• ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
logo

পানির নিচে চাপা লাখো মানুষের ঈদের আনন্দ

চৌধুরী ভাস্কর হোম, মৌলভীবাজার

  ১৪ জুন ২০১৮, ১৭:১৭

আগামীকাল শুক্রবার রাতে চাঁদ দেখা গেলে শনিবার পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর। কিন্তু সেই ঈদের আনন্দ নেই মৌলভীবাজারের তিনটি উপজেলার লাখো মানুষের জীবনে। আকস্মিক বন্যায় ডুবে গেছে ঘর-বাড়ি ও ফসল। বিস্তৃত জনপদ প্লাবিত হওয়ায় ঈদের নামাজ আদায় করার জায়গাও নেই অনেক এলাকায়।

কমলগঞ্জ উপজেলার কিছু যায়গা থেকে পানি নামলেও রাজনগর ও কুলাউড়া উপজেলায় প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। চরম দুর্ভোগে থাকলেও এলাকাগুলোতে পৌঁছায়নি ত্রাণ।

জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সূত্রে জানা যায়, স্থানীয় প্রশাসনের ঈদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। প্রশাসনের যে যে অংশ বন্যার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত সে সে এলাকার ছুটি বাতিল করা হয়েছে। তার মধ্যে ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ প্রশাসন, ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় অফিস, উপজেলা প্রশাসন, পানি উন্নয়ন বোর্ড অন্যতম। প্লাবিত তিনটি উপজেলা প্রশাসনের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত প্লাবিত গ্রামের সংখ্যা শতাধিক। তার মধ্যে রাজনগরে ৪২টি, কুলাউড়া ৬০টি, কমলগঞ্জে ৩০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ঈদের নামাজের জন্য স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানদের নিজ নিজ এলাকায় উঁচু জায়গাতে আয়োজন করার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

স্থানীয় এলাকাবাসী জানিয়েছেন কমলগঞ্জের কিছু এলাকা থেকে পানি নামতে শুরু করেছে। তবে কমলগঞ্জ থেকে পানি নামলেও নতুন করে প্লাবিত হয়েছে রাজনগরের ২২টি এবং কুলাউড়ার ৪০টি গ্রাম। গত ৪ দিনের টানা বর্ষণ এবং উজানে ভারতের ত্রিপুরা এবং মেঘালয়ে প্রচুর বৃষ্টিপাতের কারণে মৌলভীবাজারের মনু নদ ও ধলাই নদীর পানি বেড়ে ১৩ স্থানে প্রতিরক্ষা বাধ ভেঙে প্লাবিত হয় জেলার কুলাউড়া, রাজনগর ও কমলগঞ্জ উপজেলার ১৩২টি গ্রাম। ঈদের কাছাকাছি সময়ে বাড়ি-ঘরে পানি ঢুকায় নিরাপদ আশ্রয়ের আশায় অন্যত্র যেতে দেখা যায় এইসব এলাকার মানুষদের। ঈদের আনন্দের চেয়ে এইসব পরিবারে এখন দৈনন্দিন জীবন পরিচালনা করাই দুষ্কর। মানুষের দুঃখ-দুর্দশা আর আহাজারিতে থামছে না দুচোখের অশ্রুধারা। টানা ৪ দিনের বৃষ্টিতে গরু ছাগল ও গবাদি পশুগুলো ছুটছে যে যার মতো। কৃষকের পুকুরের মাছ পানির স্রোতে ভেসে গেছে। বসত ভিটা এবং জিনিসপত্র পানির নিচে রেখে পানিবন্দি মানুষদের ঈদ আনন্দ মলিন হয়ে গেছে।