গুলিবিদ্ধ স্বামীর চিকিৎসায় সন্তান বিক্রির বিষয়টি সঠিক নয়
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে আহত হন দিনাজপুরের দিনমজুর আব্দুর রশিদ। অর্থের অভাবে তিন দিনের সন্তানকে তার স্ত্রী রোকেয়া বেগম বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছেন বলে যে খরব প্রকাশিত হয়েছে তা সঠিক নয়। এ বিষয়ে রোকেয়া বেগম বলেছেন, ‘একটু ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। আসলে আমরা সন্তান বিক্রি করিনি। আমাদের অনিশ্চিত জীবনে সন্তানের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করেই সন্তানহীন আত্মীয়ের হাতে কোলের শিশুকে তুলে দিয়েছিলাম। আমি আমার সন্তানকে ফিরে পেয়েছি, কিন্তু ওই আত্মীয়ের জন্যও কষ্ট হচ্ছে।’
মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে শহরের রাজবাড়ী কাটাপাড়ায় আশ্রিত বাড়িতে তিনি এ বিষয়টি জানান।
এর আগে সোমাবার (৯ সেপ্টেম্বর) রাতে প্রশাসনের সহযোগিতায় বিক্রি করা শিশুটিকে কুড়িগ্রাম থেকে নিয়ে এসে বাবা-মায়ের কোলে তুলে দেন ছাত্ররা।
শিশুটির মা রোকেয়া বেগম বলেন, ‘আমি সন্তান বিক্রি করিনি। আমাদের অনিশ্চিত জীবনে সন্তানের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করেই সন্তানহীন এক আত্মীয়ের হাতে তুলে দিয়েছিলাম কোলের শিশুকে। তারা মানবিক কারণে ২৫ হাজার টাকা দিয়েছিল আমার স্বামীর চিকিৎসার জন্য। কিন্তু ভুল বোঝাবুঝিতে ছড়িয়ে পড়ে আমরা সন্তান বিক্রি করেছি। এতে প্রশাসন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সবাই চাপের মধ্যে পড়ে যায়। তবে ছাত্ররা যদি আগে জানতো তাহলে চিকিৎসার কোনো সমস্যা হতো না।’
তিনি বলেন, ‘আমি আমার সন্তানকে ফিরে পেয়েছি কিন্তু ওই আত্মীয়ের জন্যও কষ্ট হচ্ছে। কারণ তারা এক মাস ধরে আমার সন্তানকে পরম যত্নে লালন-পালন করেছেন। আমার সন্তানকে আমার কাছে ফিরিয়ে দিতে তারা অনেক কষ্ট পেয়েছেন।’
দিনাজপুর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফরিদ হোসেন বলেন, প্রশাসনিক সহযোগিতায় শিশুটিকে কুড়িগ্রাম থেকে এনে বাবা-মায়ের কোলে তুলে দিয়েছেন ছাত্ররা। জেলা প্রশাসক, সদর ইউএনও এবং এসিল্যান্ড বিষয়টি তদারকি করছেন। পরিবারটিকে সার্বিক সহযোগিতা করা হবে।
প্রসঙ্গ, গত ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে দিনাজপুর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে চেকআপের জন্য নিয়ে যাওয়ার সময় গুলিবিদ্ধ হন দিনমজুর আব্দুর রশিদ।
আরটিভি/ এবি
মন্তব্য করুন