১১৩ বছর পর সড়ক সেতু নির্মাণের উদ্যোগ!
ঘাঘট নদীর উপর ভেড়ামারা রেলসেতুর পশ্চিম পাশে কাঠের সাঁকোটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় সেখানে সাঁটানো হয়েছে, ‘সাবধান, ঝুঁকিপূর্ণ ব্রিজ, পায়ে হেঁটে পারাপার হউন। গাড়ি চলন্ত অবস্থায় ধরা পরিলে একশত টাকা জরিমানা দিতে বাধ্য থাকিবেন।’
কথাগুলো লেখা কাউনিয়া-বোনারপাড়া রেলরুটের গাইবান্ধা সদর উপজেলার খোলাহাটী ইউনিয়নের কিশামত বালুয়া গ্রামে ঘাঘট নদীর উপর স্বেচ্ছাশ্রমে তৈরি করা সাঁকোর দু’পাশে।
তবে ১১৩ বছর পর ভেড়ামারা রেলসেতুর পশ্চিম পাশে একটি পাকা সড়ক সেতু নির্মাণের প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে বলে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) পক্ষ থেকে জানান হয়।
--------------------------------------------------------
আরও পড়ুন : বাবা-ছেলেকে গাছে বেঁধে নির্যাতন: ৬ দিনেও গ্রেপ্তার হয়নি মূলহোতা
--------------------------------------------------------
--------------------------------------------------------
আরও পড়ুন : বাবা-ছেলেকে গাছে বেঁধে নির্যাতন: ৬ দিনেও গ্রেপ্তার হয়নি মূলহোতা
--------------------------------------------------------
খোলাহাটী ইউনিয়ন পরিষদ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালের জুন মাসে তৎকালীন ইউপি চেয়ারম্যান কাজী ইব্রাহীম খলিল উলফাত এবং গ্রামবাসীর সার্বিক সহযোগিতায় স্থানীয় আব্দুল লতিফ, ফরিদ উদ্দিন, সাইদার রহমান ও এরশাদ হোসেন নামের চার যুবকের উদ্যোগে ও স্বেচ্ছাশ্রমে প্রথমে বাঁশ দিয়ে পরে কাঠ দিয়ে সাঁকোটি তৈরি করা হয়। এরপর সাঁকোটি দিয়ে পার্শ্ববর্তী বল্লমঝাড় ও কুপতলাসহ জেলা শহরের বিভিন্ন এলাকার হাজারো মানুষ, সাইকেল, মোটরসাইকেল, রিকসা, ভ্যান ও অটোরিকশা চলাচল শুরু করে। এরপর থেকে দীর্ঘদিনেও আর কোনো মেরামত কাজ না করায় সাঁকোটি ধীরে ধীরে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পরে।
বর্তমানে সাঁকোটি দিয়ে রিকশা, ভ্যান, অটোরিকশা ও সিএনজি চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। শুধু সাইকেল ও মোটরসাইকেল চলাচল করছে।
বাংলাদেশ রেলওয়ে সূত্রে জানা যায়, ব্রহ্মপুত্র-সুলতানপুর রেলওয়ে ব্রাঞ্চ নামে একটি কোম্পানি ১৮৯৯-১৯০০ সালে সান্তাহার জংশন থেকে ফুলছড়ি পর্যন্ত মিটার গেজ সেকশনটি চালু করে। এই কোম্পানিও ১৯০৪ সালের ১ এপ্রিল ইস্টার্ন বেঙ্গল রেলওয়ের সরকারি ব্যবস্থাপনায় চলে আসে। ১৯০৫ সালে প্রায় ৭০ কিলোমিটার দীর্ঘ কাউনিয়া-বোনারপাড়া মিটারগেজ সেকশনটি চালু হয়।
এরপর থেকে সাদুল্যাপুর, সদর ও সুন্দরগঞ্জ থানার কয়েক হাজার মানুষ প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অল্প সময়ে গাইবান্ধা মহুকুমা পরবর্তীতে জেলা শহরে আসার জন্য ভেড়ামারা রেলসেতুর উপর দিয়ে চলাচল করে। এতে করে রেলসেতু থেকে সাইকেল ও মোটরসাইকেল নিয়ে নদীতে পরে গিয়ে বিভিন্ন সময় ঘটেছে দুর্ঘটনাও।
খোলাহাটী ইউনিয়নের ইউপি সদস্য মোস্তফা জামান মিন্টু বলেন, এই সেতুর উপর দিয়ে মোটরসাইকেল নিয়ে পারাপারের সময় ব্রিজ থেকে পড়ে খোলাহাটী ইউনিয়নের ইউপি সদস্য তারা মিয়া আহত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
সরেজমিনে দেখা গেছে, চলাচলে মানুষকে সাবধান করে ঝুঁকিপূর্ণ কাঠের সাঁকোটির দুইপাশেই লাগানো হয়েছে সাইনবোর্ড। মানুষ সাইকেল ও মোটরসাইকেল থেকে নেমে সাঁকোটি হেটে চলাচল করছে। ব্যাটারিচালিত রিকশা-ভ্যান ও অটোরিকশা যাতে সাঁকোর উপর দিয়ে চলাচল করতে না পারে সেজন্য দক্ষিণ পাশে সাঁকোতে উঠতেই মাঝখানে একটি খুঁটি পুতে রাখা হয়েছে। নদীতে পুঁতে রাখা কাঠের সাঁকোটির খুঁটির গোঁড়া আলগা হয়ে যাওয়ায় সাইকেল ও মোটরসাইকেল চলাচলের সময় সাঁকোটি দোলে। এসময় মানুষকে ধীরে ধীরে চলাচল করতে হয়।
খোলাহাটী ইউনিয়নের ইউপি সদস্য আশরাফুল ইসলাম লুডু বলেন, আগে রেলসেতুর উপর দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে মানুষদের দুর্ঘটনায় পরতে হতো। বর্তমানে ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ার কারণে কাঠের সাঁকোটির উপর দিয়ে রিকশা-ভ্যান ও অটোরিকশা চলাচল বন্ধ করা হয়েছে। এখন মানুষদের সাত কিলোমিটার বেশি এলাকা ঘুরে গন্তব্যে পৌঁছতে হচ্ছে। দ্রুত সাঁকোটি মেরামত করা দরকার।
সাঁকোটি মেরামতে সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মো. আনিছুর রহমান বলেন, এই কাঠের সাঁকো আমরা তৈরি করিনি। তাই সাঁকোটি মেরামতের সঙ্গে আমাদের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।
এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আব্দুর রহিম শেখ বলেন, ভেড়ামারা রেলসেতুটি নির্মাণ করা হয় ১০৩ বছর আগে। জনগণের চাহিদার কারণে বর্তমানে এই সেতুর পশ্চিম পাশে সাঁকোটির স্থানে একটি পাকা সড়ক সেতু নির্মাণ করা হবে। এজন্য একটি প্রকল্প প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সম্প্রতি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় পাস হয়েছে। ব্রিজটি নির্মাণ এখন সময়ের ব্যাপার।
আরও পড়ুন :
এসএস
মন্তব্য করুন
শপিং শেষে রেস্টুরেন্টে খেতে গিয়ে ৩ বোনের মৃত্যু
‘রিয়ার মালয়েশিয়া যাওয়ার ফ্লাইট ছিল শুক্রবার (১ মার্চ) রাতে। বিদেশ যাওয়ার আগের দিন রাতে বোনকে নিয়ে শপিং করতে যায় রিয়া। সেখানে শপিং শেষে রেস্টুরেন্টে গিয়ে আর ফেরেনি দুবোন। বৃহস্পতিবার রাতে বেইলি রোডের বহুতল ভবনে লাগা আগুনে মৃত্যু হয় আমার মায়েদের।’
শুক্রবার (১ মার্চ) গণমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এভাবেই বলছিলেন ফৌজিয়া আফরিন রিয়া ও সাদিয়া আফরিন আলিশার বাবা কোরবান আলী।
দুমেয়েকে হারানো এই বাবা কান্নাজড়িতকণ্ঠে বলেন, ‘শপিং করতে যাওয়ার আগে আমার মেয়েরা বলেছিল, আন্টির সঙ্গে দেখা করে বাবা আমরা তাড়াতাড়ি ফিরবো।’
কোরবান আলী বলেন, ‘ফেব্রুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহে তারা এলাকায় এসেছিল। কয়েক দিন বাড়িতে থেকে চলে গেছে। শুক্রবার (১ মার্চ) রাতে আমিসহ মালয়েশিয়া যাওয়ার কথা ছিল। টিকিটও কেটেছিল। কিন্তু গত রাতেই মারা গেছে। নিমু তাদের খালাতো বোন। একই সঙ্গে গিয়ে আর ফেরেনি। আমার ঘর আনন্দে ভরে থাকতো। আজ আমার ঘর শূন্য।’
তথ্যসূত্র বলছে, বেইলি রোডের বহুতল ভবনে লাগা আগুনে মারা যাওয়া ৪৬ জনের মধ্যে দুজন হলেন রিয়া ও আলিশা। তারা কুমিল্লার লালমাই উপজেলার পেরুল দক্ষিণ ইউনিয়নের চরবাড়িয়া এলাকার হাজী কোরবান আলীর মেয়ে। ফৌজিয়া আফরিন রিয়া মালয়েশিয়ার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে এমবিএ শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী। আর সাদিয়া আফরিন আলিশা ঢাকার ভিকারুননিসা নূন স্কুলের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী। একই ঘটনায় মারা গেছেন তাদের খালাতো বোন নুসরাত জাহান নিমু। তিনি সদর উপজেলার হাতিগড়া এলাকার আব্দুল কুদ্দুসের মেয়ে ও ঢাকা সিটি কলেজের শিক্ষার্থী। তারা একই সঙ্গে শপিং করতে গিয়েছিলেন। ফাঁকে কাচ্চি ভাই রেস্টুরেন্টে খেতে ঢোকেন।
কান্না করতে করতে কোরবান আলী বলেন, যখন জীবিত মানুষ উদ্ধার শেষ হলো তখন আমার শরীর কাঁপছিল। আমি ঘামাচ্ছিলাম। বুকের ভেতর কেমন জানি হয়েছিল। আমার চোখে পানি আর বুক ভারী হয়ে আসছিল। রাত যখন ১০টার কাছাকাছি, তখন আমাদের মরদেহ বুঝিয়ে দেওয়া হলো। যে মেয়েকে সন্ধ্যায় ভালোভাবে বিদায় দিয়েছি তার পোড়া লাশ দিয়েছে আমাকে। আমি আমার দুই স্বপ্নের লাশ দিয়ে বাড়ি এসেছি। বিকালে পুকুর পাশের কবরস্থানে রেখে আসবো আমার দুই স্বপ্ন।
তিনি সরকারকে দায়ী করে বলেন, আমরা যারা ঢাকায় থাকি, সবসময় আতঙ্কে থাকি। কেউ নিরাপদ নই। একটা দুর্ঘটনা ঘটলে সবাই নড়েচড়ে বসে। আবার কদিন পরে আগের মতো হয়ে যায়। তারা কেউ তেমন পুড়ে মারা যায়নি। শ্বাসকষ্টে মারা গেছে। তারা বের হতে পারেনি। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেছে ফায়ার সার্ভিস। কিন্তু ডিশ লাইনের ক্যাবল, ইন্টারনেট ক্যাবল আর বৈদ্যুতিক ক্যাবলের জন্য তাদের গাড়িও ঠিক জায়গায় স্থাপন করে পানি দিতে পারেনি। আর ফলাফল হলো লাশের পর মরদেহ।
মৃত্যুর আগে ফোনে মায়ের সঙ্গে কালেমা পড়েন রকি
রাজধানীর বেইলি রোডের গ্রিন কজি কটেজে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে মারা গেছেন কাচ্চি ভাই রেস্টুরেন্টের ক্যাশিয়ার কামরুল হাবিব রকি। মৃত্যুর আগে তিনি তার মায়ের সঙ্গে ফোনে কালেমা পড়েন বলে জানা গেছে।
শুক্রবার (১ মার্চ) সকালে তার মরদেহ যশোরের নিজ বাড়িতে পৌঁছার পর সবাই কান্নায় ভেঙে পড়েন। জানাজা শেষে দুপুরে তাকে দাফন করা হয়।
এর আগে, বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) রাতে ভবনে আগুন লাগার পর প্রথমে মামা জাহিদ হোসেনকে ফোন করেন রকি। ফোনে তিনি তার মামাকে বলেন, ‘মামা, রেস্টুরেন্টে আগুন লেগেছে। কেউ বের হতে পারছে না। আমাকে বাঁচাও, দম নিতে খুব কষ্ট হচ্ছে।’ পরে মায়ের সঙ্গেও ফোনে কথা বলেন রকি। এসময় মৃত্যু আসন্ন আশঙ্কায় মায়ের পরামর্শে কালেমা পড়েন যশোরের এই যুবক। পরে আগুনে তার মৃত্যু হয়।
নিহত রকির মামা জাহিদ হোসেন বলেন, রাতে আমি রকিকে ভিডিও কল দিয়েছিলাম। কিন্তু তখন সে ফোন রিসিভ করেনি। কিছু সময় পর সে আমাকে কল দিয়ে, বাঁচার আকুতি জানায়। আমি সাথে সাথে কুষ্টিয়া থেকে রওয়ানা দেই ঢাকায়। আহত রকিকে প্রথমে রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে ঢাকা মেডিকেল কালেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। রকির শরীরে আগুনে পোড়ার কোনো চিহ্ন নেই। অক্সিজেন সংকটে তার মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
নিহত রকির মা রিপা খাতুন বলেন, রাতে ওর মামার কাছ থেকে খবর পেয়ে আমি রকির ফোনে কল করি। ও আমাকে বলে, মা আমি হয়তো আর বাঁচব না। এরপর আমি ওকে কালেমা পড়তে বললে আমার সঙ্গে কালেমা পড়ে।
জেলখানার গল্পে বেরিয়ে এলো খুনের রহস্য
দুই বছর আগে নিখোঁজ হয় ছেলে। মা-বাবা ধরেই নিয়েছিলেন তাদের সন্তান হারিয়ে গেছে। অনেকটা ভুলেই গিয়েছিলেন সন্তান হারানোর বেদনা। তবে দুই বছর পর জানতে পারলেন তাদের সন্তানকে খুন করা হয়েছে। পুতে রাখা হয়েছে একটি মাদ্রাসার সেপটিক ট্যাঙ্কের পাশে। আর জেলখানার গল্প থেকে ওই খুনের রহস্য জানতে পেরেছে তারা।
শুক্রবার (১ মার্চ) নাটোরের গুরুদাসপুর পৌরসভার খলিফাপাড়া মাফিজুল ইসলামের খুনের কথা জানতে পারে তার পরিবার। শনিবার (২ মার্চ) সকাল থেকে ঘটনাস্থল ঘিরে রেখেছে পুলিশ।
জানা গেছে, ২০২২ সালের ১৭ এপ্রিল থেকে নিখোঁজ ছিলেন পৌরসভার খলিফাপাড়া মাফিজুল ইসলাম। প্রায় দুই বছর পর পরিবারটি জানতে পারে, তাকে খুন করা হয়েছে। পুঁতে রাখা লাশ রয়েছে চাঁচকৈড় পুরানপাড়ার একটি বালিকা মাদ্রাসার সেপটিক ট্যাঙ্কের পাশে।
আসামিদের বরাত দিয়ে র্যাব জানিয়েছে, বিস্কুট ফ্যাক্টরিতে চাকরির সময় নিহত মাফিজুল ইসলামের সঙ্গে মাদ্রাসার নৈশপ্রহরীর মেয়ের পরকীয়া সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বিষয়টি নিয়ে আবু তাহের খলিফার কাছে অভিযোগ করে জামাতা আল হাবিব সরকার। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আবু তাহের কৌশলে মাফিজুলকে ২০২২ সালের ১৭ এপ্রিল তার বাসায় ডেকে নেয়। রাতে তাকে নিজের কর্মস্থল চাঁচকৈড় বালিকা দাখিল মাদ্রাসায় নিয়ে যায়। সেখানে মাফিজুলকে হাত-পা বেঁধে ও মুখে স্কচটেপ দিয়ে হত্যা করে তারা।
হত্যাকাণ্ডের পর লাশ প্লাস্টিকের বস্তায় ভরে মাটিতে পুঁতে রাখে। ছেলে নিখোঁজের ঘটনায় মাফিজুলের মা গুরুদাসপুর থানায় একই বছরের ৭মে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছিলেন। এ হত্যাকাণ্ডের পর দম্পতির পারিবারিক কলহ বেড়ে যায়। এক পর্যায়ে স্বামীর বিরুদ্ধে যৌতুক ও নারী নির্যাতনের মামলা করে মেয়েটি। এ মামলায় জেলহাজতে রয়েছে আল হাবিব।
এরপর হাবিব কারাগারে থাকা অবস্থায় গুরুদাসপুরের খলিফাপাড়ার জাকির মুন্সির (৪০) সঙ্গে তার বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। এক পর্যায়ে হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি তাকে জানায় সে। জাকির জামিনে মুক্তি পেয়ে মাফিজুলের পরিবারকে ঘটনাটি খুলে বলে। পরে পুলিশকে জানান পরিবারের সদস্যরা। পুলিশ বিষয়টি আমলে নিয়ে অভিযুক্ত মেয়ে ও তার বাবা আবু তাহেরকে আটক করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা পুলিশের কাছে স্বীকার করে তারা।
এ ঘটনায় র্যাব গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি ও ছায়াতদন্ত শুরু করে। র্যাব-৫ নাটোর ক্যাম্পের সদস্যরা আসামি আশরাফুলকে শনিবার সিরাগঞ্জের গোলচত্বর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে।
গুরুদাসপুর থানার ওসি উজ্জ্বল হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, লাশ উত্তোলনের জন্য আদালতের অনুমতির অপেক্ষায় রয়েছেন। এ ঘটনায় মাদ্রাসার নৈশপ্রহরী আবু তাহের খলিফা (৫৫), তার মেয়ে (২৮), মেয়ের স্বামী আল হাবিব সরকার (৩৫) ও স্বজন আশরাফুল ইসলামকে (৪২) গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে তাদেরকে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
এর আগে শুক্রবার রাতে নিহত মাফিজুলের মা মাইনুর বেগম বাদী হয়ে গুরুদাসপুর থানায় হত্যা মামলা করেন। এ মামলায় গ্রেপ্তার চারজনসহ আরও তিন থেকে চারজনকে সন্দেহভাজন আসামি করা হয়েছে।
হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের শাস্তি দাবি করেছেন নিহত মাফিজুলের মা মাইনুর বেগম।
শনিবার (২ মার্চ) আদালতের অনুমতি না মেলায় মরদেহ উত্তোলন করতে পারেনি পুলিশ। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মাজাহারুল ইসলাম বলেন, রোববার মরদেহ উত্তোলন করা হবে।
রামদা দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে ২ পুলিশকে জখম
গাজীপুরের শ্রীপুরে মাওনা-কালিয়াকৈর আঞ্চলিক সড়কে গাছের গুড়ি ফেলে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় টহলরত দুই পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।
রোববার (৩ মার্চ) দিবাগত রাত পৌনে ২টার দিকে উপজেলার মাওনা ইউনিয়নের মাওনা-কালিয়াকৈর আঞ্চলিক সড়কের সিংগারদিঘি গ্রামের হাসিখালি ব্রিজ এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
আহত পুলিশ সদস্যরা হলেন, শ্রীপুর থানা পুলিশের কর্মরত পুলিশ কনস্টেবল মো. রুহুল আমিন (২৫) ও মো. সেলিম (৩৫)।
আহত ডাকাত দলের সদস্য রুবেল মিয়া (২৭) শরিয়তপুরের জাজিরা উপজেলার বড়কান্দি গ্রামের আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে। তিনি আন্তঃজেলা ডাকাত দলের সদস্য বলে জানিয়েছে পুলিশ।
শ্রীপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) এনায়েত কবির বলেন, রোববার রাতে শ্রীপুর থানা পুলিশের এএসআই আলিমের নেতৃত্বে চার জন পুলিশ সদস্য নিয়ে মাওনা ইউনিয়নে টহল ডিউটি চলছিল। রাত আনুমানিক পৌনে ২টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারি, মাওনা-কালিয়াকৈর আঞ্চলিক সড়কের সিংগারদিঘী গ্রামের হাসিখালি ব্রিজে গাছের গুড়ি ফেলে ডাকাতি করছে একদল ডাকাত। এ সময় এএসআই আলিমের নেতৃত্বে পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছালে ডাকাত দলের সদস্যরা পুলিশকে রামদা দিয়ে এলোপাতাড়িভাবে কোপাতে থাকে। এতে পুলিশ কনস্টেবল রুহুল আমিন ও সেলিম গুরুতর আহত হন। এরপর পুলিশের অন্যান্য সদস্যরা ধাওয়া দিলে ডাকাত দলের সদস্যরা দৌড়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় চলন্ত গাড়ির নিচে চাপা পড়ে। এ সময় রুবেল নামে ডাকাত দলের এক সদস্য গুরুতর জখম হয়। পরবর্তী সময়ে তাকে আটক করে হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। খবর পেয়ে থানা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ সদস্যরা গিয়ে আহত পুলিশ সদস্য এবং আটক ডাকাত দলের সদস্যকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করে।
শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. ফারাহ বিনতে ফারুক বলেন, আহত দুই পুলিশ সদস্য ও অপর এক ব্যক্তিকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে রাতেই উন্নত চিকিৎসার জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
শ্রীপুর থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) মো. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ডিউটি চলাকালে পুলিশের ওপর ডাকাতদলের হামলার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যাই। সেখান থেকে আহত অবস্থায় দুজন পুলিশ সদস্য এবং দৌড়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় চলন্ত ট্রাকের নিচে চাপা পড়ে আহত এক ডাকাত দলের সদস্যকে আটক করে পুলিশ হেফাজতে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ বিষয়ে পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ প্রক্রিয়াধীন।
সাড়ে ৪ ঘণ্টায়ও নিয়ন্ত্রণে আসেনি চিনি কারখানার আগুন
চট্টগ্রামের কর্ণফুলীতে একটি চিনির কারখানায় লাগা আগুন সাড়ে চার ঘণ্টা চেষ্টা করেও নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়নি। নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনীর একটি দল ঘটনাস্থলে যাচ্ছে বলে জানানো হয়েছে।
সোমবার (৪ মার্চ) অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার সার্বিক ও ভারপ্রাপ্ত বিভাগীয় কমিশনার আনোয়ার পাশা এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, আগুন এখনও নিয়ন্ত্রণে আসেনি। অল্প সময়ের মধ্যে সেনাবাহিনীর একটি টিম ঘটনাস্থলে আসবে। ঘটনা তদন্তে ৭ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এর আগে সোমবার বিকেল ৪টার দিকে কর্ণফুলী মইজ্জারটেক এলাকায় এস আলম সুগার মিলে এ আগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়। এতে করে কারখানায় থাকা এক লাখ টন অপরিশোধিত চিনি পুড়ে গেছে বলে দাবি করছেন সংশ্লিষ্টরা।
কারখানার সহকারী ফিটার মনির জানান, গোডাউনে থাকা ব্রাজিল থেকে আমদানি করা ১ লাখ টন অপরিশোধিত চিনি ছিল। এগুলো রমজানকে সামনে রেখে আমদানি করা হয়েছিল। এখান পরিশোধিত হয়ে চিনিগুলো মার্কেটে যাওয়ার কথা ছিল।
আগুনের সূত্রপাত সম্পর্কে ফায়ার সার্ভিসের পক্ষে থেকে কিছু না জানালেও বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে বলে ধারণা করছেন মিলের কর্মচারীরা।
বাস-অটোরিকশা সংঘর্ষ, নিহত ৭
পিরোজপুরের পাড়েরহাটে বাস ও সিএনজিচালিত অটোরিরকশার সংঘর্ষে সাতজন নিহত হয়েছেন।
শুক্রবার (৮ মার্চ) দুপুর ১২টার দিকে উপজেলার ঝাউতলা বাসস্ট্যান্ডে এই ঘটনা ঘটে। তাৎক্ষণিকভাবে নিহতদের নাম-পরিচয় জানা যায়নি।
পিরোজপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশিকুজ্জামান সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, পাড়েরহাট সড়কের ঝাউতলা এলাকায় দুপুর ১২ টার কিছু পরে এ ঘটনা ঘটে। ফায়ার সার্ভিস এখন পর্যন্ত ৭ জনের মরদেহ উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠিয়েছে। বাকিদের উদ্ধার করা হচ্ছে।
ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত ৭ জন নিহত হয়েছেন। এ দুর্ঘটনায় নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। নিহতদের পরিচয় শনাক্তের চেষ্টা চলছে। আর আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
বিয়ের ২২ দিন পর বর জানলেন নববধূ ৪ মাসের অন্তঃসত্ত্বা, অতঃপর...
স্ত্রীর শারীরিক পরিবর্তন দেখে সন্দেহ হয় স্বামীর। এরপর স্থানীয় চিকিৎসকের মাধ্যমে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর স্বামী নিশ্চিত হন তার স্ত্রী চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা। বিয়ের মাত্র ২২ দিন পর এমন খবরে স্বামীর মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে। ঘটনাটি ঘটেছে চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গায়।
এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) আলমডাঙ্গা থানা পুলিশ ওই কিশোরী ও তার সৎ বাবা আলতাফ হোসেনকে (৪৫) পুলিশ হেফাজতে নিয়েছে। এরপর বেরিয়ে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য।
পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে কিশোরী নববধূ জানিয়েছে, তার সৎ বাবা তাকে বিভিন্ন সময় ধর্ষণ করেছেন। এর ফলে সে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছে।
এদিকে ঘটনার পরপরই বৃহস্পতিবার রাতে মেয়েটির মা বাদী হয়ে নিজের স্বামীর নামে আলমডাঙ্গা থানায় মামলা করেছেন। অভিযুক্ত আলতাফ হোসেনের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
পুলিশে ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বিয়ের পর থেকে কিশোরী নববধূর শারীরিক পরিবর্তন লক্ষ্য করেন স্বামী। বিষয়টি সন্দেহজনক হলে স্ত্রীকে স্থানীয় চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান। সেখানে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর জানতে পারেন তার স্ত্রী চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা। বাড়িতে এসে পরিবারকে জানান তিনি। দুই পরিবারের মধ্যে আলোচনা শেষে ডিভোর্সের সিদ্ধান্ত হয়।
অভিযুক্ত আলতাফ হোসেনের বাড়ি সাতক্ষীরার শ্যামনগর থানাধীন মুন্সীগঞ্জ গ্রামে। তিনি গত ১৭ বছর আলমডাঙ্গা উপজেলার একটি গ্রামের দুই কন্যাসন্তানের জননীকে বিয়ের পর থেকে ঘর জামাই হিসেবে থাকতেন।
আলমডাঙ্গা থানা পুলিশের পরিদর্শক শেখ গনি মিয়া গণমাধ্যমকে বলেন, ওই কিশোরী ও তার সৎ বাবাকে আমরা হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। মেয়েটি জানিয়েছে তার সৎ বাবা তাকে বিভিন্ন সময়ে ধর্ষণ করেছেন। সৎ বাবাও ধর্ষণের বিষয়টি আমাদের কাছে স্বীকার করেছেন। আসামিকে শুক্রবার আদালতে পাঠানো হবে।