পরকীয়ার জেরেই কলেজছাত্র কিরণ খুন, ঘাতক নারীর স্বীকারোক্তি
‘প্রথমে ক্রিকেটের স্ট্যাম্পের আঘাতে খুন, তারপর ছেলেদের পোশাক পরে লাশ বস্তাবন্দি। এরপর সেটি সাইকেলে বেঁধে বাড়ি থেকে প্রায় ১ কি.মি. দূরে কলাবাগানে লাশ ফেলে নির্বিঘ্নে বাড়ি ফিরে এসে ঘুম।’
ঘটনাটি সিনেমার মতো মনে হলেও বাস্তবে কলেজছাত্রকে খুনের পর এভাবেই লাশ ফেলে রেখে এসেছিলেন পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার বিধবা নারী মাকছুমা আক্তার মলি। মোবাইল ফোন কললিস্টের সূত্র ধরে তাকে গ্রেপ্তারের পর বেরিয়ে এসেছে চাঞ্চল্যকর এসব তথ্য।
গ্রেপ্তারকৃত মাকছুমা আক্তার মলি উপজেলার লক্ষ্মীকোরা দহপাড়া গ্রামের মৃত দেলোয়ার সরকারের স্ত্রী। বুধবার তাকে আদালতে সোপর্দ করা হলে তিনি হত্যার দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন।
মোকামতলা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ (পুলিশ পরিদর্শক) মিজানুর রহমান বলেন, পুলিশ সুপারের নির্দেশনায় আমরা মাত্র ৪ দিনেই হত্যার রহস্য উদঘাটন করতে পেরেছি। মোবাইল কলের সূত্র ধরেই মঙ্গলবার বিকেলে মাকছুমাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপরই তার স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে হত্যায় ব্যবহৃত স্ট্যাম্প, লুঙ্গি, বাই সাইকেল ও দুটো মোবাইল জব্দ করা হয়েছে।
--------------------------------------------------------
আরও পড়ুন: রাজশাহীতে প্রধানমন্ত্রীর জনসভা ঘিরে পুলিশের নির্দেশনা
--------------------------------------------------------
আদালতে দেয়া মাকছুমার জবানবন্দির উদ্বৃতি দিয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এসআই) রেজাউল করিম জানান, নিহত কিরণ মাকছুমার গ্রাম সম্পর্কীয় নাতি। কিছুদিন আগে বিধবা মাকছুমা কিরণের সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। এই সম্পর্ক চলাকালীন সময়েই কিরণের কুদৃষ্টি পড়ে মাকছুমার কলেজ পড়ুয়া মেয়ের উপর। কিরণ গোপনে ওই মেয়ের গোসলের ভিডিও ধারণ করে দীর্ঘদিন থেকে ব্ল্যাকমেইল করে আসছিল।
তিনি আরও জানান, এরই এক পর্যায়ে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি রাতে কিরণ মাকছুমার বাড়িতে গিয়ে তার মেয়ের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কের প্রস্তাব দেয়। এ প্রস্তাবে রাজি না হলে ভিডিওটি ইন্টারনেটে ছেড়ে দেয়ার হুমকি দেয় কিরণ। বিষয়টি নিয়ে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন মাকছুমা ও কিরণ। পরে সেটি একসময় ধস্তাধস্তিতে রুপ নেয়। এ সময় ঘরের মধ্যে থাকা একটি স্ট্যাম্প দিয়ে কিরণের মাথায় আঘাত করেন মাকছুমা। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। এরপর ছেলেদের পোশাক পরে কিরণের লাশ বস্তায় ভরে সাইকেলে করে নিয়ে কলাবাগানে ফেলে আসেন মাকছুমা। এর পরের দিন স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে কিরণের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
এ ঘটনায় কিরণের বাবা গোলাম মোস্তফা বাদি হয়ে একটি হত্যামামলা দায়ের করেন।
আরও পড়ুন:
এসএইচ/জেএইচ
মন্তব্য করুন