একই কবরস্থানে দাফন করার অনুরোধ করে যুগলের আত্মহত্যা, অতঃপর...
কুমিল্লায় পছন্দের তরুণকে বিয়ে করতে না পারার অভিমানে একে-অপরকে ভিডিও কলে রেখে আত্মহত্যা করেছেন সদ্য বিবাহিত এক কিশোরী (১৬) ও তার বন্ধু (২২)।এ সময় মরদেহের পাশ থেকে একটি চিরকুটও উদ্ধার করে পুলিশ। চিরকুটে তাদের একই কবরস্থানে দাফন করার অনুরোধ করে গেছেন তারা।
রোববার (২৭ অক্টোবর) ঘটনাটি জানাজানি হয়। এর আগে, শনিবার (২৬ অক্টোবর) সন্ধ্যায় কুমিল্লার লালমাই উপজেলার বেতুয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ওইদিন রাত ১১টায় পুলিশ স্বামীর বাড়ি থেকে নববধুর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে।
স্বজনেরা জানিয়েছেন, বাল্যবিবাহের শিকার ওই কিশোরীর স্বামীর বাড়ি থেকে শনিবার রাত ১১টার দিকে ঝুলন্ত মরদেহ ও চিরকুট উদ্ধার করে পুলিশ। অন্যদিকে তার প্রবাসী প্রেমিক ওমানে গলায় ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করেন।
মেয়েটির বাবার বাড়ি কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলায়। প্রবাসী তরুণের বাড়ি একই উপজেলার পূর্ব জোড়কানন ইউনিয়নে। মেয়েটি স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী ছিল।
১৪ অক্টোবর লালমাইয়ের এক ব্যক্তির সঙ্গে জোর করে বিয়ে দেয় পরিবার। ঘরোয়াভাবে গোপনে এই বাল্যবিবাহের আয়োজন করা হয়েছিল।
নিহত কিশোরীর মা নুরুন্নাহার জানান, তার মেয়ের সঙ্গে এক প্রবাসী ছেলের সম্পর্ক ছিল। ১৪ অক্টোবর মেয়ের সম্মতিতেই তাদেরই এক আত্মীয়ের সঙ্গে মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন। বিয়ের পর স্বামীর বাড়িতে হাসি-খুশিতেই ছিল। শনিবার রাতে হঠাৎ শুনি উর্মি ও তার প্রেমিক সাফায়েত ভিডিও কলে আত্মহত্যা করেছে।
প্রবাসী সাফায়াতের বাবা আবদুল খালেক বলেন, এক বছর আগে ছেলেকে ওমান পাঠিয়েছিলাম। কিছুদিন আগে ছেলে হঠাৎ বিদেশে কর্মস্থলে অজ্ঞান হয়ে পড়ে। খবর নিয়ে শুনলাম ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে আমার ছেলের সঙ্গে উর্মি নামের এক মেয়ের পরিচয় হয়েছিল। হঠাৎ মেয়েটির বিয়ে হয়ে যাওয়ায় সে অসুস্থ হয়ে গেছে। শনিবার রাতে সেই মেয়ে আমার ছেলের সঙ্গে ভিডিও কলে চিরকুট লিখে ফাঁসিতে ঝুলে আত্মহত্যা করেছে বলে শুনেছি।
তিনি বলেন, আমার ছেলেসহ দুটি জীবনের আলো নিভে গেল। তিনটি পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হলো। এ জন্য মেয়ের বাল্যবিবাহ দায়ী। বাল্যবিবাহের সঙ্গে জড়িত নিকাহ রেজিস্ট্রারসহ সংশ্লিষ্টদের শাস্তি দাবি করছি। আমার ছেলের চিরকুট হাতে পেয়েছি। আইনজীবীর সঙ্গে পরামর্শ করে মামলা করব।
লালমাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহ আলম বলেন, কদিন আগেই মেয়েটির বিয়ে হয়েছে শুনেছি। প্রবাসী প্রেমিককে ভিডিও কলে রেখে ঘরের সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে আত্মহত্যা করেছে। শুনেছি প্রবাসী প্রেমিকও একইভাবে আত্মহত্যা করেছেন। এ ঘটনায় নববধূর ভাই বাদী হয়ে থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা করেছেন।
আরটিভি/এফআই
মন্তব্য করুন