হবিগঞ্জে দাঁড়িয়ে থাকা লরির পেছনে ট্রাকের ধাক্কা, নিহত ১
হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলায় রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা একটি লরিকে পেছন থেকে ধাক্কা দিয়েছে একটি ট্রাক। এতে ট্রাক চালকের সহকারী নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) রাত সাড়ে ১১টায় নবীগঞ্জ উপজেলার পানিউমদা বাজারে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত হেলপারের পরিচয় এখনও জানা যায়নি।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শেরপুর হাইওয়ে থানার ওসি আবু তাহের দেওয়ান।
তিনি বলেন, পানিউমদা বাজার এলাকায় ছয় লেনের জন্য সেতুর কাজ চলছে। রাতে সাড়ে ১১টার দিকে সেতুর কাছে মহাসড়কের পাশে একটি লরি দাঁড়িয়ে ছিল। এ সময় একটি ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে লরির পেছনে সজোরে ধাক্কা দেয়। এতে ট্রাকটি দুমড়েমুচড়ে গিয়ে ট্রাকে থাকা হেলপার ঘটনাস্থলেই নিহত হন।
আরটিভি/এমকে-টি
মন্তব্য করুন
পূজামণ্ডপে ইসলামি সংগীত: ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তারের আশ্বাস ডিসির
চট্টগ্রাম নগরে দুর্গাপূজার একটি মণ্ডপে অনুষ্ঠানের মঞ্চে ইসলামি সংগীত পরিবেশন করেছেন একটি সাংস্কৃতিক সংগঠনের শিল্পীরা। বৃহস্পতিবারের (১০ অক্টোবর) এ ঘটনার কয়েকটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তাৎক্ষণিকভাবে ব্যাপক বিতর্কের জন্ম দেয় তা। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে রাতেই ওই পূজামণ্ডপে গিয়ে এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তারের আশ্বাস দিয়েছেন চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম।
বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) সন্ধ্যা সাতটার দিকে নগরের রহমতগঞ্জের জে এম সেন হলে ঘটেছে ঘটনাটি। কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, চট্টগ্রাম কালচারাল একাডেমি নামের একটি সাংস্কৃতিক সংগঠনের ছয় সদস্য অনুষ্ঠানে দুটি গান পরিবেশন করেন। তার মধ্যে একটি গান ছিল ‘শুধু মুসলমানের লাগি আসেনিকো ইসলাম’।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এ ঘটনার প্রায় ৩ মিনিটের একটি ভিডিওটিতে দেখা যায়, মণ্ডপের অনুষ্ঠানের মঞ্চে গান পরিবেশন করছেন ছয়জন তরুণ। এ সময় একটি ইসলামি সংগীত পরিবেশন করেন তারা। আশপাশে উপস্থিত কয়েকজনকে সেই ঘটনা মুঠোফোনে ধারণ করতে দেখা যায়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম কালচারাল একাডেমির সভাপতি সেলিম জামান বলেন, পূজা উদ্যাপন পরিষদের যুগ্ম সম্পাদক সজল দত্তের আমন্ত্রণেই সেখানে সংগীত পরিবেশন করতে গেছেন তারা। সেখানে দুটো গান পরিবেশন করা হয়েছে, দুটোই সম্প্রীতির সংগীত। কেউ কেউ ভিডিও এডিট করে অপপ্রচার চালাচ্ছে।
তবে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ওই অনুষ্ঠানের ভিডিও যাচাই করে ফ্যাক্ট চেকিং প্রতিষ্ঠান রিউমার স্ক্যানার তাদের ফেসবুক পেজে জানিয়েছে, পূজামণ্ডপে গানের ভিডিওটি আসল, এডিটেড নয়।
পরে চট্টগ্রাম কালচারাল একাডেমির সঙ্গে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কোনো সম্পৃক্ততা আছে কি না, জানতে চাইলে চট্টগ্রাম নগর (উত্তর) ছাত্রশিবিরের সভাপতি ফখরুল ইসলাম বলেন, এটি ছাত্রশিবিরের কোনো অঙ্গসংগঠন নয়। তবে জামায়েতে ইসলামীর একজন নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে গণমাধ্যমকে বলেছেন, চট্টগ্রাম কালচারাল একাডেমি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সমর্থিত একটি সাংস্কৃতিক সংগঠন।
এদিকে পূজা উদ্যাপন পরিষদ সূত্র বলছে, সন্ধ্যায় মঞ্চে নাচের অনুষ্ঠান হচ্ছিল। এ সময় কয়েকজন তরুণ সেখানে উপস্থিত হয়ে দেশাত্মবোধক গান পরিবেশন করবেন বলে মঞ্চে ওঠেন। পরে তারা দুটি গান পরিবেশন করেন। এরপর তারা ‘ধন্যবাদ’ দিয়ে নেমে চলে যান।
ওই ৬ তরুণকে অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল কি না, প্রশ্ন করা হলে চট্টগ্রাম মহানগর পূজা উদ্যাপন পরিষদের অর্থ সম্পাদক সুকান্ত মহাজন বলেন, ওই তরুণেরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে পরিষদের যুগ্ম সম্পাদক সজল দত্তকে বলেছেন, তারা মঞ্চে দেশাত্মবোধক গান পরিবেশন করবেন। পরে তারা উঠে গান শুরু করেন এবং দুটি গান পরিবেশন শেষে তারা চলে যান। এ বিষয়ে জানতে সজল দত্তের সঙ্গে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ঘটনার সময় সেখানে চট্টগ্রামের আদালত ঘোষিত সিটি মেয়র ও নগর বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন এবং বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর চট্টগ্রাম নগরের আমির শাহজাহান চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।
অবশ্য, এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে শাহাদাত হোসেন ফোন ধরেননি। আর জামায়াত নেতা শাহজাহান চৌধুরী বলেছেন, তিনি এদিন কোনো পূজামণ্ডপে যাননি।
পূজামণ্ডপে ইসলামি সংগীত পরিবেশনের ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর রাত সাড়ে ১০টার দিকে ঘটনাস্থলে যান চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম। এ সময় তিনি বলেন, এ ঘটনায় যারাই জড়িত থাকুক না কেন, তাদের ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তার করা হবে। এ বিষয়ে রাতের মধ্যেই মামলা নেওয়ার জন্য পুলিশ কমিশনারকে জানানো হবে।
এদিকে পূজামণ্ডপে ‘ইসলামি গান’ পরিবেশিত হওয়ায় পূজা উদযাপন কমিটির যুগ্ম সম্পাদক সজল দত্তকে বরখাস্তের ঘোষণা দিয়েছেন চট্টগ্রাম মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি লায়ন আশীষ কুমার ভট্টাচার্য। রাতেই নগরের জেএমসেন হলের পূজামণ্ডপের মঞ্চে তাকে বরখাস্তের ঘোষণা দেন তিনি।
আরটিভি/এসএইচএম
পূজামণ্ডপে ইসলামি সংগীত বিতর্কে গ্রেপ্তার ১
চট্টগ্রাম নগরে দুর্গাপূজার একটি মণ্ডপের অনুষ্ঠানে ইসলামি সংগীত পরিবেশনের ঘটনায় একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) রাতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানা যায়। তাৎক্ষণিক ভাবে গ্রেপ্তারের বিষয়ে বিস্তারিত জানায়নি পুলিশ।
একই ঘটনায় পূজা উদযাপন কমিটির যুগ্ম সম্পাদক সজল দত্তকে বরখাস্তের ঘোষণা দিয়েছেন চট্টগ্রাম মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি লায়ন আশীষ কুমার ভট্টাচার্য।
জানা যায়, ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে নগরের রহমতগঞ্জের জে এম সেন হলের পূজামণ্ডপে। পূজা কমিটির অনুমতি নিয়ে চট্টগ্রাম কালচারাল একাডেমি নামের একটি সাংস্কৃতিক সংগঠনের ছয় সদস্য মঞ্চে বাদ্যযন্ত্র ছাড়া দুটি গান পরিবেশন করেন। যা পরে বিতর্কের জন্ম দেয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম কালচারাল একাডেমির সভাপতি সেলিম জামান বলেন, পূজা উদযাপন পরিষদের যুগ্ম সম্পাদক সজল দত্তের আমন্ত্রণেই সেখানে সংগীত পরিবেশন করতে গেছেন তারা। সেখানে দুটো গান পরিবেশন করা হয়েছে, দুটোই সম্প্রীতির সংগীত। কেউ কেউ ভিডিও এডিট করে ভিন্ন গান বাজিয়ে অপপ্রচার চালাচ্ছে।
এদিকে, ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ওই অনুষ্ঠানের ভিডিও যাচাই করে ফ্যাক্ট চেকিং প্রতিষ্ঠান রিউমার স্ক্যানার তাদের ফেসবুক পেজে জানিয়েছে, পূজামণ্ডপে গানের ভিডিওটি আসল, এডিটেড নয়।
কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, ওই দুটি গানের মধ্যে একটি গান ছিল ‘আগে কী সুন্দর দিন কাটাইতাম’ অপরটি হচ্ছে ‘শুধু মুসলমানের লাগি আসেনিকো ইসলাম’। এর কিছুক্ষণের মধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে ভিডিওটি। ছড়িয়ে পড়া তিন মিনিটের একটি ভিডিওটিতে দেখা যায়, মণ্ডপের অনুষ্ঠানের মঞ্চে গান পরিবেশন করছেন ছয়জন তরুণ।
পূজা উদযাপন পরিষদ সূত্র বলছে, সন্ধ্যায় মঞ্চে নাচের অনুষ্ঠান হচ্ছিল। এ সময় কয়েকজন তরুণ সেখানে উপস্থিত হয়ে দেশাত্মবোধক গান পরিবেশন করবেন বলে মঞ্চে ওঠেন। পরে তারা দুটি গান পরিবেশন করেন। এরপর তারা ‘ধন্যবাদ’ দিয়ে নেমে চলে যান।
চট্টগ্রাম মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের অর্থ সম্পাদক সুকান্ত মহাজন বলেন, ওই তরুণেরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে পরিষদের যুগ্ম সম্পাদক সজল দত্তকে বলেছেন, তারা মঞ্চে দেশাত্মবোধক গান পরিবেশন করবেন। পরে তারা উঠে গান শুরু করেন এবং দুটি গান পরিবেশন শেষে তারা চলে যান।
পরে পূজা উদযাপন কমিটির যুগ্ম সম্পাদক সজল দত্তকে বরখাস্তের ঘোষণা দিয়েছেন চট্টগ্রাম মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি লায়ন আশীষ কুমার ভট্টাচার্য। রাতেই নগরের জে এম সেন হলের পূজামণ্ডপের মঞ্চে তাকে বরখাস্তের ঘোষণা দেন তিনি।
এ বিষয়ে জানতে সজল দত্তের সঙ্গে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ঘটনার সময় সেখানে চট্টগ্রামের আদালত ঘোষিত সিটি মেয়র ও নগর বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন এবং বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর চট্টগ্রাম নগরের আমির শাহজাহান চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।
অবশ্য, এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে শাহাদাত হোসেন ফোন ধরেননি। আর জামায়াত নেতা শাহজাহান চৌধুরী বলেছেন, তিনি এদিন কোনো পূজামণ্ডপে যাননি।
পূজামণ্ডপে ইসলামি সংগীত পরিবেশনের ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর রাত সাড়ে ১০টার দিকে ঘটনাস্থলে যান চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম। এ সময় তিনি বলেন, এ ঘটনায় যারাই জড়িত থাকুক না কেন, তাদের ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তার করা হবে। এ বিষয়ে রাতের মধ্যেই মামলা নেওয়ার জন্য পুলিশ কমিশনারকে জানানো হবে।
এ ঘটনায় ছাত্রশিবিরকে জড়ানোর প্রতিবাদ জানিয়েছে সংগঠনটি। একইসঙ্গে এ ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়েছেন ইসলামী ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি জেনারেল জাহিদুল ইসলাম।
বৃহস্পতিবার (১১ অক্টোবর) রাতে নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে এক পোস্টের মাধ্যমে ইসলামী ছাত্রশিবিরের অবস্থান তুলে ধরে এ দাবি জানান তিনি।
ওই পোস্টে জাহিদুল ইসলাম লিখেন, ‘এই ঘটনার সঙ্গে অনেকেই ছাত্রশিবিরকে জড়িয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখছেন। আমি দায় নিয়ে বলছি, এর সঙ্গে ছাত্রশিবিরের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। শিবির কারও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে, এমন কাজ কখনোই সমর্থন করে না। তাই এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।’
তিনি আরও লিখেছেন, ‘ছাত্রশিবিরের পক্ষ থেকে স্পষ্ট দাবি জানাচ্ছি, একটি নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটির মাধ্যমে প্রকৃত সত্য সবার সামনে উঠে আসুক। কেউ দোষী হলে তাকে অবশ্যই আইনের আওতায় নিয়ে এসে শাস্তি দেওয়া হোক।’
সত্যতা যাচাই না করেই বিভিন্ন সময় শিবিরকে জড়িয়ে মিথ্যা প্রচারণা চালানো হয় জানিয়ে ফেসবুক পোস্টে তিনি লিখেন, সত্যতা যাচাই না করেই যারা শিবিরকে জড়িয়ে মিথ্যা প্রচারণা চালায়, তারা একটা সময় গিয়ে নিজেদের বিবেকের কাছেই প্রশ্নবিদ্ধ হবেন। এ ধরনের কাজ থেকে ভবিষ্যতে বিরত থাকার অনুরোধ করছি।
আরটিভি/এএইচ
পূজামণ্ডপে গীতার শ্লোক পাঠ করে ভাইরাল জামায়াতের কেন্দ্রীয় নেতা
শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষে একটি পূজামণ্ডপে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পবিত্র গ্রন্থ গীতা থেকে শ্লোক পাঠ করে বেশ আলোচনার জন্ম দিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নেতা অধ্যাপক মতিয়ার রহমান।
বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) রাত ১০টার দিকে ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলার বাজেবামনদাহ হরিতলা পালপাড়া পূজামণ্ডপে মহাসপ্তমীর অনুষ্ঠানে ঘটে এ ঘটনা। জামায়াত নেতার সেই গীতা পাঠের ৫ মিনিটের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে ইতোমধ্যে। অধ্যাপক মতিয়ার রহমান বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে সূরার সদস্য।
ভাইরাল ভিডিওটিতে দেখা যায়, বক্তব্যের একপর্যায়ে উপস্থিত সবাইকে গীতা থেকে শ্লোক পাঠ করে শোনান অধ্যাপক মতিয়ার রহমান। এ সময় সনাতন ধর্মাবলম্বী নারীরা উলুধ্বনি দেন ও শঙ্খ বাজান। শ্লোক পাঠ শেষে জামায়াতে ইসলামীর এ নেতা আশ্বাস দেন, আগামীতে নির্বাচিত হলে হিন্দু সম্প্রদায়ের উৎসব পালনে সর্বাত্মক সহযোগিতা করবেন তিনি। সেইসঙ্গে বলেন, আমি একা না আমার সাথে বিএনপির নেতারাও আছেন।
বক্তব্যের শুরুতে অধ্যাপক মতিয়ার রহমান বলেন, এই কোটচাঁদপুরের আলো-বাতাস, মাটি ও মায়া-মমতাই বেড়ে উঠেছি আমি। ইসলামি আদর্শের একজন ব্যক্তি হলেও আমার ভেতর একজন ভালো সনাতনী হিন্দু ব্রাহ্মণ বাস করেন। আমার ভেতরে বাস করেন একজন ভালো খ্রিষ্টান এবং একজন ভালো মুসলিমও।
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের উদ্দেশে এরপর তিনি বলেন, বিশ্বাস করুন, হিন্দু ধর্মের আবির্ভাব হয়েছে মুসলমানদের কোরআন পাওয়ারও সাড়ে ৪ হাজার বছর পূর্বে। এই জাতিটা বাস করতো ভারতের কালীকোটের মালমল সিন্দুর হ্রদের অববাহিকায়। আড়াই হাজার বছর পর্যন্ত ওরা সেখানে বাস করেছে।
বৃহস্পতিবার দুর্গাপূজার মহাসপ্তমীর রাত ১০টার দিকে বাজেবামনদাহ হরিতলা পালপাড়া পূজামণ্ডপ পরিদর্শনে যান কোটচাঁদপুর উপজেলা জামায়াতের নেতাকর্মীরা। অন্যান্যদের বক্তব্যের পর সেখানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক মতিয়ার রহমান। বক্তব্যে ইসলাম ও সনাতন ধর্ম সম্পর্কে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন তিনি।
এ ব্যাপারে বাজেবামনদাহ হরিতলা পালপাড়া পূজামণ্ডপের আহ্বায়ক কমিটির সভাপতি গুরুদাস বিশ্বাস জানান, বৃহস্পতিবার রাত ১০টার পর জামায়াতের নেতা মতিয়ার রহমানসহ আরও কয়েকজন মণ্ডপে এসেছিলেন। বক্তব্যে তিনি আমাদের ধর্ম সম্পর্কে অনেক জ্ঞান দেন। পরে গীতা থেকে একটি শ্লোকও পাঠ করেন।
আরটিভি/এসএইচএম
ভিমরুলের কামড়ে বাবা-মেয়ের পর চলে গেল শিশু ছেলেও
ময়মনসিংহের ধোবাউড়ায় ভিমরুলের কামড়ে বাবা আবুল কাশেম ও মেয়ে লাবিবা আক্তারের মৃত্যুর পর ছেলে সিফাত উল্লাহও (৬) মারা গেছে।
শনিবার (১২ অক্টোবর) রাত ১০টার দিকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এর আগে একই দিন দুপুর ১টায় আবুল কাশেম ও বিকেল ৩টায় তার মেয়ে লাবিবা (৮) মারা যায়। মর্মান্তিক ঘটনাটি একই দিন বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ঘটে।
নিহতরা হলেন- উপজেলার পোড়াকান্দুলিয়া ইউনিয়নের দুধনই বাজার মসজিদের ইমাম মো. আবুল কাশেম (৫০), তার আট বছর বয়সী মেয়ে লাবিবা আক্তার ও ছেলে সিফাতুল্লাহ (৬)। আবুল কাশেম উপজেলার দুধনই গ্রামের বাসিন্দা। তিনি দুধনই বাজার জামে মসজিদে ইমামতি করতেন, এরমধ্যে লাবিবা ইদারাতুল কুরআন মাদরাসায় প্রথম শ্রেণিতে পড়ত।
জানা গেছে, শনিবার সকাল ১০টায় দুধনই বাজার থেকে লাকড়ি আনার জন্য মেয়ে লাবিবা এবং ছেলে সিফাতুল্লাহকে নিয়ে নৌকা দিয়ে বাজারে যাচ্ছিলেন আবুল কাশেম। তবে বাড়ির পাশেই একটি বাঁশঝাড়ে তাদের নৌকা আটকে যায়। ওই সময় হঠাৎ বাঁশঝাড় থেকে ভিমরুল বেরিয়ে এসে আবুল কাশেম ও তার দুই সন্তানকে কামড়াতে শুরু করে। সে সময় আবুল কাশেম প্রথমে সন্তানদের রক্ষা করার চেষ্টা করলেও পরে আর সম্ভব হয়নি।
পরবর্তীতে স্থানীয়রা তাদের তিনজনকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ধোবাউড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় বাবা আবুল কাশেম এবং ছেলে সিফাতুল্লাহকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। একপর্যায়ে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুপুর ১টার দিকে আবুল কাশেম মারা যায়। এরপর বিকেল ৩টায় ধোবাউড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মারা যায় মেয়ে লাবিবা। সবশেষ রাত ১০টার দিকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সিফাতুল্লাহরও মৃত্যু হয়।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আজিজুল হক বলেন, এলাকায় একদিকে চলছে বন্যার মতো ভয়াবহ দুর্যোগ। অন্যদিকে মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় একই পরিবারের তিনজনের মৃত্যু। নিহতের পরিবার এবং স্বজনের আহাজারিতে আকাশ-বাতাস ভারি হয়ে উঠেছে।
ধোবাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আল মামুন সরকার সিফাত উল্লাহর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আরটিভি/এফআই
ভিমরুলের কামড়ে মৃত্যু: পাশাপাশি কবরে শায়িত বাবা ও ছেলে-মেয়ে
পাশাপাশি কবরে শায়িত হয়েছে ময়মনসিংহের ধোবাউড়ায় ভিমরুলের কামড়ে মারা যাওয়া বাবা ও দুই শিশু সন্তান। এ ঘটনায় পরিবার ও স্বজনদের পাশাপাশি শোকে কাতর স্থানীয়রাও।
রোববার (১৩ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৯টায় উপজেলার পোড়াকান্দলিয়া ইউনিয়নের দুধনই গ্রামে একই সঙ্গে তিনজনের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
এতে বিপুল সংখ্যক ধর্মপ্রাণ মানুষ অংশগ্রহণ করে। এ সময় এক হৃদয়বিদারক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। পরে পাশাপাশি তিনটি কবরে মৃত বাবা, ছেলে ও মেয়েকে দাফন করা হয়।
স্থানীয় পোড়াকান্দলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. মঞ্জরুল হক বলেন, ‘আমাদের এলাকায় এমন হৃদয়বিদারক ঘটনা আর দেখিনি। একই সঙ্গে এক পরিবারের তিনজনের একসঙ্গে জানাজা আগে কখনও হয়নি। ঘটনাটি অত্যন্ত মর্মান্তিক।’
এ সময় তিনি আরও বলেন, ‘অনেক ভালো মানুষ ছিল মাওলানা আবুল কাশেম (৫৫)। অভাব অনটনের মধ্যেও পাঁচ সন্তান নিয়ে ভালোই কাটছিল তার সংসার। কিন্তু ভিমরুলের কামড়ে দুই শিশু সন্তান নিয়ে তিনি পাড়ি দিয়েছেন পরপারে। বতর্মানে তার সংসারে স্ত্রী ছাড়াও আরও দুটি ছেলে ও একটি মেয়ে সন্তান রয়েছে। এর মধ্যে সবার বড় ছেলের নাম হেদায়েতুল্লাহ। সে কোরআনে হাফেজ হয়ে মাদরাসায় শিক্ষকতা করে সংসারে বাবার সঙ্গে হাল ধরেছিল। তার ছোট ভাই এহসানুল্লাহ হাফেজি শেষ করে বতর্মানে মাওলানা লাইনে লেখাপড়া করছে।’
এ দিকে বোনদের মধ্যে বড়জনের ইতোমধ্যে বিয়ে হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন মৃত আবুল কাশেমের ভাতিজা মো. মোকসেদুল ইসলাম।
তিনি বলেন, ‘ঘটনার কিছুক্ষণ আগে আমার চাচা সেনেটারি দোকানে বসেছিল। কথা ছিল বাড়ি যাওয়ার আগে আমার ঘরে খেয়ে যাবে। তখন চাচা একটি ডিঙি নৌকায় তার দুই শিশু সন্তানকে নিয়ে বাড়ির পাশে একটু দূর থেকে রান্নার লাকড়ি আনতে যায়। সেখানে বাঁশ ঝাড়ে থাকা একটি ভিমরুলের চাকে হঠাৎ আঘাত লাগে নৌকার লগিতে। এতে ভিমরুল আক্রমণ করলে মারাত্মকভাবে আহত হয় তারা। এ সময় আমার চাচা তার শিশু সন্তানদের বাঁচাতে নিজের পিঠ পেতে দিয়ে ওদের বুকের নিচে ঝাপটে রেখে ছিলেন। কিন্তু কোনকিছুতেই শেষ রক্ষা হয়নি। পরে আহত অবস্থায় তাদের হাসপাতালে নেওয়া হলে একে একে সবাই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে।’
এ দিকে এ ঘটনার খবরে নিহতদের পরিবারের সঙ্গে স্বাক্ষাৎ করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নিশাত শারমিন।
এ সময় তিনি মরদেহ দাফন কাফনের জন্য বিশ হাজার এবং স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মঞ্জুরুল হক দশ হাজার টাকা আর্থিক সহযোগিতা প্রদান করেন।
এর আগে শনিবার (১২ অক্টোবর) দিনে ও রাতে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় মাওলানা আবুল কাশেম (৫০), মেয়ে লাবিবা আক্তার (৮) ও ছোট ছেলে সিফাতুল্লাহ (৬)। ধোবাউড়া উপজেলার দুধনই গ্রামের চান্দু মেম্বারের ছেলে মাওলানা আবুল কাশেম দুধনই বাজার জামে মসজিদে ইমামতি করতেন এবং তার মেয়ে লাবিবা ইদারাতুল কোরআন মাদরাসায় প্রথম শ্রেণিতে পড়তেন।
আরটিভি/এমকে
দুই নেতাকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করল বিএনপি
সিলেট মহানগর বিএনপির ২ নেতাকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করেছে দলটি। দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও দলের নীতি, আদর্শ ও সংহতি পরিপন্থী অনৈতিক কার্যকলাপের অভিযোগ থাকায় তাদের বিরুদ্ধে এ ব্যবস্থা নিয়েছে বিএনপি।
সোমবার (১৪ অক্টোবর) সন্ধ্যায় বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে তাদেরকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের আদেশ দেওয়া হয়।
বহিষ্কৃত দুই নেতা হলেন, সিলেট মহানগরীর ২৫নং ওয়ার্ড কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. সোলেমান হোসেন সুমন এবং ২৬নং ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো.আবদুল মান্নান।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ এবং দলের নীতি, আদর্শ ও সংহতি পরিপন্থী অনৈতিক কার্যকলাপের জন্য বিএনপির প্রাথমিক সদস্যসহ সকল পর্যায়ের পদ থেকে তাদের স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ১৪ অক্টোবর রাতে সিলেটের সিলেট-ঢাকা মহাসড়কে ভারতীয় চোরাই চিনির ট্রাক ছিনতাই চেষ্টা করে বহিষ্কৃত দুই নেতাসহ ৬ জন। এ সময় স্থানীয়রা তাদেরকে আটক করে পুলিশে দেয়।
আরটিভি নিউজ
সারজিস ও হাসনাতকে রংপুরে অবাঞ্ছিত ঘোষণা
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সারজিস আলম ও হাসনাত আব্দুল্লাহকে রংপুরে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছেন জাতীয় পার্টির নেতা ও সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা।
সোমবার (১৪ অক্টোবর) রংপুর সেন্ট্রাল রোড জাতীয় পার্টির কার্যালয়ে জেলা ও মহানগরের যৌথ সভায় তিনি এ ঘোষণা দেন।
জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা বলেন, ‘জাতীয় পার্টিকে রাজনৈতিক সংলাপে না ডাকতে ফেসবুকে সারজিস আলম ও হাসনাত আব্দুল্লাহ যে ঘোষণা দিয়েছে- তারা রংপুরে আসতে পারবে না। যার যা কিছু আছে তাই নিয়ে এই রংপুরের পার্টি অফিসে বসে থাকবেন। আমরা দেখিয়ে দিতে চাই, রংপুরে জাতীয় পার্টির শক্তি কতটুকু। যদি এই আন্দোলনকে আমরা জনস্রোত করতে না পারি তাহলে জাতীয় পার্টি থেকে নাকে খত দিয়ে চলে যাবো।’
ফেসবুকে সারজিস ও হাসনাতের লেখার ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘রংপুরের মাটিতে সারজিস আলম এবং হাসনাত আব্দুল্লাহর কোনও প্রোগ্রাম হতে দেওয়া হবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই বক্তব্যের মাধ্যমে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, ডিআইজি, পুলিশ কমিশনার- আপনাদেরকে জানিয়ে দিতে চাই, জাতীয় পার্টিকে বাদ দিয়ে কোনও আলোচনা নয়। রংপুরে কোনও রাজনৈতিক সংলাপে যদি জাতীয় পার্টিকে ডাকা না হয়, সম্মান দেওয়া না হয়- তাহলে জাতীয় পার্টি নিজেই অধিকার আদায় করে নেবে। এর জন্য আপনারা প্রস্তুত থাকবেন।’
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে নির্বাচনসহ বিভিন্ন ইস্যুতে সংলাপ করছেন। এর মধ্যে জাতীয় পার্টির সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার সংলাপ প্রসঙ্গে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম ও হাসনাত আব্দুল্লাহ।
গত ৭ অক্টোবর দিবাগত মধ্যরাতে নিজ নিজ ফেসবুক পেজে এই বিষয়ে পোস্ট দিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তারা।
পোস্টে সারজিস আলম লিখেছিলেন, ‘জাতীয় পার্টির মতো মেরুদণ্ডহীন ফ্যাসিস্টের দালালদের প্রধান উপদেষ্টা কিভাবে আলোচনায় ডাকে?’
হাসনাত লিখেছিলেন, ‘স্বৈরাচারের দোসর জাতীয় পার্টিকে সংলাপে আমন্ত্রণ জানানো হলে, আমরা সেই আত্মঘাতী সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ ও কঠোর বিরোধিতা করব।’
আরটিভি/এসএপি