• ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
logo

এবারও হার মানবে না এইচএসসি পরীক্ষার্থী রুবায়েত

স্টাফ রিপোর্টার, পটুয়াখালী

  ০৩ এপ্রিল ২০১৮, ২২:০৮

কোনো বাধাই দমিয়ে রাখতে পারেনি পটুয়াখালীর শারীরিক প্রতিবন্ধী এইচএসসি পরীক্ষার্থী রুবায়েত হাকিম স্নিগ্ধাকে।

দুই হাতের কব্জিতে শক্তি না থাকলে কি হবে, হাটতে না পারলে কি হবে, ঠিকভাবে কথা বলতে না পারলে কি হবে- তিনি তার মেধা ও দক্ষতা দিয়ে ধাপে ধাপে অর্জন করেছেন জেএসসি ও এসএসসিসহ প্রতিটি সাফল্যের সিঁড়ি। তিনি সবাইকে অবাক করে দিয়ে এ বছরের এইচএসসি পরীক্ষাও দিচ্ছেন সুন্দরভাবে।

গতকাল মঙ্গলবার ছিল বাংলা দ্বিতীয় পত্রের পরীক্ষা। দুপুর ১টা ৫ মিনিটে পটুয়াখালী সরকারি কলেজ কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায় পরীক্ষার্থী রুবায়েত হাকিম স্নিগ্ধা কেন্দ্রের কলা ভবনের দোতলার একটি রুমের সবশেষ পেছনের সিটে বসে পরীক্ষা দিচ্ছেন।

স্নিগ্ধা হাজী আক্কেল আলী হাওলাদার কলেজের মানবিক বিভাগের ছাত্র। নির্ধারিত সময় শেষ হয়ে গেলেও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরীক্ষা বিধিমোতাবেক অতিরিক্ত ২০ মিনিট সময়ের পরীক্ষা দিচ্ছেন স্নিগ্ধা। পরীক্ষা শেষে কথা হয় স্নিগ্ধার সঙ্গে।

রুবায়েত হাকিম স্নিগ্ধা ভাঙা ভাঙা কণ্ঠে আরটিভি অনলাইনকে বলেন, আমি লেখাপড়া শেষ করে কৃষিবিদ কিংবা সরকারি বড় কর্মকর্তা হয়ে মানুষের সেবা করতে চাই। মানুষের সেবা করতে আমার খুব ভাল লাগে।

স্নিগ্ধার বাসা পটুয়াখালী পৌর শহরের পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডের পিটিআই সড়কে। দুই ভাই’র মধ্যে স্নিগ্ধা বড়। বাবা এমএ হাকিম রংপুর পৌরসভায় একটি বেসরকারি সংস্থার প্রজেক্টে চাকরি করছেন এবং মা রুবিনা হাকিম একজন গৃহিণী। ২০০০ সালের ১৬ ডিসেম্বরে জন্ম হয় স্নিগ্ধার। তিনি জন্ম থেকেই শারীরিক প্রতিবন্ধী হয়ে বেড়ে উঠতে থাকে। স্নিগ্ধা ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত বাসায় বসেই লেখাপড়া করে। তবে তিনি কখনও শারীরিক অক্ষমতার কাছে হার মানেনি। তার মনে বাসনা জাগে লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়ার। ছেলের আগ্রহ দেখে স্কুলে ভর্তি করিয়ে দেন তার বাবা-মা। এরপর পুরোদমে লেখাপড়া চালিয়ে যান স্নিগ্ধা। স্কুলের পরীক্ষার ফলাফলের ধারাবাহিকতা ভালো হওয়ায় শিক্ষকরাও তাকে উৎসাহিত করেন পড়ালেখা করতে।

স্নিগ্ধার মা রুবিনা হাকিম বলেন, আমার ছেলে শারীরিক প্রতিবন্ধী হলেও লেখাপড়ার প্রতি তার যথেষ্ট আগ্রহ ও ইচ্ছা রয়েছে। এ কারণে সে সব সময় বই নিয়ে থাকে। জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষায়ও ভাল রেজাল্ট করেছে স্নিগ্ধা । আশা করি এবারের এইচএসসি পরীক্ষায়ও ভাল রেজাল্ট করবে।

তিনি আরও বলেন, স্নিগ্ধা জন্ম থেকেই শারীরিক প্রতিবন্ধী। সে হাত দিয়ে কোনো রকম লিখতে ও খেতে পারলেও হাটতে পারে না এবং কথা বলে ভাঙা ভাঙা কণ্ঠে। অনেক ডাক্তার দেখিয়েছি কিন্তু কোনো লাভ হয়নি।

হাজী আক্কেল আলী হাওলাদার কলেজের অধ্যক্ষ মাসুদ আলম বাবুল আরটিভি অনলাইনকে বলেন, স্নিগ্ধার সাফল্যে আমরা সবাই গর্বিত এবং আমার আত্মবিশ্বাস সে শত বাধা পেরিয়ে তার লক্ষ্যে পৌঁছাবেই।

এসএস

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
এইচএসসির ফরম পূরণের সময় বাড়লো
এইচএসসি ফরম পূরণে অতিরিক্ত ফি নিলে ব্যবস্থা : মাউশি
এইচএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণ শুরু
শুরু হচ্ছে এইচএসসির ফরম পূরণ, জেনে নিন ফি কতো
X
Fresh