশের কর্মরত পুলিশ কনস্টেবল মো. রুহুল আমিন (২৫) ও মো. সেলিম (৩৫)।
আহত ডাকাত দলের সদস্য রুবেল মিয়া (২৭) শরিয়তপুরের জাজিরা উপজেলার বড়কান্দি গ্রামের আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে। তিনি আন্তঃজেলা ডাকাত দলের সদস্য বলে জানিয়েছে পুলিশ।
শ্রীপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) এনায়েত কবির বলেন, রোববার রাতে শ্রীপুর থানা পুলিশের এএসআই আলিমের নেতৃত্বে চার জন পুলিশ সদস্য নিয়ে মাওনা ইউনিয়নে টহল ডিউটি চলছিল। রাত আনুমানিক পৌনে ২টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারি, মাওনা-কালিয়াকৈর আঞ্চলিক সড়কের সিংগারদিঘী গ্রামের হাসিখালি ব্রিজে গাছের গুড়ি ফেলে ডাকাতি করছে একদল ডাকাত। এ সময় এএসআই আলিমের নেতৃত্বে পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছালে ডাকাত দলের সদস্যরা পুলিশকে রামদা দিয়ে এলোপাতাড়িভাবে কোপাতে থাকে। এতে পুলিশ কনস্টেবল রুহুল আমিন ও সেলিম গুরুতর আহত হন। এরপর পুলিশের অন্যান্য সদস্যরা ধাওয়া দিলে ডাকাত দলের সদস্যরা দৌড়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় চলন্ত গাড়ির নিচে চাপা পড়ে। এ সময় রুবেল নামে ডাকাত দলের এক সদস্য গুরুতর জখম হয়। পরবর্তী সময়ে তাকে আটক করে হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। খবর পেয়ে থানা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ সদস্যরা গিয়ে আহত পুলিশ সদস্য এবং আটক ডাকাত দলের সদস্যকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করে।
শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. ফারাহ বিনতে ফারুক বলেন, আহত দুই পুলিশ সদস্য ও অপর এক ব্যক্তিকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে রাতেই উন্নত চিকিৎসার জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
শ্রীপুর থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) মো. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ডিউটি চলাকালে পুলিশের ওপর ডাকাতদলের হামলার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যাই। সেখান থেকে আহত অবস্থায় দুজন পুলিশ সদস্য এবং দৌড়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় চলন্ত ট্রাকের নিচে চাপা পড়ে আহত এক ডাকাত দলের সদস্যকে আটক করে পুলিশ হেফাজতে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ বিষয়ে পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ প্রক্রিয়াধীন।
সাড়ে ৪ ঘণ্টায়ও নিয়ন্ত্রণে আসেনি চিনি কারখানার আগুন
চট্টগ্রামের কর্ণফুলীতে একটি চিনির কারখানায় লাগা আগুন সাড়ে চার ঘণ্টা চেষ্টা করেও নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়নি। নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনীর একটি দল ঘটনাস্থলে যাচ্ছে বলে জানানো হয়েছে।
সোমবার (৪ মার্চ) অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার সার্বিক ও ভারপ্রাপ্ত বিভাগীয় কমিশনার আনোয়ার পাশা এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, আগুন এখনও নিয়ন্ত্রণে আসেনি। অল্প সময়ের মধ্যে সেনাবাহিনীর একটি টিম ঘটনাস্থলে আসবে। ঘটনা তদন্তে ৭ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এর আগে সোমবার বিকেল ৪টার দিকে কর্ণফুলী মইজ্জারটেক এলাকায় এস আলম সুগার মিলে এ আগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়। এতে করে কারখানায় থাকা এক লাখ টন অপরিশোধিত চিনি পুড়ে গেছে বলে দাবি করছেন সংশ্লিষ্টরা।
কারখানার সহকারী ফিটার মনির জানান, গোডাউনে থাকা ব্রাজিল থেকে আমদানি করা ১ লাখ টন অপরিশোধিত চিনি ছিল। এগুলো রমজানকে সামনে রেখে আমদানি করা হয়েছিল। এখান পরিশোধিত হয়ে চিনিগুলো মার্কেটে যাওয়ার কথা ছিল।
আগুনের সূত্রপাত সম্পর্কে ফায়ার সার্ভিসের পক্ষে থেকে কিছু না জানালেও বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে বলে ধারণা করছেন মিলের কর্মচারীরা।
‘আমি একটু সুখ চাই’ লিখে আত্মহত্যা করলেন নববধূ
বরিশালে এক নববধূর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (৫ মার্চ) নগরীর পুরানপাড়া এলাকায় এ মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
ওই নববধূর নাম সাদিয়া আক্তার (২০)। তিনি পুরানপাড়া এলাকার মাহফুজ আলমের মেয়ে। ছয় ভাই-বোনের মধ্যে সবার ছোট সাদিয়া।
সাদিয়ার পরিবার জানায়, গত ২৪ জানুয়ারি সদর উপজেলার রায়পাশা-কড়াপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়-সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা মুদি দোকানি রুবেলের সঙ্গে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়েছিল সাদিয়ার। বিয়েতে মেয়েকে স্বর্ণালংকার ও জামাইকে ফ্রিজ, গলার চেইন ও আংটি দেওয়া হয়। এতে ৮ লাখ টাকা খরচ হয়েছে।
সাদিয়ার পরিবার আরও জানায়, মঙ্গলবার বিকেলে পরিবারের সবার অজান্তে বাবার বাড়ির ঘরের আড়ার সঙ্গে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন সাদিয়া। খবর পেয়ে মরদেহ উদ্ধারের পর শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায় পুলিশ। বুধবার ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
আত্মহত্যার আগে একটি চিরকুট লিখে গেছেন সাদিয়া। সেখানে তিনি লিখেন, ‘আমি কী দোষ করেছিলাম, এমন একজন মানুষের জন্য নিজের জীবনটাই শেষ করে দিলাম। প্রত্যেক রাতে ডিভোর্স দেওয়ার জন্য জ্বালায়। আমাকে বিয়ে দিয়েছিলে কেন। আমি তোমাদের কাছে বোঝা? টাকা চাইলে তো মন পাওয়া যায় না। টাকা দিয়ে কী ভালোবাসা পাওয়া যায়। আমি তোমাদের কষ্ট দিতে চাই না বাবা-মা। আমি একটু সুখ চাই।’
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন বরিশাল মেট্রোপলিটনের কাউনিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোস্তাফিজুর রহমান।
তিনি বলেন, দুদিন আগে সাদিয়ার বাবাকে খবর দিয়ে নেওয়া হয় রুবেলের বাড়িতে। এরপর মেয়েকে বাড়ি নিয়ে যাওয়ার জন্য চাপ দেওয়া হয়। এমনকি ওই বাড়িতে আবার আসতে হলে তিন লাখ টাকা দাবি করেন রুবেল। এ কারণে ক্ষোভে সাদিয়া আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন বলে ধারণা করা যায়। তার লেখা চিরকুট উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।