• ঢাকা শনিবার, ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ৪ মাঘ ১৪৩১
logo

কচুয়ায় জমি বিক্রিতে বাধা, মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রীকে হয়রানি

আরটিভি নিউজ

  ০৯ জানুয়ারি ২০২৫, ১৬:৪৪
ফাইল ছবি

চাঁদপুরের কচুয়ার ২নং পাথৈর ইউনিয়নের আটোমোর গ্রামে জমি বিক্রিতে বাধা এবং দখলের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে সাবেক আওয়ামী লীগ নেতা বাতেন সরকারের দ্বিতীয় স্ত্রী সায়েরা বেগমের (পুন্নি) বিরুদ্ধে। এ নিয়ে বিভিন্নভাবে হুমকি ও হয়রানির মধ্যে পড়েছেন মৃত মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী মাহমুদা রহমান (৫৪)।

ভুক্তভোগীর পরিবার জানায়, উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া জমিটি দীর্ঘদিন ধরে ভোগ করছেন মুক্তিযোদ্ধা সাদেকুর রহমান। তার মৃত্যুর পর ২০২২ সালে জমিটি বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নেন তার স্ত্রী মাহমুদা রহমান। কুলসুম নামে এক নারীর কাছে জমি বিক্রির জন্য অগ্রিম টাকাও নেন তিনি। কিন্তু জমি বিক্রিতে বাধা দেয় বাতেনের স্ত্রী পুন্নি। তার কাছে জমি বিক্রি করতে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা কামাল, স্বপন ও ফারুককে দিয়ে চাপ ও বিভিন্নভাবে হয়রানি করা হয়। এতে ব্যর্থ হয়ে কচুয়ার সাচার থানায় এসআই আনোয়ারের উপস্থিতিতে গত বছরের ১৩ মে জোর করে ভুক্তভোগী মাহমুদা রহমানের কাছে থেকে স্ট্যাম্পে সই করে নেওয়া হয়।

মাহমুদা রহমানের ছেলে গালিব জানান, ২০২২ সাল থেকেই আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের দিয়ে জমিটি বিক্রিতে বাধা দেওয়া হচ্ছে। তারা এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। আওয়ামী সরকারের পতনের পরেও তারা শক্তি প্রয়োগ করে যাচ্ছে, জমি বিক্রিতে বাধা দিচ্ছে। নানাভাবে হুমকি-হয়রানির পাশাপাশি জমি দখলেরও চেষ্ট করা হয়েছে।

তিনি বলেন, বিষয়টি স্থানীয় চেয়ারম্যানকে জানালে তিনি চেষ্টা করেও সমাধান করতে ব্যর্থ হন। পরবর্তীতে আমার মাকে সাচার থানায় নিয়ে সাচার আওয়ামী লীগ নেতা বাশারসহ স্বৈরাচারের অনেক নেতাকর্মীর উপস্থিতিতে জোর করে স্ট্যাম্পে সই নেয়। সেখানে লেখা আমরা তাদের কাছে জমি বিক্রি করব এবং এর জন্য নাকি আমরা টাকাও নিয়েছি। অথচ আমারা কোনো টাকা নিইনি।

গালিব আরও বলেন, জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানের পর এখন ওই স্ট্যাম্পের মাধ্যমে জায়গা বিক্রি করতে পুন্নি ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা হুমকি দিয়ে আসছেন। এমনকি উল্টো আমাদের নামে উপজেলা নির্বাহী অফিসে অভিযোগ দায়ের করেছেন। আমরা ন্যায়বিচার চাই।

মুক্তিযোদ্ধা সাদেকুর রহমানের স্ত্রী ভুক্তভোগী মাহমুদা রহমান জানান, কুলসুম এবং পুন্নি, দুইজনই বাড়ির মানুষ। জমিটি নেওয়ার জন্য প্রথমে পুন্নিকে বললে তিনি সাড়া দেননি। পরবর্তী চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে কুলসুমের কাছে জমি বিক্রির অগ্রিম টাকা নিই। ছেলে বিদেশ থাকায় রেজিস্ট্রেশন পরে করা হবে বলে কথা হয়। জমি বিক্রির খবর শোনার পর থেকেই পুন্নি তার কাছে জমি বিক্রি করতে উঠেপড়ে লাগে।

তিনি আরও বলেন, পুন্নি ও স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা জমি বিক্রির জন্য দীর্ঘদিন ধরে নানাভাবে হয়রানি ও হুমকি দিয়ে আসছে। আমার স্বামীর মৃত্যুর পর তা আরও বেড়ে যায়। বিভিন্ন জনের কাছে গিয়েও কোনো সমাধান পায়নি। তারা জোর করে আমার কাছ থেকে স্ট্যাম্পে সই নিয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আমি একজন মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী। স্বৈরাচারের আমলে কারও কাছে বিচার পাইনি। আশা করি, নতুন বাংলাদেশে আমি ভয়, হুমকি ও হয়রানিবিহীন বাকি জীবন বাঁচতে পারবো।

অভিযুক্ত সায়েরা বেগমের সঙ্গে ফোনে কথা হলে তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করেন। তবে জমিটি তিনি চান সেই কথা স্বীকার করেছেন।

কচুয়া থানার এসআই আনোয়ার জানান, বিষয়টি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে সমস্যা চলছে। থানায়ও বসা হয়েছিল। তবে, সায়েরার মাধ্যমে মাহমুদা রহমানকে হয়রানির বিষয়টি জানা নেই। লিখিত অভিযোগ পেলে আমরা ব্যবস্থা নেব। তবে, জমির মালিক যেখানে ইচ্ছে তার জমি বিক্রি করতে পারেন।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ হেলাল চৌধুরী জানান, আগামী ১৫ জানুয়ারি বিষয়টি নিয়ে আমরা বসবো। সব পক্ষের কথা শুনে সমাধান করার চেষ্টা করব।

আরটিভি/আরএ/এস

মন্তব্য করুন

Bangal
rtv Drama
Radhuni
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
চাঁদপুর জেলা পর্যায়ে প্রাথমিক বিদ্যালয় গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের উদ্বোধন
ডাকাতিয়া নদী থেকে বৃদ্ধের মরদেহ উদ্ধার
চাঁদপুর পৌর এলাকায় অভিযান, ৫০ অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ
যানজট নিরসনে চাঁদপুর পৌরসভায় চলবে দুই রঙের ইজিবাইক