নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাছে মোটরসাইকেলের ধাক্কা, ২ বন্ধু নিহত
কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাছে ধাক্কা লেগে মোটরসাইকেল আরোহী দুই বন্ধু নিহত হয়েছেন।
রোববার (৩ নভেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে উপজেলার মঠখোলা নতুন বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- এগারসিন্দুর ইউনিয়নের চরখামা এলাকার কামালের ছেলে পলাশ (১৭) ও আসাদের ছেলে রিয়াদ (১৮)।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, রোববার দুপুর ১২টার দিকে জেলার পাকুন্দিয়া উপজেলার মঠখোলা নতুন বাজার এলাকায় অটোরিকশাকে ওভারটেক করতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাছে ধাক্কা লেগে ঘটনাস্থলেই দুই বন্ধুর মৃত্যু হয়।
এগারসিন্দুর ইউনিয়নের ৪, ৫ ও ৬ নং ওয়ার্ডের মহিলা সদস্য শিরিন আক্তার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আরটিভি/এএএ
মন্তব্য করুন
নিখোঁজ মুনতাহার মরদেহ মিলল পুকুরে, গলায় ছিল রশি পেঁচানো
নিখোঁজের সাত দিন পর সিলেটের কানাইঘাটে নিখোঁজ শিশু মুনতাহা আক্তার জেরিনের (৬) মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। গলায় রশি পেঁচানো অবস্থায় বাড়ির পাশের পুকুরে তার মরদেহ পাওয়া গেছে।
রোববার (১০ নভেম্বর) ভোর ৪টার দিকে মুনতাহার নিজ বাড়ির পুকুরে তার মরদেহের সন্ধান পাওয়া যায়। মুনতাহা উপজেলার সদর ইউনিয়নের বীরদল গ্রামের ভাড়ারিফৌদ গ্রামের শামীম আহমদের মেয়ে।
কানাইঘাট থানার ওসি মো. আব্দুল আওয়াল জানান, শিশুটির মরদেহ দেখে মনে হচ্ছে তাকে হত্যা করে পুকুরে ফেলে দেওয়া হয়েছে। শিশুটির গলায় রশি পেঁচানো ছিল। শরীরে ক্ষতচিহ্নও আছে।
মুনতাহার বাবা দাবি, তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় কানাইঘাট থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি দায়ের করেন।
এর আগে, রোববার (৩ নভেম্বর) সকালে মুনতাহাকে নিয়ে স্থানীয় একটি ওয়াজ মাহফিল থেকে বাড়ি ফেরেন তার বাবা। পরে শিশুটি প্রতিদিনের মতো আশপাশের বাড়িতে শিশুদের সঙ্গে খেলাধুলা করতে যায়। বিকেল ৩টার পরও বাড়ি না ফেরায় পরিবার থেকে মুনতাহাকে খোঁজাখুঁজি শুরু হয়। তারপর তাকে আর কোথাও পাওয়া যায়নি।
আরটিভি/এফআই/এআর
মুনতাহাকে হত্যার পর পুঁতে রাখা হয় কাদামাটিতে, আটক ৩
সিলেটের কানাইঘাটে নিখোঁজ হওয়া শিশু মুনতাহা আক্তার জেরিনকে (৬) হত্যার পর পুঁতে রাখা হয় কাদামাটিতে। পুঁতে রাখা মরদেহটি খাল থেকে সরিয়ে নিয়ে পার্শ্ববর্তী পুকুরে ফেলার চেষ্টার সময় মা-মেয়েসহ তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ।
রোববার (১০ নভেম্বর) ভোর ৪টার দিকে মরদেহটি সরানোর চেষ্টাকালে জনতার সহায়তায় শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
আটককৃতরা হলেন, মর্জিয়া আক্তার, তার মা আলীফজান ও আলীফজানের মা কুতুবজান। এ ঘটনায় বিক্ষুব্ধ জনতা মর্জিয়ার বসতঘর গুড়িয়ে দেন।
নিহত মুনতাহা সিলেটের কানাইঘাট উপজেলা সদর ইউনিয়নের বীরদল ভাড়ারীফৌদ গ্রামের শামীম আহমদের মেয়ে।
স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল ওয়াহিদ বলেন, ঘটনার দিন রোববার (৩ নভেম্বর) আমার বাড়িতে খেলা করছিল মুনতাহা। ওইদিন শিশুটিকে ধরে নিয়ে হত্যার পর মরদেহ ঘরের পাশে খালে পুঁতে রাখা হবে তা কল্পনা করতে পারিনি।
তিনি আরও বলেন, আমাদের বিশ্বাস ছিল শিশুটিকে জীবিত পাবো। কিন্তু ঘরের পাশে তার মরদেহ মিলবে, তাকে হত্যা করা হবে কল্পনা করিনি। এ হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানাই।
কানাইঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল আউয়াল জানান, মুনতাহার মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। প্রতিবেশী মর্জিয়া আক্তার ও তার মা আলীফজান মিলে তাকে হত্যা করেছেন।
তিনি আরও বলেন, মুনতাহাকে অপহরণের পর ওইদিনই তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করে মরদেহ ঘরের পাশের একটি খালে কাদামাটিতে পুঁতে রাখা হয়।এরপর আলীফজান বেগম রোববার (১০ নভেম্বর) ভোরে মরদেহ সরানোর চেষ্টাকালে স্থানীয়রা দেখে ফেলেন। এ সময় স্থানীয়রা থানায় খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে। এ সময় মর্জিয়া, তার মা ও নানিকে আটক করা হয়। এর মধ্যে আলীফজান ভিক্ষাবৃত্তি করতেন। তবে কী কারণে তাকে হত্যা করা হয়েছে তা এখনও জানা যায়নি।
ওসি বলেন, শনিবার (৯ নভেম্বর) রাত ১২টার দিকে মর্জিয়াকে আটক করে থানায় নেওয়া হয়। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলেও কোনো তথ্য উদঘাটন করা যায়নি। এরপর রোববার ভোরে মরদেহ উদ্ধারের পর তাকে আটক দেখানো হয়।
তিনি আরও বলেন, মরদেহ খাল থেকে সরিয়ে নিয়ে পার্শ্ববর্তী পুকুরে ফেলার চেষ্টা করা হয়।
আরটিভি/এফআই/এআর
মুনতাহার মরদেহ উদ্ধারের পর বেরিয়ে এলো চাঞ্চল্যকর তথ্য
নিখোঁজের ৭ দিন পর মিলেছে সিলেটের কানাইঘাটের ৬ বছরের শিশু মুনতাহার মরদেহ। শিশুটির সাবেক গৃহশিক্ষিকা, শিক্ষিকার মা ও নানি তিনজন মিলে তাকে হত্যা করে মাটিতে পুঁতে ফেলে।
রোববার (১০ নভেম্বর) ভোরে মুনতাহার পুঁতে ফেলা মরদেহ তুলে পুকুরের পানিতে ফেলার সময় স্থানীয়রা গৃহশিক্ষিকার মা আলিফজান বিবিকে হাতেনাতে আটক করেন। শিশু মুনতাহার গৃহশিক্ষিকা শামীমা বেগম মার্জিয়া, তার মা ও তার নানি কুতুবজান বিবিকে আটক করেছে পুলিশ।
স্থানীয়রা জানান, রোববার রাতে গৃহশিক্ষিকা শামীমা বেগম মার্জিয়াকে সন্দেহজনকভাবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নেয় পুলিশ। মার্জিয়ার আচরণ সন্দেহজনক মনে হলে তার বাড়িতে মুনতাহার সন্ধান করেন স্থানীয়রা। রাত সাড়ে ৩টার দিকে মার্জিয়ার মা আলিফজান বিবিকে অন্ধকারের মধ্যে রাস্তা পার হতে দেখেন স্থানীয়রা। এ সময় হাতে কী জানতে চাইলে তিনি দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করেন। স্থানীয়রা তাকে আটক করার পর তার কোলে কাদামাটি মাখা মুনতাহার মরদেহ দেখতে পান। পরে তাকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়।
এ বিষয়ে কানাইঘাট সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আফসার উদ্দিন আহমদ বলেন, মুনতাহার নিখোঁজের পর রোববার স্থানীয় সাংবাদিকরা ঘটনাস্থলে গেলে মার্জিয়ার আচরণ সন্দেহজনক মনে হয়। পরে রাতে পুলিশ তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে যায়। এরপর পুলিশ মুনতাহার স্বজনদের বলেন মার্জিয়ার বাড়ির আশপাশে মাটি খোঁড়া আছে কি না খোঁজ নিতে। স্থানীয়রা রোববার রাতভর তার বাড়ির আশেপাশে কোথাও মাটিখোঁড়া কোনো জায়গা আছে কি না খুঁজতে থাকেন। ফজরের আজানের আগ মুহূর্তে মার্জিয়ার মা আলিফজান বিবিকে হঠাৎ অন্ধাকারের মধ্যে রাস্তা পার হতে দেখে আটকানোর চেষ্টা করেন। এ সময় তিনি দৌড়ে পালানোর চেষ্ঠা করলে স্থানীয়রা তাকে আটক করেন। পরে কাদামাটি মাখা মুনতাহার মরদেহ দেখতে পান।
আটক আলিফজান বিবির বরাত দিয়ে ইউপি চেয়ারম্যান আফসার উদ্দিন জানান, তারা মুনতাহার মরদেহ প্রথমে মাটিতে পুঁতে ফেলেছিলেন। রাতে সেখান থেকে মরদেহ তুলে মুনতাহার চাচার বাড়ির পুকুরে ফেলতে চেয়েছিলেন।
তিনি আরও জানান, মার্জিয়া মুনতাহার প্রতিবেশি ও তার গৃহশিক্ষক। একসময় ভিক্ষা করতেন মার্জিয়ার মা ও নানী। মার্জিয়াকে তার স্বামী ছেড়ে চলে গেছেন। ফলে বাড়ির বাইরে গেলে মুনতাহাকে সঙ্গে নিতেন মার্জিয়া। সবাই তাকে বিশ্বাসও করতেন। তবে কী কারণে তাকে হত্যা করা হয়েছে তা জানা যায়নি। সম্প্রতি মার্জিয়ার পরিবারের সঙ্গে তাদের বিরোধ চলছিল।
এর আগে, রোববার (৩ নভেম্বর) সকালে মুনতাহাকে নিয়ে স্থানীয় একটি ওয়াজ মাহফিল থেকে বাড়ি ফেরেন তার বাবা। পরে শিশুটি প্রতিদিনের মতো আশপাশের বাড়িতে শিশুদের সঙ্গে খেলাধুলা করতে যায়। বিকেল ৩টার পরও বাড়ি না ফেরায় পরিবার থেকে মুনতাহাকে খোঁজাখুঁজি শুরু হয়। তারপর তাকে আর কোথাও পাওয়া যায়নি।
আরটিভি/এসএপি/এআর
বন্ধুকে এয়ারপোর্টে বিদায় দিয়ে ঘরে ফেরা হলো না তিন বন্ধুর
ঢাকা টাঙ্গাইল মহাসড়কের কালিয়াকৈরের সুত্রাপুরে প্রাইভেট কার ও বাসের সংঘর্ষে তিন বন্ধু মারা গেছেন। রোববার (১০ নভেম্বর) সকাল ৯টায় নিহতের স্বজনদের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়।
এর আগে, শনিবার (৯ নভেম্বর) দিবাগত রাত সাড়ে ৩টায় কালিয়াকৈরের সুত্রাপুর এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত তিনজন হলেন, মুসলেম উদ্দিন, নাসির উদ্দিন ও জুয়েল মিয়া।
নিহতের স্বজন ও পুলিশ জানায়, টাঙ্গাইলের সখিপুর উপজেলার আন্ধির এলাকার মো. মামুন কুয়েত যাওয়ার জন্য সন্ধ্যায় একটি প্রাইভেটকারে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেন। এ সময় তার সঙ্গে স্থানীয় মসজিদের ইমামসহ তিন বন্ধু ছিলেন। মামুনকে এয়ারপোর্টে নামিয়ে দিয়ে সখিপুরের উদ্দেশে ফেরার পথে রাত সাড়ে তিনটার দিকে কালিয়াকৈরের সুত্রাপুরে দুর্ঘটনায় পড়েন। প্রাইভেটকারটি মহাসড়কে উঠতে গেলে বিপরীত দিক থেকে আসা আল বারাকা পরিবহনের একটি বাস ধাক্কা দিলে ঘটনাস্থলেই মারা যান মুসলেম উদ্দিন, নাসির উদ্দিন ও জুয়েল মিয়া। গুরুতর আহত আজিজুল হককে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ জানায়, ঘটনার পর স্থানীয়রা ঘাতক বাসটি আটক করতে পারলেও গাড়ির চালক ও সহকারীরা পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে হাইওয়ে পুলিশ মরদেহ তিনটি উদ্ধার করে নাওজোর হাইওয়ে থানায় নিয়ে আসেন। স্বজনরা আসলে তাদের আবদনের প্রেক্ষিতে সকাল ৯টায় বিনা ময়নাতদন্তে তাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এই ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন আছে বলেও জানায় পুলিশ।
আরটিভি/এফআই/এআর
অবশেষে জানা গেল শিশু মুনতাহা হত্যার কারণ
শিক্ষকতা থেকে অব্যাহতি ও চুরির অপবাদ দেওয়ার ক্ষোভ থেকে সিলেটের কানাইঘাটের ৬ বছরের শিশু মুনতাহাকে হত্যা করেছে তার গৃহশিক্ষিকা শামীমা বেগম মার্জিয়া।
রোববার (১০ নভেম্বর) নিখোঁজের ৭ দিন পর শিশু মুনতাহার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
জানা গেছে, গত ৩ নভেম্বর সকালে মুনতাহাকে নিয়ে স্থানীয় একটি ওয়াজ মাহফিল থেকে বাড়ি ফেরেন তার বাবা। পরে শিশুটি প্রতিদিনের মতো আশপাশের বাড়িতে শিশুদের সঙ্গে খেলাধুলা করতে যায়। বিকেল ৩টার পরও বাড়ি না ফেরায় পরিবার থেকে মুনতাহাকে খোঁজাখুঁজি শুরু হয়। তারপর তাকে আর কোথাও পাওয়া যায়নি। ঘটনার দিনই মুনতাহাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে বাড়ির পাশের ডোবায় পুতে রাখেন খুনিরা। সন্দেহ থেকে শনিবার স্থানীয় সাংবাদিকরা ঘটনাস্থলে গেলে গৃহশিক্ষক মার্জিয়ার আচরণ সন্দেহজনক মনে হয়।
পরে রাতে পুলিশ তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে যায়। এরপর পুলিশ মুনতাহার স্বজনদের বলেন মার্জিয়ার বাড়ির আশপাশে মাটি খোঁড়া আছে কি না খোঁজ নিতে। স্থানীয়রা রোববার রাতভর তার বাড়ির আশেপাশে কোথাও মাটিখোঁড়া কোনো জায়গা আছে কি না খুঁজতে থাকেন। ফজরের আজানের আগ মুহূর্তে মার্জিয়ার মা আলিফজান বিবিকে হঠাৎ অন্ধাকারের মধ্যে রাস্তা পার হতে দেখে আটকানোর চেষ্টা করেন। এ সময় তিনি দৌড়ে পালানোর চেষ্ঠা করলে স্থানীয়রা তাকে আটক করেন। পরে কাদামাটি মাখা মুনতাহার মরদেহ দেখতে পান। এরপর শিশু মুনতাহার গৃহশিক্ষিকা শামীমা বেগম মার্জিয়া, শিক্ষিকার মা ও তার নানি কুতুবজান বিবিকে আটক করে পুলিশ।
মারজিয়ার স্বীকারোক্তির বরাত দিয়ে সিলেটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্) মো রফিকুল ইসলাম জানান, গত ৩ নভেম্বর রাতেই মুনতাহাকে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যার পর ডোবায় ফেলে রাখা হয়। মারজিয়াকে শিক্ষকতা থেকে অব্যাহতি দেওয়ায় ক্ষোভ ও তার ওপর চুরির অপবাদ দেওয়ার ক্ষোভ থেকে এই হত্যাকাণ্ড ঘটতে পারে। তবে এ ঘটনায় আর কোনো কারণ আছে কিনা তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
তিনি আরও জানান, মুনতাহা হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে আরও তিনজনকে আটক করা হয়েছে। তারা হলেন- নিজাম উদ্দিন, ইসলাম উদ্দিন ও নাজমা বেগম। হত্যাকাণ্ডে আরও কেউ জড়িত রয়েছে কি না তা উদঘাটন করতে আটকদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
আরটিভি/এসএপি/এআর
ওবায়দুল কাদের অবস্থান করছেন সন্দেহে বাড়ি তল্লাশি, অতঃপর...
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের অবস্থান করছেন এমন সন্দেহে চট্টগ্রাম নগরের হালিশহরের একটি বাড়িতে অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। পরে ওবায়দুল কাদেরকে না পেয়ে তার স্ত্রীর বড় ভাই নুরুল হুদা বাবুকে (৭০) থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ।
শনিবার রাতে হালিশহর থানা এলাকার আগ্রাবাদ অ্যাক্সেস রোডের এ আর টাওয়ারে এ অভিযান চালায় পুলিশ।
ওই সময় নুরুল হুদাকে থানায় নিয়ে যাওয়া হলেও রোববার (১০ নভেম্বর) সকালে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কোতোয়ালি থানার ওসি ফজলুল কাদের।
তিনি বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ওবায়দুল কাদেরের স্ত্রীর বড় ভাই নুরুল হুদার ফ্ল্যাটে অভিযান চালানো হয়। পরে জিজ্ঞাসাবাদের জন্যই নুরুল হুদাকে থানায় আনা হয়েছিল। ওবায়দুল কাদের-সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। পরে কোনো মামলা না থাকায় তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে পালিয়ে যাওয়ার পর থেকে লাপাত্তা হয়ে যান ওবায়দুল কাদের। তাকে গ্রেপ্তারে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দেশের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালালেও গ্রেপ্তার করা যায়নি তাকে। এ ছাড়া শেখ হাসিনার পতনের পর আত্মগোপনে চলে যান আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের সকল নেতা। গাঢাকা দিয়েছেন মাঝারি ও তৃণমূল পর্যায়ের অনেক প্রভাবশালী নেতাও। মামলা ও গ্রেপ্তারের ভয়ে প্রকাশ্যে আসছেন না দলটির নেতাকর্মীরা। এর মধ্যে দলীয় বিভিন্ন পদে থাকা অনেককে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
আরটিভি/এমকে-টি
ডিপ ফ্রিজ খুলে হাত-পা বাঁধা মায়ের মরদেহ দেখলেন ছেলে
বগুড়ার ধুপচাঁচিয়ায় বাসায় ঢুকে উম্মে সালমা (৪৭) নামে এক গৃহবধূকে হত্যার পর ডিপ ফ্রিজে রেখেছিলেন দুর্বৃত্তরা। পরে নিহতের স্বজনরা খোঁজাখুঁজির পর ডিপ ফ্রিজ থেকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেন।
রোববার (১০ নভেম্বর) সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টার মধ্যে ‘আজিজয়া মঞ্জিল’ নামে ওই বাড়িতে নৃশংস ওই ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ সাড়ে ৩টার দিকে লাশ উদ্ধার করে সুরতহাল করার জন্য প্রথমে স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়। পরে ময়নাতদন্তের জন্য বগুড়ায় শহীদ জিয়াউর রহমান হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
নিহত উম্মে সালমা (৪৭) দুপচাঁচিয়া ডিএস ফাজিল মাদরাসার উপাধ্যক্ষ আজিজার রহমানের স্ত্রী। মাদরাসা শিক্ষক আজিজার রহমান দুপচাঁচিয়া উপজেলা মসজিদের খতিব এবং ইমাম-মুয়াজ্জিন সমিতির সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন। এছাড়া তিনি ‘আজিজিয়া হজ কাফেলা’ নামে একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানেরও কর্ণধার।
হত্যাকাণ্ডের পর বাড়িতে গিয়ে ঘরের ভেতরে কাপড়-চোপড় এলোমেলো এবং মেঝেতে একটি কুড়াল পড়ে থাকতে দেখা গেছে। এ ছাড়া ধারালো অস্ত্র দিয়ে আলমারি কাটার চিহ্ন রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে কুড়াল দিয়ে আলমারি কাটার চেষ্টা করা হয়েছে। তবে প্রকাশ্য দিনের বেলায় জনবহুল এলাকায় স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী শিক্ষক ও ধর্মীয় ব্যক্তিত্বের বাড়িতে ডাকাতদের প্রবেশ এবং তার স্ত্রীকে হত্যার পর লাশ ডিপ ফ্রিজে রাখার মত নৃশংস ঘটনায় ওই এলাকায় রীতিমত আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
দুপচাঁচিয়ার হাটসাজাপুর বিদ্যালয়ের শিক্ষক মঈন খান জানান, মাদরাসা শিক্ষক আজিজার রহমানের ৩ সন্তান। বড় ছেলে এবং মেয়ে ঢাকায় থাকেন। ছোট ছেলে ২৪ বছর বয়সী সাদ বিন আজিজার রহমানই শুধু বাবা-মার সঙ্গে দুপচাঁচিয়ায় বসবাস করেন। সাদ ডিএস ফাজিল মাদরাসার কামিল শ্রেণিতে অধ্যয়নরত।
স্কুলশিক্ষক মঈন খান আরও জানান, দুপচাঁচিয়া উপজেলা সদরের সিও অফিস বাসস্ট্যান্ড থেকে ১০০ মিটার পশ্চিমে বগুড়া-নওগাঁ মহাসড়ক-সংলগ্ন ৪ তলা বাড়ি ‘আজিজিয়া মঞ্জিল’ এর তৃতীয় তলায় সপরিবারে বসবাস করেন আজিজার।
স্থানীয় সাংবাদিক গোলাম ফারুক জানান, মাদরাসা শিক্ষক আজিজার রহমান এবং ছোট ছেলে সাদ বিন আজিজার প্রতিদিনকার মতো রোববার সকাল ৯টার মধ্যে বাড়ি থেকে বেড়িয়ে যান।
মাদরাসা শিক্ষক আজিজার রহমান সাংবাদিকদের জানান, মাদরাসায় পৌঁছার পর সকাল আনুমানিক ১০টার দিকে তিনি তার স্ত্রীর সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলেছেন। তার ছোট ছেলে সাদ বিন আজিজার জানান, তিনি দুপুর ২টার পর বাড়িতে গিয়ে প্রধান ফটক তালাবদ্ধ দেখেন। পরে বিকল্প চাবি দিয়ে বাড়ির ভেতরে ঢোকার পর ঘরের সবকিছু এলোমেলো দেখতে পান। ডিপ ফ্রিজের দিকে তাকিয়ে সেটিকে ভালোভাবে লাগানো হয়নি বলে মনে হয়। এরপর সেটি খোলার পর তার ভেতরে মায়ের হাত বাঁধা লাশ দেখতে পান।
বিকল্প চাবি দিয়ে প্রধান ফটকের তালা খোলা প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে সাদ বিন আজিজার সাংবাদিকদের বলেন, মা অনেক সময় বাইরে গেলে তালা দিয়ে যান। তবে তার ফিরে আসা পর্যন্ত যাতে অপেক্ষা করতে না হয় সেজন্য একটি করে বিকল্প চাবি তাদের দেওয়া হয়। সেই বিকল্প চাবি দিয়েই আমি তালা খুলেছি।
নিহত উম্মে সালমার স্বামী আজিজার রহমানের ধারণা, সকাল ১০টার পর থেকে দুপুর ১টার মধ্যেই ওই হত্যাকাণ্ডটি ঘটানো হয়েছে। ডাকাতরা কোনো টাকা-পয়সা মা মালামাল লুট করেছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, স্টিলের আলমারি কুড়াল দিয়ে কাটার চেষ্টা করা হয়েছে। তবে সেটা পারেনি। তাই এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে টাকা-পয়সা বা স্বর্ণালংকার নিতে পারেনি।
মাদরাসা শিক্ষক আজিজার রহমানের ৪ তলা বাড়ির প্রথম তলার বাসিন্দা মাসকুরুর রহমান এবং সাইদুল হক জানান, ঘটনার সময় তারা বাড়িতে ছিলেন না। অন্য প্রতিবেশীরা বলছেন তারা কোনো চিৎকার বা শব্দ শোনেননি।
দুপচাঁচিয়া নাগরিক কমিটির সভাপতি আব্দুল বাছেদ জানান, দিনে-দুপুরে বাড়িতে ঢুকে এভাবে একজন পর্দানশীন নারীকে হত্যা এবং হত্যার পর তার লাশ ডিপ ফ্রিজে রাখা ঘটনায় আমরা রীতিমত শঙ্কিত। আমরা এই ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।
পুলিশের দুপচাঁচিয়া ও আদমদীঘি সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার নাজরান রউফ জানান, ডিপ ফ্রিজের মধ্যে উম্মে সালমার লাশ হাত ও পা বাঁধা অবস্থায় ছিল। তবে গলায় কোনো আঘাতের চিহ্ন দেখা যায়নি। ময়নাতদন্তের জন্য আমরা লাশটি বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছি।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ধারণা করা হচ্ছে দুপুর ১টার দিকে ঘটনাটি ঘটানো হয়েছে। তবে বাড়ি থেকে টাকা-পয়সা বা স্বর্ণালংকার খোয়া যায়নি।
আরটিভি/এফআই/এসএ