• ঢাকা শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
logo

শীতে কাহিল উত্তরের মানুষ

আরটিভি অনলাইন

  ০৪ জানুয়ারি ২০১৮, ১২:০৯

গেলো দুই তিন ধরে ঘন কুয়াশা আর চারিদিকে বইছে হিমেল হাওয়া। ফলে উত্তরের জেলাগুলো জেঁকে বসেছে শীত। এতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। সবথেকে বেশি কষ্ট হচ্ছে তৃণমূল মানুষের। সন্ধ্যার পর থেকে ছিন্নমূল অসহায় মানুষেরা ফুটপাতে খড়-কুটায় আগুন জ্বালিয়ে নিবারণ করছে শীত। এ পরিস্থিতিতে সরকারিভাবে না হলেও স্থানীয়রা ব্যক্তিগত উদ্যোগে গরিব অসহায় মানুষদের মাঝে শীত বস্ত্র বিতরণ করছে।

সন্ধ্যা থেকে পরদিন আধাবেলা পর্যন্ত থাকছে প্রচণ্ড শীতের দাপট। কুয়াশার কারণে দিনের বেলায় যানবাহনগুলো হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করছে। প্রচণ্ড শীতের কারণে সন্ধ্যার পর সাধারণ মানুষ গুরুত্বপূর্ণ কাজ ছাড়া কেউ ঘর থেকে বেরোচ্ছে না।

শীত নিবারণের জন্য গরম কাপড় কিনতে নিম্ন ও মধ্য আয়ের মানুষেরা ভিড় করছে জেলার হকার্স মার্কেটগুলোতে।

এদিকে, আবহাওয়া কার্যালয় বলছে শীতের তীব্রতা আরো বাড়বে যা আগামী তিন থেকে চারদিন অব্যাহত থাকবে।

আরটিভি অনলাইনের বিভিন্ন প্রতিনিধি জানান, ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, তিস্তাসহ নদ-নদী অববাহিকার চার শতাধিক চরের মানুষ শীতের তীব্রতায় দুর্ভোগে পড়েছে। গেলো বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার ও নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া পরিবারগুলো গরম কাপড়ের অভাবে সবথেকে পড়েছে বিপাকে। খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন অনেকেই। শীতের তীব্রতা বাড়তে থাকায় শিশুদের নানা রোগব্যাধি নিয়েও চিন্তিত হয়ে পড়েছেন হতো দরিদ্র পরিবারের লোকজন।

দিনাজপুরে গতকালের চেয়ে আরো কিছুটা তাপমাত্রা কমেছে। কুয়াশার দাপট নেই, সকাল ৯টায় সূর্যের দেখা মিললেও শৈত্য প্রবাহে হাড় কাঁপানো কনকনে শীতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে এ অঞ্চলের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। দিনাজপুরে আজ বৃহস্পতিবার মৌসুমের সর্বনিম্ন ৮ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসে তাপমাত্রা নেমে এসেছে। তীব্র শীতে ছিন্নমূল মানুষের যেমন বাড়ছে দুর্ভোগ, তেমনি ঠাণ্ডায় কাজ করতে না পারায় বিপাকে পড়েছে শ্রমজীবী মানুষেরা।

দিনাজপুর আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ. তোফাজ্জুর রহমান জানান, শীতের তীব্রতা আরো বৃদ্ধি পাবে। যা আগামী কয়েকদিন অব্যাহত থাকতে পারে। বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯৩ শতাংশ যার গতিবেগ ছিল প্রতি ঘণ্টায় ১৫ থেকে ১৮ কিলোমিটার।

রাজশাহী অঞ্চলে জেঁকে বসেছে শীত। বইছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। বৃহস্পতিবার ভোর ৬টার আগে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা নেমেছে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। এটিই এ মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বলে জানিয়েছে রাজশাহী আবহাওয়া অফিস। এছাড়া ভোর থেকেই কুয়াশার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে হিমালয় ছুঁয়ে আসা হিমশীতল হাওয়া। এতে কাঁপছে উত্তরের এ জনপদ।

এ জেলায় সকালে পথের ধারে খড়-কুটায় আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণ করতে দেখা গেছে ছিন্নমূল মানুষদের।

রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের সহকারী আনোয়ারা বেগম জানান, বৃহস্পতিবার রাজশাহীতে দিনের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রাত ৩টা থেকে ভোর ৬টার মধ্যে এ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। এটিই চলতি মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা।

এদিকে হিমালয়ের হিমেল ঠাণ্ডা বাতাসের কারণে শীতের তীব্রতা বেড়েছে ঠাকুরগাঁওয়েও। গেলো দুই দিন সূর্য দেখা গেলেও শীতের তীব্রতা বেড়েছে অনেক। এ অবস্থায় সাধারণ মানুষ কাজে যেতে না পেরে অনাহারে অর্ধাহারে দিনাতিপাত করছে।

ঠাকুরগাঁও উত্তরের সর্বশেষ জেলা ও হিমালয়র অনেক কাছে হওয়ায় এখানে শীতের তীব্রতা প্রতি বছরই বেশি হয়। অন্যান্য বছর নভেম্বরের শেষে শীতের দাপট শুরু হলেও এ বছর জানুয়ারির শুরুতে শীতের দাপট শুরু হয়েছে। এখানে সন্ধ্যা থেকে সকাল পর্যন্ত চারদিক কুয়াশায় ঢাকা পড়ছে। প্রচণ্ড শীতে সাধারণ মানুষ কাজে যেতে পারছে না। শ্রমিক শ্রেণির এসব মানুষ সন্তান পরিজন নিয়ে অর্ধাহারে অনাহারে দিনাতিপাত করছে।

ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক আব্দুল আওয়াল জানিয়েছেন, জেলার শীতার্ত মানুষের শীত নিবারণের জন্য ইতোমধ্যে ৫০ হাজার পিস কম্বল চেয়ে মন্ত্রণালয়ে চাহিদাপত্র দেয়া হয়েছে। প্রাপ্ত কিছু কম্বল ইতোমধ্যে উপজেলা পর্যায়ে বিতরণ করা হয়েছে।

এদিকে পঞ্চগড়ে দিনরাত ঠান্ডা বাতাস বইছে। হিমেল হাওয়ায় কনকনে শীত জেঁকে বসেছে উত্তরের এ জেলায়। সন্ধ্যার পর থেকে বাড়তে থাকে শীতের তীব্রতা। সন্ধ্যা হলেই জনশূন্য হয়ে পড়ছে শহর। দৈনন্দিন আয় কমে যাওয়ায় দুর্ভোগে পড়েছেন খেটে খাওয়া মানুষ।

এসএস

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
যে কারণে গরম আর শীত বেশি চুয়াডাঙ্গায়
টাঙ্গাইলে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি, বিপর্যস্ত জনজীবন
যশোরে তীব্র তাপপ্রবাহ, বিপর্যস্ত জনজীবন
বৃষ্টি-বন্যায় বিপর্যস্ত ওমান-আরব আমিরাত
X
Fresh