• ঢাকা শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
logo

ইয়াবা দিয়ে শ্রমিককে গ্রেপ্তারের অভিযোগ, প্রতিবাদে ভবনের কাজ বন্ধ

স্টাফ রিপোর্টার, মানিকগঞ্জ

  ০৩ জুন ২০১৮, ১৬:২০

মাদক মামলায় এক সহকর্মীকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে মানিকগঞ্জ ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল টেকনোলজির নির্মাণাধীন ভবনের শ্রমিকরা করা কাজ বন্ধ করে দিয়েছে। তাদের অভিযোগ অসুস্থ এক শ্রমিকের পকেটে ইয়াবা দিয়ে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করেছে।
এর আগে কয়েক শ্রমিককে মাদকের মামলা দেয়ার হুমকি দিয়ে টাকা পয়সা আদায় করেছে বলেও তারা অভিযোগ করেন।

মানিকগঞ্জ পৌরসভার কাচারিবাজার এলাকায় নির্মাণ হচ্ছে মানিকগঞ্জ ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল টেকনোলজির ভবন। ভবনের নির্মাণ কাজ করছে মেসার্স মালিথা ট্রেজার্স। এখানে প্রায় ১২০ জন শ্রমিক কাজ করছেন। এরা প্রায় সবাই নাটোর জেলার বাসিন্দা।

শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত শুক্রবার রাত নয়টার দিকে সাদা পোশাকের দু’জন পুলিশ পরিচয়ে শ্রমিকদের অস্থায়ী ব্যারাকে ঢুকে পড়ে। ফারুক (১৯) নামের এক অসুস্থ শ্রমিকের কাছে ইয়াবা থাকার কথা বলে তাকে মারধর শুরু করে। সেসময় অসুস্থতার কারণে ফারুকের মাথায় পানি ঢালছিল তার কয়েকজন সহকর্মী। ফারুকের অসুস্থতার কথা বলে অন্যান্য শ্রমিকরা প্রতিবাদ করলে আরও বেশি মারধর করা হয় তাকে। এক পর্যায়ে ফারুকের কাছ থেকে ইয়াবা পাওয়া গেছে বলে তাকে থানায় নিয়ে যায়।

শ্রমিকরা বলেন, তারা খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছেন সাদা পোশাকের দুই পুলিশ হচ্ছেন মানিকগঞ্জ সদর থানার এসআই মুরাদ হোসেন এবং সদর পুলিশ ফাঁড়ির এসআই জাকারিয়া হাওলাদার। এর আগেও এই দু’জন ইকবাল ও রবিউল নামে দুই শ্রমিককে গাঁজা রাখার অভিযোগে আটকের ভয় দেখিয়ে ৮ হাজার টাকা এবং আরশাদুল ও শিপনের কাছ থেকে ৫ হাজার টাকা নিয়েছে। ভয়ে তারা কাজ ছেড়ে বাড়ি ফিরে গেছে বলে জানান তারা।

মেসার্স মালিথা ট্রেডার্সের সাইট ম্যানেজার মো. আজিম আরটিভি অনলাইনকে জানান, পুলিশের হয়রানির প্রতিবাদে অধিকাংশ শ্রমিক কাজ বন্ধ করে দিয়েছে। একজন শ্রমিক বেতন পায় দিনে ৪০০ টাকা। প্রতিদিনের খাওয়া বাবদ কাটা যায় ৭০ টাকা এবং প্রতিদিন হাত খরচ পায় ৫০ টাকা। বাকি টাকা বাড়ি যাওয়ার সময় দেয়া হয়। এই বেতনে শ্রমিকরা ইয়াবা সেবন করবে তা বিশ্বাস হয় না।

ফারুকের কাছে ইয়াবা পাওয়ার কথা বললেও তার বিরুদ্ধে ইয়াবা সেবনের অভিযোগ আনা হয়েছে। মামলার বাদী হয়েছেন সদর পুলিশ ফাঁড়ির এসআই জাকারিয়া হাওলাদার।

এজাহার সূত্রে জানা গেছে, কাচারি মাঠের কাছে সুরজ মিয়ার দোকানের পাশে কয়েকজন মাদক সেবন করছে এমন খবর পান এসআই জাকারিয়া হাওলাদার। তিনি সদর থানার এসআই মুরাদ এবং এএসআই আব্দুর রাজ্জাককে নিয়ে ঘটনাস্থল থেকে ইয়াবা সেবন করার সময় ফারুককে আটক করেন।

চিকিৎসার জন্য মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে নেয়া হলে ফারুক ইয়াবা সেবন করেছে নিশ্চিত করে কর্তব্যরত চিকিৎসক এই মর্মে সনদপত্র দিয়েছে বলেও এজাহারে দাবি করা হয়েছে।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে সদর থানার এসআই মুরাদ হোসেনকে। আসামীকে কোর্টে প্রেরণের প্রতিবেদনে তিনি দাবি করেছেন, ফারুক দীর্ঘদিন ধরে বাইরে থেকে ইয়াবা সংগ্রহ করে মানিকগঞ্জ থানাসহ এলাকার মানুষকে নিয়ে মাদক সেবন করে।

এ ব্যাপারে মানিকগঞ্জ সদর পুলিশ ফাঁড়ির এসআই জাকারিয়া হাওলাদার তার বিরুদ্ধে অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি দাবি করেন মাদক সেবনের অভিযোগে ফারুককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে পুলিশ সুপার রিফাত রহমান শামীম জানান, অভিযোগ ওঠা পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা দিয়ে তদন্ত করা হবে। ঘটনার সত্যতা পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এসএস

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির সিদ্ধান্ত নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে 
নওগাঁয় চুরি হওয়া স্বর্ণালংকার উদ্ধার, গ্রেপ্তার ৩
চুয়াডাঙ্গায় অপহৃত শিশু সিরাজগঞ্জে উদ্ধার, গ্রেপ্তার ১ 
রাজধানীতে গ্রেপ্তার ২৭
X
Fresh