১১৩ বছর পর সড়ক সেতু নির্মাণের উদ্যোগ!
ঘাঘট নদীর উপর ভেড়ামারা রেলসেতুর পশ্চিম পাশে কাঠের সাঁকোটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় সেখানে সাঁটানো হয়েছে, ‘সাবধান, ঝুঁকিপূর্ণ ব্রিজ, পায়ে হেঁটে পারাপার হউন। গাড়ি চলন্ত অবস্থায় ধরা পরিলে একশত টাকা জরিমানা দিতে বাধ্য থাকিবেন।’
কথাগুলো লেখা কাউনিয়া-বোনারপাড়া রেলরুটের গাইবান্ধা সদর উপজেলার খোলাহাটী ইউনিয়নের কিশামত বালুয়া গ্রামে ঘাঘট নদীর উপর স্বেচ্ছাশ্রমে তৈরি করা সাঁকোর দু’পাশে।
তবে ১১৩ বছর পর ভেড়ামারা রেলসেতুর পশ্চিম পাশে একটি পাকা সড়ক সেতু নির্মাণের প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে বলে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) পক্ষ থেকে জানান হয়।
--------------------------------------------------------
আরও পড়ুন : বাবা-ছেলেকে গাছে বেঁধে নির্যাতন: ৬ দিনেও গ্রেপ্তার হয়নি মূলহোতা
--------------------------------------------------------
--------------------------------------------------------
আরও পড়ুন : বাবা-ছেলেকে গাছে বেঁধে নির্যাতন: ৬ দিনেও গ্রেপ্তার হয়নি মূলহোতা
--------------------------------------------------------
খোলাহাটী ইউনিয়ন পরিষদ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালের জুন মাসে তৎকালীন ইউপি চেয়ারম্যান কাজী ইব্রাহীম খলিল উলফাত এবং গ্রামবাসীর সার্বিক সহযোগিতায় স্থানীয় আব্দুল লতিফ, ফরিদ উদ্দিন, সাইদার রহমান ও এরশাদ হোসেন নামের চার যুবকের উদ্যোগে ও স্বেচ্ছাশ্রমে প্রথমে বাঁশ দিয়ে পরে কাঠ দিয়ে সাঁকোটি তৈরি করা হয়। এরপর সাঁকোটি দিয়ে পার্শ্ববর্তী বল্লমঝাড় ও কুপতলাসহ জেলা শহরের বিভিন্ন এলাকার হাজারো মানুষ, সাইকেল, মোটরসাইকেল, রিকসা, ভ্যান ও অটোরিকশা চলাচল শুরু করে। এরপর থেকে দীর্ঘদিনেও আর কোনো মেরামত কাজ না করায় সাঁকোটি ধীরে ধীরে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পরে।
বর্তমানে সাঁকোটি দিয়ে রিকশা, ভ্যান, অটোরিকশা ও সিএনজি চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। শুধু সাইকেল ও মোটরসাইকেল চলাচল করছে।
বাংলাদেশ রেলওয়ে সূত্রে জানা যায়, ব্রহ্মপুত্র-সুলতানপুর রেলওয়ে ব্রাঞ্চ নামে একটি কোম্পানি ১৮৯৯-১৯০০ সালে সান্তাহার জংশন থেকে ফুলছড়ি পর্যন্ত মিটার গেজ সেকশনটি চালু করে। এই কোম্পানিও ১৯০৪ সালের ১ এপ্রিল ইস্টার্ন বেঙ্গল রেলওয়ের সরকারি ব্যবস্থাপনায় চলে আসে। ১৯০৫ সালে প্রায় ৭০ কিলোমিটার দীর্ঘ কাউনিয়া-বোনারপাড়া মিটারগেজ সেকশনটি চালু হয়।
এরপর থেকে সাদুল্যাপুর, সদর ও সুন্দরগঞ্জ থানার কয়েক হাজার মানুষ প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অল্প সময়ে গাইবান্ধা মহুকুমা পরবর্তীতে জেলা শহরে আসার জন্য ভেড়ামারা রেলসেতুর উপর দিয়ে চলাচল করে। এতে করে রেলসেতু থেকে সাইকেল ও মোটরসাইকেল নিয়ে নদীতে পরে গিয়ে বিভিন্ন সময় ঘটেছে দুর্ঘটনাও।
খোলাহাটী ইউনিয়নের ইউপি সদস্য মোস্তফা জামান মিন্টু বলেন, এই সেতুর উপর দিয়ে মোটরসাইকেল নিয়ে পারাপারের সময় ব্রিজ থেকে পড়ে খোলাহাটী ইউনিয়নের ইউপি সদস্য তারা মিয়া আহত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
সরেজমিনে দেখা গেছে, চলাচলে মানুষকে সাবধান করে ঝুঁকিপূর্ণ কাঠের সাঁকোটির দুইপাশেই লাগানো হয়েছে সাইনবোর্ড। মানুষ সাইকেল ও মোটরসাইকেল থেকে নেমে সাঁকোটি হেটে চলাচল করছে। ব্যাটারিচালিত রিকশা-ভ্যান ও অটোরিকশা যাতে সাঁকোর উপর দিয়ে চলাচল করতে না পারে সেজন্য দক্ষিণ পাশে সাঁকোতে উঠতেই মাঝখানে একটি খুঁটি পুতে রাখা হয়েছে। নদীতে পুঁতে রাখা কাঠের সাঁকোটির খুঁটির গোঁড়া আলগা হয়ে যাওয়ায় সাইকেল ও মোটরসাইকেল চলাচলের সময় সাঁকোটি দোলে। এসময় মানুষকে ধীরে ধীরে চলাচল করতে হয়।
খোলাহাটী ইউনিয়নের ইউপি সদস্য আশরাফুল ইসলাম লুডু বলেন, আগে রেলসেতুর উপর দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে মানুষদের দুর্ঘটনায় পরতে হতো। বর্তমানে ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ার কারণে কাঠের সাঁকোটির উপর দিয়ে রিকশা-ভ্যান ও অটোরিকশা চলাচল বন্ধ করা হয়েছে। এখন মানুষদের সাত কিলোমিটার বেশি এলাকা ঘুরে গন্তব্যে পৌঁছতে হচ্ছে। দ্রুত সাঁকোটি মেরামত করা দরকার।
সাঁকোটি মেরামতে সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মো. আনিছুর রহমান বলেন, এই কাঠের সাঁকো আমরা তৈরি করিনি। তাই সাঁকোটি মেরামতের সঙ্গে আমাদের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।
এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আব্দুর রহিম শেখ বলেন, ভেড়ামারা রেলসেতুটি নির্মাণ করা হয় ১০৩ বছর আগে। জনগণের চাহিদার কারণে বর্তমানে এই সেতুর পশ্চিম পাশে সাঁকোটির স্থানে একটি পাকা সড়ক সেতু নির্মাণ করা হবে। এজন্য একটি প্রকল্প প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সম্প্রতি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় পাস হয়েছে। ব্রিজটি নির্মাণ এখন সময়ের ব্যাপার।
আরও পড়ুন :
এসএস
মন্তব্য করুন
অস্ত্রোপচারে বের হলো পায়ুপথে ঢুকে পড়া কুঁচিয়া
সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অবিশ্বাস্য ও দুর্লভ এক অপারেশন সম্পন্ন হয়েছে গত ২৪ মার্চ। যা এ যাবৎকালের স্বরণীয় ঘটনা হিসেবে বলছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। রোগীর পেট থেকে অপারেশন করে জীবন্ত মাছ বের করেছেন হাসপাতালের ডাক্তাররা।
ওসমানী মেডিকেল সূত্রে জানা যায়, মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা মিতিঙ্গগা চা বাগানের উপজাতি বাসিন্ধা ধনমুন্ডার ছেলে সম্ররামুন্ডা (৫৫)। তিনি একজন রেজিস্ট্রার কার্ডধারী জেলে। কাদার মধ্যে মাছ ধরতে গিয়ে তার পায়ুপথ দিয়ে ২৫ ইঞ্চি কুঁচিয়া মাছ (জেল ফিস) প্রবেশ করে পেটে। দুই দিন পর সিলেট ওসমানী মেডিকেল হাসপাতালে অস্ত্রোপচার করে সেই মাছ জ্যান্ত বের করা হয়।
সম্ররামুন্ডা বিভিন্ন জায়গা থেকে মাছ ধরে স্থানীয়দের কাছে বিক্রি করেন। গত ২৩ মার্চ মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার স্থানীয় হাওরে মাছ ধরতে গেলে হঠাৎ কোমর সমান কাদায় আটকে যান। তখন তার দুই হাতে থাকা দুটি কুঁচিয়া মাছের একটি পানিতে পড়ে যায় এবং আরেকটি কাদায় পড়ে। কাদাতে পড়ে যাওয়া মাছ ধরতে গিয়ে তিনি অনুভব করেন তার পায়ু পথে কি যেন ডুকছে। তবে সেটিকে গুরুত্ব দেননি তিনি। পরে সম্ররা মুন্ডা সেখান থেকে উঠে বাড়িতে আসার পর তার পেটে প্রচুর ব্যথা অনুভব হয়।
তার ছেলে জানান তার বাবা সম্ররামুন্ডা হাফ প্যান্ট পরে মাছ শিকারে গিয়েছিলেন। কাদায় আটকে পায়ু পথে মাছ ঢুকলেও তিনি বাড়িতে এসে এ ব্যাপারে কাউকেই কিছু বলেননি।
তবে এক পর্যায়ে পেটে তীব্র ব্যথা শুরু হলে ২৪ মার্চ রোববারে স্থানীয় হাসপাতালে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান।
ওসমানীর চিকিৎসকগণ তার ব্যথার কথা শুনে এক্সরের মাধ্যমে পেটের ভিতর লম্বা আকৃতির একটি বস্তু দেখতে পান। কর্তব্যরত ডাক্তাররা সিনিয়দের সঙ্গে আলাপ করে সম্ররা মুন্ডাকে সন্ধায় অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যান।
সেখানে প্রফেসর জানে আলমের নেতৃত্বে ৪ জন চিকিৎসক ২ ঘণ্টা অপারেশন চালিয়ে পেটের ভিতর থেকে একটি জীবন্ত কুঁচিয়া (জেল ফিস) মাছ বের করেন। এ ঘটনায় ডাক্তারা বিস্মিত হন। পরে পেটের ভিতর থেকে কুচিয়া মাছ বের করার ঘটনা জনসাধারণের মধ্যে জানাজানি হলে সিলেট জুড়ে তোলপাড় শুরু হয়।
রোববার রাতে সিওমেকের সার্জারি ইউনিট-২ প্রধান অধ্যাপক ডা. কাজী জানে আলমের নেতৃত্বে অস্ত্রোপচার করে ওই রোগীর পেট থেকে মাছটি বের করা হয়। অস্ত্রোপচারে অংশগ্রহণ করেন সার্জারি ইউনিট-২ এর সহকারী রেজিস্ট্রার ডা. রাশেদুল ইসলাম ও ডা. তৌফিক আজিজ শাকুর।
এ ব্যাপারে ওসমানী মেডিকেলের উপপরিচালক ডা. সৌমিত্র চক্রবর্তী জানান, সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালে অস্ত্রোপচার করে তার পেট থেকে জ্যান্ত ২৫ ইঞ্চি কুঁচিয়া মাছ (জেল ফিস) উদ্ধার করা হয়েছে। এটা একটা অপ্রত্যাশিত ও কঠিন অপারেশন ছিল যা আমাদের টিম ভালোভাবে সম্পন্ন করেছে। রোগী পুরোপুরি সুস্থ আছেন। বর্তমানে সম্ররা মুন্ডা ওসমানী মেডিকেলের ১১নং ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন আছেন বলে জানান তিনি। যদি রোগী অপারেশনে আসতে দেরি করতেন তাহলে তার মারা যাওয়ার আশংকা ছিল।
বাঁচানো গেল না সোনিয়াকে, বিদ্যুৎস্পৃষ্টে একই পরিবারের সবার মৃত্যু
মৌলভীবাজারের জুড়ীতে বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় বাবা-মা ও তিন ভাই-বোনের পর এবার মারা গেল শিশু সোনিয়া আক্তারও (১২)।
বুধবার (২৭ মার্চ) ভোরের দিকে সোনিয়ার মৃত্যু হয়।
সোনিয়া গোয়ালবাড়ী উত্তর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়তো।
মঙ্গলবার বিদ্যুৎস্পৃষ্টে সোনিয়ার বাবা-মা ও তিন ভাইবোনও মারা যান। পরিবারের সদস্যদের মধ্যে একমাত্র সোনিয়াই বেঁচে ছিল।
সোনিয়ার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তার মামা আব্দুল আজিজ।
তিনি বলেন, সোনিয়াকে প্রথমে সিলেটের ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তার শরীরের ২৫ শতাংশ পুড়ে গেছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। উন্নত চিকিৎসার জন্য মঙ্গলবার রাতে তাকে ঢাকায় নেওয়া হয়। সেখানে পৌঁছানোর কিছুক্ষণ পরই সে মারা যায়।
ঢাকায় সোনিয়ার চিকিৎসার ব্যবস্থা করা পূর্ব গোয়ালবাড়ীর বাসিন্দা এস এম জাকির বলেন, সোনিয়াকে চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নিয়ে আসি। সিলেট থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে নেওয়ার পর আজ ভোর ৪টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
নামাজ চলাকালে মসজিদে এসি বিস্ফোরণ
বরিশালের একটি মসজিদে নামাজ চলাকালে বিকট শব্দে এসি বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। তবে এ ঘটনায় কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) শহরের জামে এবায়দুল্লাহ মসজিদে জোহরের নামাজের সময় এ ঘটনা ঘটে।
মুসল্লিরা জানায়, দুপুর দেড়টার দিকে আমরা জোহরের নামাজে দাঁড়িয়ে তারা দোতলায় বিস্ফোরণের বিকট শব্দ পান। এ সময় পুরো মসজিদ ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে যায়। তাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। তারা ছুটে গিয়ে দেখেন মসজিদের ইমামের থাকার কক্ষের এসি বিস্ফোরণে আগুন লেগে গেছে। এরপর ফায়ার সার্ভিস এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. সামসুল আলম জানান, এসি বিস্ফোরণে মসজিদের আর কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। ঘটনার সাথে সাথে মসজিদের বিদ্যুতের লাইন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল।
এ বিষয়ে বরিশাল ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার রবিউল আল আমিন জানান, আমাদের চারটি ইউনিট আগুন যেয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। আমাদের ধারণা, বেশি সময় চলায় গরম হয়ে এসির কমপ্রেসর বিস্ফোরণ হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে।
নামযজ্ঞ অনুষ্ঠান দেখে ফেরার পথে প্রাণ গেল ৩ জনের
মাগুরার শালিখা উপজেলার ছয়ঘড়িয়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় ৩ জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আরও ৫ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
শুক্রবার (২৯ মার্চ) রাত ৯টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। আহতদের মাগুরা সদর হাসপাতাল ও বাঘারপাড়ার একটি ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে।
নিহতরা হলেন- নিরুপমা দে (৪৫), পুষ্প রানী দে (৪০) ও মধু শিকদার (৫০)। এদের মধ্যে নিরুপমা ও পুষ্প যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার নারিকেলবাড়িয়া গ্রামের। মধুর বাড়ি মাগুরায়।
জানা গেছে, শুক্রবার রাত ৮টার দিকে একটি সিএনজিযোগে মাগুরার চঞ্চল গোসাইয়ের আশ্রমে নামযজ্ঞ অনুষ্ঠান দেখতে যান তারা। নামযজ্ঞ অনুষ্ঠান থেকে বাড়ি ফেরার পথে শালিখা উপজেলার ছয়ঘড়িয়া হাজাম বাড়ির মোড়ে পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে একটি নসিমন সিএনজিকে ধাক্কা দিলে উল্টে যায়। এ সময় ঘটনাস্থলে নিহত হন নিরুপমা ও পুষ্প। গুরুতর আহত নিহত নিরুপমা দের স্বামী নিতাই দে ও সিএনজিচালক বাবলু হোসেন। তাদেরকে প্রথমে নারিকেলবাড়িয়ায় একটি ক্লিনিকে আনা হয়। অবস্থার অবনতি হলে তাদেরকে যশোরে রেফার করা হয়েছে।
মাগুরার শালিখা থানার ওসি (তদন্ত) মিলন কুমার ঘোষ জানান, সিএনজিতে ড্রাইভারসহ মোট ৯ জন যাত্রী ছিলেন।
সন্তান কোলে নারীর আত্মহত্যা, বাঁচাতে গিয়ে কলেজছাত্রের মৃত্যু
গাইবান্ধা সদরে ট্রেনে কাটা পড়ে এক কলেজছাত্রসহ দুজন নিহত হয়েছেন।
সোমবার (১ এপ্রিল) দুপুরে গাইবান্ধা আদর্শ কলেজ-সংলগ্ন রেললাইনে এ ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন সাঘাটা উপজেলার ভরতখালী গ্রামের জাহিদুল ইসলামের ছেলে জোবায়ের মিয়া (১৮) এবং গাইবান্ধা সদরের মাঝিপাড়া এলাকার আনোয়ার হোসেনের স্ত্রী রাজিয়া বেগম (২৩)।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে পুলিশ জানায়, গৃহবধূ রাজিয়া বেগম দেড় বছরের শিশু সন্তান কোলে নিয়ে ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দেন। এ সময় কলেজছাত্র জোবায়ের মিয়া তাদের বাঁচাতে গিয়ে ট্রেনের নিচে কাটা পড়েন। এতে ঘটনাস্থলেই দুজন মারা যান। এ ঘটনায় কোলে থাকা দেড় বছরের শিশু আবির হোসেন গুরুতর আহত হলে তাকে গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালে নেন স্থানীয়রা।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন গাইবান্ধা রেলওয়ে (জিআরপি) পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক ফারুক হোসেন।
তিনি জানান, ময়নাতদন্তের পর মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে। এটি আত্মহত্যা না দুর্ঘটনা তা এ মুহূর্তে বলা যাচ্ছে না। এ ঘটনায় গাইবান্ধা জিআরপি থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা করা হবে।
মাকে মারধর, ছেলেকে কুপিয়ে হত্যা করে বাবার আত্মসমর্পণ
গাজীপুরের কালীগঞ্জে নিজের ছেলেকে কুপিয়ে হত্যা করে পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন এক বাবা।
বুধবার (৩ এপ্রিল) দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কালীগঞ্জ থানার ওসি মাহাতাব উদ্দিন।
ওসি বলেন, ঘাতক বাবা আব্দুর রশীদ বাগমার (৭৫) তার মাদকাসক্ত ছেলে কাউসার বাগমারকে (২৪) হত্যা করে পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন। ঘটনার পরপরই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। এ ঘটনায় ঘাতক বাবাকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। এ ছাড়া নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, বুধবার ভোরে উপজেলার জামালপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত কাউসার মাদকাসক্ত ছিলেন। প্রায়ই মাদকের টাকার জন্য মা-বাবার সঙ্গে ঝগড়া করতেন। ভোরে কাউসারকে তার বাবা কুঠার দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেন।
নিহতের মা মোসলেমা বেগম বলেন, আমার ছেলে মাদকাসক্ত ছিল। মাদকের টাকার জন্য প্রায়ই বাড়িতে ঝগড়া বিবাদ ও ভাঙচুর করতো। মাদকের টাকার জন্য জমি বিক্রি করতে তার বাবাকে প্রায়ই চাপ দিচ্ছিল। মঙ্গলবার রাতেও নেশার জন্য ২ কাঠা জমি বিক্রি করে টাকা দাবি করে। টাকা দিতে রাজি না হলে আমাকে মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। এ ঘটনায় তার বাবা ভোরে কাউসারকে ঘুমন্ত অবস্থায় কুঠার দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে।
ব্যাংক কর্মকর্তা অপহরণ : যত টাকা মুক্তিপণ দাবি
বান্দরবানে অপহৃত সোনালী ব্যাংক কর্মকর্তাকে মুক্তি দিতে ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেছে পাহাড়ের সশস্ত্র সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ)।
বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) অপহৃত সোনালী ব্যাংক রুমা শাখার ব্যবস্থাপক নেজাম উদ্দিনের পরিবার গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
নেজাম উদ্দিনের পরিবারের এক সদস্য বলেন, বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় নেজাম উদ্দিনের সঙ্গে তার স্ত্রী মাইছূরা ইসফাতের ফোনে যোগাযোগ হয়েছে। অপহরণকারীরা তার মুক্তির জন্য ১৫ লাখ টাকা দাবি করেছে। পরে পরিবার বিষয়টি সোনালী ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়েছে। ব্যাংকের পক্ষ থেকে নেজামকে উদ্ধারে সব ধরনের চেষ্টা অব্যাহত থাকবে বলে ব্যাংকের পক্ষ থেকে আশ্বস্ত করা হয়েছে।
পরিবার ও ব্যাংকের পক্ষ থেকে মুক্তিপণ দাবির বিষয়টি প্রশাসনকেও জানানো হয়েছে। প্রশাসনও আশ্বস্ত করেছে যে, নেজাম উদ্দিনকে উদ্ধারে তাদের সব ধরনের প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে।
সোনালী ব্যাংকের ডিজিএম (বান্দরবান) মো. ওসমান গণি গণমাধ্যমকে বলেন, নেজাম উদ্দিনকে উদ্ধারে সব ধরনের প্রক্রিয়া চালিয়ে যাচ্ছি। প্রশাসন খুবই তৎপর। তবে মুক্তিপণ ও সন্ত্রাসীদের সঙ্গে যোগাযোগের বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি তিনি।
উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) রাত ৯টার দিকে তারাবির নামাজ চলাকালে পাহাড়ি সন্ত্রাসীদের একটি সশস্ত্র গ্রুপ বান্দরবানের রুমায় সোনালী ব্যাংকের শাখায় ঢুকে ব্যাংকের ভল্ট ভেঙে টাকা লুটে করে। এ সময় তারা ব্যাংকের আইনশৃঙ্খলায় নিয়োজিত পুলিশ সদস্যদের অস্ত্রও লুট করে। একই সঙ্গে মসজিদ থেকে ব্যাংকের ম্যানেজার নিজাম উদ্দিনকে অপহরণ করে নিয়ে যায়।
পরদিন বুধবার (৩ এপ্রিল) দুপুরে থানচিতে মাত্র কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে সোনালী ও কৃষি ব্যাংকের তিনটি শাখায় হামলা চালায় সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা। এরপর থেকে স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া তারা বাইরে বের হচ্ছেন না।