নরসিংদীতে গৃহবধূর ওপর মধ্যযুগীয় বর্বরতা
নরসিংদীতে মধ্যযুগীয় কায়দায় সুমি নামে এক গৃহবধূকে নির্যাতন করেছে তার স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন। এই ঘটনায় গৃহবধূর শ্বশুর হাশেম খানকে বুধবার ভোরে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
নির্যাতনের শিকার সুমির মাথার চুল, চোখের ব্রু ও সিগারেটের ছ্যাঁকা দিয়ে শরীর ঝলসে দেয়া হয়েছে। তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এর আগে মঙ্গলবার নির্যাতিতা অথরা আক্তার ওরফে সুমি (২২) বাদী হয়ে স্বামী কবির মিয়া, শ্বশুর, শাশুড়ি ও দেবরসহ পাঁচজনকে আসামি করে রায়পুরা থানায় মামলা করেন।
গেলো শনিবার নরসিংদীর রায়পুরায় জাহাঙ্গীনগর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
সুমির পরিবার সূত্রে জানা যায়, ছয় বছর আগে রায়পুরার পলাশতলী ইউনিয়নের শহর খোলা গ্রামের মুদি ব্যবসায়ী বাহার উদ্দিনের মেয়ে অথরা আক্তার ওরফে সুমির সঙ্গে একই উপজেলার জাহাঙ্গীরনগর গ্রামের হাসেম মিয়ার ছেলে কবির মিয়ার বিয়ে হয়।
তাদের দুই ছেলে সন্তান রয়েছে। বিয়ের কিছুদিন পর থেকে রিকশা গ্যারেজের মালিক সুমির স্বামী কবির যৌতুকের জন্য তার ওপর নির্যাতন শুরু করেন। বিভিন্ন অজুহাতে টাকা এনে দেয়ার জন্য সুমিকে চাপ দেন। টাকা এনে দিতে অস্বীকার করলেই তার ওপর নেমে আসে নির্যাতন।
এর আগে বিভিন্ন সময় সুমি তার বাপের বাড়ি থেকে প্রায় ৬০ হাজার টাকা এনে দেয়। সম্প্রতি কবির মিয়া বাড়িতে একটি ঘর নির্মাণের কাজ শুরু করেন। ঘর নির্মাণ করার জন্য তিন লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন। যৌতুক দিতে অস্বীকার করায় সুমিকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়া হবে বলে হুমকি দেয়া হয়।
গেলো শনিবার বিকেলে সুমিকে যৌতুক আনার কথা বলা হয়। একপর্যায়ে তার স্বামী কবির মিয়া সুমিকে মারপিট শুরু করে। পরে কেঁচি এনে তার মাথার চুল কেটে দেয়। সেসময় তার দেবর চোখের ব্রু কাটে। শ্বশুর হাসেম মিয়া সিগারেট দিয়ে সুমির দুই হাতে ছ্যাকা দেয়।
খবর পেয়ে সুমির বাপের বাড়ির লোকজন তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। সুমির বাবা বাহার উদ্দিন আরটিভি অনলাইনকে বলেন, সুখে থাকার জন্য মেয়েকে বিয়ে দিয়েছিলাম। ৬০ হাজার টাকা যৌতুক দিয়েছি। তারপরও পাষণ্ডদের হাত থেকে মেয়েকে রক্ষা করতে পারেনি।
রায়পুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেলোয়ার হোসেন আরটিভি অনলাইনকে বলেন, একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
জেবি/এসএস
মন্তব্য করুন