পিকআপের ধাক্কায় প্রাণ গেল ২ জনের
মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ে পদ্মা সেতুর মাওয়া টোল প্লাজার অদূরে অজ্ঞাত গাড়ির ধাক্কায় লটকনবাহী পিকআপভ্যানের চালক ও সহকারীর মৃত্যু হয়েছে।
বুধবার (১ আগস্ট) দিনগত রাত আড়াইটার দিকে বঙ্গবন্ধু এক্সপ্রেসওয়েতে খানবাড়ি চৌরাস্তায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে মরদেহ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস।
নিহতরা হলেন- পিকআপভ্যানচালক পলাশ চন্দ্র দাস (২৪) ও তার সহকারী জয় চন্দ্র দাস (২৫)।
শ্রীনগর ফায়ার স্টেশনের কর্মকর্তা দেওয়ান আজাদ হোসেন এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
হাসাড়া হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাঞ্চন কুমার সিংহ গণমাধ্যমকে বলেন, মরদেহ হাইওয়ে থানা হেফাজতে রয়েছে। অভিযুক্ত যান শনাক্তের চেষ্টা করছি। দুর্ঘটনাকবলিত পিকআপটি সড়ক থেকে সরিয়ে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে।
মন্তব্য করুন
শেখ হাসিনা জোরজবরদস্তি করে আমাদের গণভবনে নিয়েছিলেন: আবু সাঈদের ভাই
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) শিক্ষার্থী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক শহীদ আবু সাঈদের পরিবারকে জোরজবরদস্তি করে গণভবনে নেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ করেছেন তার বড় ভাই রমজান আলী।
শনিবার (১০ আগস্ট) সকালে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূস রংপুরে আবু সাঈদের বাড়িতে আসলে নিজের অনুভূতি প্রকাশের সময় আবু সাঈদের বড় ভাই রমজান আলী এ অভিযোগ করেন।
তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘সরকার নিজে থেকে আমাদের আহ্বান জানিয়ে এসেছে। শেখ হাসিনা জোর করে জবরদস্তি করে ডাকে নিয়া গেছে, আর এনি (ড. মুহাম্মদ ইউনূস) আসার (ক্ষমতায়) সঙ্গে সঙ্গে আমাদের বাসায় আসছে। এটাতো আমাদের সৌভাগ্য। আমাদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি আমাদের পাশে আছেন এবং ভবিষ্যতেও থাকবেন।’
ড. ইউনূসের সঙ্গে কী আলাপ হয়েছে জানতে চাইলে আবু সাঈদের বাবা মকবুল হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘ছেলের নামে সরকারি হাসপাতাল চাইছি, যাতে মানুষ বিনামূল্যে ওষুধ পায়। একটা মসজিদের দাবি জানাইছি। রাস্তা, কলেজের নামকরণ করতে বলছি। মাদরাসা যেন হয়। আর ছেলের হত্যার বিচার চাইছি। উনি সব করবে কথা দিছে। শুধু আজ না, সব সময় পাশে থাকবে। তিনি অনেক ভালো মানুষ।’
উল্লেখ্য, আবু সাঈদ রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার বাবনপুর জাফরপাড়া গ্রামের মকবুল হোসেনের ছেলে। তিনি বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি ১২ ব্যাচের শিক্ষার্থী এবং কোটা সংস্কার আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ছিলেন। গত ১৬ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়সংলগ্ন পার্ক মোড়ে পুলিশ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ হয়। একপর্যায়ে পুলিশের গুলিতে আবু সাঈদ নিহত হন। ১৭ জুলাই বাবনপুরে গ্রামের বাড়িতে দাফন করা হয় তাকে।
আবু সাঈদকে প্রকাশ্যে গুলি করার দৃশ্য দেশি-বিদেশি গণমাধ্যমসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ হলে সারা দেশে আন্দোলন জোরদার করা হয়। একপর্যায়ে কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্ল্যাটফর্ম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে আন্দোলনে নামে। ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে ভারতে যান। এরপর নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধান উপদেষ্টা করে ৮ আগস্ট রাতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয় প্রধান উপদেষ্টাসহ এ সরকারের সদস্যসংখ্যা ১৭ জন।
গোপালগঞ্জে সেনাবাহিনীর টহল দলের ওপর হামলা, অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন
গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার গোপীনাথপুরে বিক্ষোভকারীরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে সেনা টহল দলের ওপর হামলা করেছে।
শনিবার (১০ আগস্ট) রাতে এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)।
আইএসপিআর জানায়, বিক্ষোভকারীরা গোপালগঞ্জ-ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ করে রাখলে প্রাথমিকভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য দায়িত্ব পালনরত সেনাবাহিনীর ২টি টহল দল ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। এ সময় উত্তেজিত বিক্ষোভকারীরা সেনা টহল দলের ওপর ইট-পাটকেল ছুড়ে মারে এবং দেশীয় তৈরি অস্ত্র দিয়ে টহল দলের সদস্যদের আঘাত করলে ৩ জন অফিসার, ১ জন জুনিয়র কমিশন অফিসার ও ৫ জন সেনাসদস্য আহত হয়।
আইএসপিআর আরও জানায়, এ ঘটনায় আহত সেনা সদস্যগণ আশঙ্কামুক্ত ও চিকিৎসাধীন রয়েছে। এছাড়াও তারা সেনাবাহিনীর একটি গাড়ি পুড়িয়ে দেয় এবং দুটি গাড়ি ভাংচুর করে। এ সময় বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য সেনা টহল দল ৪ রাউন্ড এ্যামোনিশন ফায়ার করে। পরিস্থিতির তীব্রতা পরিলক্ষিত হওয়ায় ইতোমধ্যে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন করা হয়েছে।
শেখ হাসিনার সঙ্গে ফোনে কথা বলা সেই আ.লীগ নেতা গ্রেপ্তার
পদত্যাগ করে দেশ ত্যাগ করা সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ফোনে কথা বলা বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. জাহাঙ্গীর কবিরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
বুধবার (১৪ আগস্ট) ভোরে বরগুনা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
বরগুনা সদর থানার ওসি এ কে এম মিজানুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘ঢাকা থেকে পুলিশের একটি টিম এসে তাকে গ্রেপ্তার করে। ধারণা করা হচ্ছে, শেখ হাসিনার সঙ্গে মোবাইলে কথা বলার পর বিশৃঙ্খলা এবং প্রতিবিপ্লবের ষড়যন্ত্র করার অভিযোগে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে গ্রেপ্তারের কারণটি তিনি পুরোপুরিভাবে নিশ্চিত করতে পারেননি।’
এর আগে, গত ১২ আগস্ট শেখ হাসিনার সঙ্গে তিন মিনিট ফোনে কথা বলেন আওয়ামী লীগ নেতা মো. জাহাঙ্গীর কবির। ফোনালাপে শেখ হাসিনা জাহাঙ্গীর কবীরকে বলেন, ‘আপনারা শৃঙ্খলা মেনে দলীয় কার্যক্রম চালাবেন। ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসকে যথাযথভাবে পালন করবেন।’
জবাবে মো. জাহাঙ্গীর বলেন, ‘আপা আপনি ঘাবড়াবেন না, মনোবল হারাবেন না। আপনি ঘাবড়ালে আমরা দুর্বল হয়ে যাই। আমরা শক্ত আছি।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি ঘাবড়াব কেন। আমি ভয় পাইনি। আপনারা দেখছেন, আমাদের পুলিশ বাহিনীকে মেরে কীভাবে ঝুলিয়ে রেখেছে। আমাদের কর্মীদের মেরেছে। বোরকা পরে মেরেছে। এ দেশটা রক্তের বিনিময়ে স্বাধীন হয়েছে। আপনারা যেভাবে আছেন, থাকেন।’
স্ত্রী ও ২ সন্তানের রক্তাক্ত লাশ দেখে আঁতকে ওঠেন সেলিম
পঞ্চগড়ে দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে কাপড় ব্যবসায়ী সেলিমের স্ত্রী তাসলিমা বেগম (৩৫) ও তার দুই ছেলে সৈকত (১২) এবং সায়হাম (৯) নিহত হয়েছেন।
বুধবার (১৪ আগস্ট) রাত আনুমানিক ১১টায় জেলার আটোয়ারী উপজেলার বলরামপুর ইউনিয়নের দলুয়া দিঘি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, সেলিম পার্শ্ববর্তী বোদা বাজারে অবস্থিত তার কাপড়ের দোকান বন্ধ করে রাতে বাড়ি ফেরেন। ড্রয়িং রুমের দরজা খোলা দেখে কাছে গেলে মেঝেতে স্ত্রী ও সন্তানদের রক্তাক্ত মরদেহ দেখে তিনি চিৎকার করতে থাকেন। প্রতিবেশীরা ছুটে এসে এ ঘটনা দেখে পুলিশকে খবর দেয়।
আটোয়ারী থানার ওসি মুসা মিয়া বলেন, ‘ঘটনাস্থলে এসে এক মহিলা ও তার দুই সন্তানের লাশ ড্রয়িং রুমের মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখি। ঘটনা তদন্তে সিআইডি ও ক্রাইমসিনের প্রতিনিধি দল কাজ করছে। তাদের দেওয়া তথ্য মতে বিভিন্ন এঙ্গেলে তদন্ত চালানো হবে।’
মা ও দুই ছেলেকে কুপিয়ে হত্যা, ১২ ঘণ্টার মধ্যে রহস্য উদঘাটন
পঞ্চগড়ে স্ত্রী ও দুই ছেলেকে হত্যার ১২ ঘণ্টার মাথায় হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। সেই সঙ্গে হত্যাকাণ্ডের হোতাসহ দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত হোতা জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকারোক্তি দিয়েছে।
স্বীকারোক্তিতে গ্রেপ্তারকৃত আসামি জানান, মুরগির খামারের খাবার চুরির দায়ে কাজ থেকে বাদ দেওয়া হয় ৪ শ্রমিককে। সেই থেকে পূর্বশত্রুতার জের ধরে কাপড় ব্যবসায়ী সেলিম শেখের ওপর ক্ষিপ্ত হন তারা। একপর্যায়ে গত বুধবার রাতে তার বাসায় যান ওই ৪ শ্রমিক। তবে তাকে বাসায় না পেয়ে তার স্ত্রী, দুই ছেলেকে ধারালো ছুরি ও বটি দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করে তারা।
বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) দুপুরে পঞ্চগড়ের পুলিশ সুপারের কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান পুলিশ এস এম সিরাজুল হুদা।
তিনি জানান, হত্যাকাণ্ডে জড়িত নবিন ইসলাম জাহিদ (২৮) নামে এক যুবককে ঘটনাস্থল থেকে কিছু দূরে তার চাচা দেলোয়ার হোসেনের বাড়ি থেকে বৃহস্পতিবার ভোরে গ্রেপ্তার করে আটোয়ারী থানা পুলিশ।
এ ছাড়া রিমন ইসলামকে (৩০) বৃহস্পতিবার দুপুরে বোদা পৌরসভার টিএনটি মোড়া এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে বোদা থানা পুলিশ। পরে জাহিদের দেয়া স্বীকারোক্তি অনুযায়ী হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করা হয়। বৃহস্পতিবার সকালে তাকে নিয়ে অভিযানে বের হয় আটোয়ারী থানা পুলিশ। পরে ঘটনাস্থলের কিছু দূরে আজিজুল ইসলামের বাঁশবাগান থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত রক্ত মাখা ধারালো ছুরি, বটি উদ্ধার করা হয়। তবে হত্যাকাণ্ডে জড়িত অপর দুই আসামি পলাতক রয়েছেন। তবে ওই বাড়িতে তাদের লুটপাটের পূর্ব পরিকল্পনা থাকলেও তারা পরিস্থিতি বেগতিক দেখে পালিয়ে যায়।
তিনি আরও জানান, মামলার গ্রেপ্তার দুই আসামিকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। এ ছাড়া পলাতক দুই আসামিকে ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। হত্যাকাণ্ডের শিকার কাপড় ব্যবসায়ী সেলিম শেখে স্ত্রী তাসলিমা বেগম (৩৫), বড় ছেলে সৈকত শেখ (১৫) ও ছোট ছেলে সায়হাম শেখের (১২) মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে বলে জানান তিনি।
এর আগে, বৃহস্পতিবার সকালে কাপড় ব্যবসায়ী সেলিম শেখ বাদী হয়ে আটোয়ারী থানায় এ ঘটনায় জড়িত ৪ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলার আসামিরা হলেন, পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলার পশ্চিম সাতখামার এলাকার ফজলার রহমানের ছেলে নবিন ইসলাম জাহিদ (২৮) ও বোদা পৌরসভার নগরকুমারী এলাকার নওশাদ আলীর ছেলে রিমন ইসলাম (৩০), পৌরসভার ইসলামবাগ (মোসলেমপুর) এলাকার শফিউর রহমানের ছেলে সাজ্জাদুর রহমান বাঁধন (২৭), ইসলামবাগ (কলেজপাড়া) এলাকার সলিম উদ্দিনের ছেলে রিফাত (৩২)।
সংবাদ সম্মেলনে পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অর্থ ও প্রশাসন) এসএম শফিকুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অবস্) কনক কুমার দাস, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আমিরুল্লা, সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা প্রদীপ কুমার রায়, আটোয়ারী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শাহীনুর রহমান তালুকদারসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও জেলায় কর্মরত বিভিন্ন গণমাধ্যমের কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
দোকান ভাঙচুরের সময় সেনাবাহিনীর হাতে ধরা, সেই দুজনের পরিচয় মিলেছে
মোটরসাইকেলে করে একটি দোকানের সামনে আসেন দুই ব্যক্তি। এদের একজনের হাতে কুড়াল, আরেকজনের হাতে রামদা ছিল। এগুলো দিয়ে তারা দোকানের সাটারে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই দেখা যায় একটি গাড়িতে করে আসেন সেনাবাহিনীর সদস্যরা। এসেই দুই সেনাসদস্য ওই দুই ব্যক্তির ওপর অস্ত্র তাক করলে তারা হাঁটু গেড়ে কানে ধরে আত্মসমর্পণ। এরপর তাদের আটক করে নিয়ে যায় সেনাবাহিনী। গত বুধবার (১৪ আগস্ট) এ ঘটনা ঘটে। এরপর শনিবার (১৭ আগস্ট) এ সংক্রান্ত ১ মিনিট ১৭ সেকেন্ডের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়।
ওই ভিডিওতে দেখা যায়, দোকান ভাঙচুরের সময় তাদের সিনেম্যাটিক কায়দায় আত্মসমর্পণ করিয়ে আটক করে সেনাবাহিনী।
জানা গেছে, ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষের পর একপক্ষের কর্মীরা অপর পক্ষের দোকান ভাঙচুরের সময় ঘটনাটি ঘটে। আটককৃতরা হলেন বোয়ালমারীর যুবদল কর্মী মো. টুটুল হোসেন (২৮) ও দুখু মিয়া (৩০)। বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) তাদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত বুধবার (১৪ আগস্ট) দুপুর ২টার দিকে ফরিদপুর-১ আসনে বিএনপির দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশী উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শামসুদ্দিন মিয়া ঝুনুর গাড়ি বহরে হামলার ঘটনা ঘটে। ওই আসনে বিএনপির আরেক মনোনয়নপ্রত্যাশী কেন্দ্রীয় কৃষক দলের সহসভাপতি খন্দকার নাসিরুল ইসলামের সমর্থকরা এ হামলা করেছে বলে অভিযোগ করেন শামসুদ্দিন মিয়া। এর প্রতিবাদে ওইদিনই বিকেলে বোয়ালমারী পৌরসভায় অবস্থিত খন্দকার নাসিরুল ইসলামের সমর্থক উপজেলা জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক সঞ্জয় সাহার কার্যালয়ে হামলার ঘটনা ঘটে। এতে দুই ছেলেসহ আহত হন সঞ্জয় সাহা। এ ঘটনায় তিনি বোয়ালমারী উপজেলা যুবদলের সাবেক আহ্বায়ক মো. আজিজুল শেখকে প্রধান করে ৬ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরও দুই-তিনজনকে আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করেন।
এ বিষয়ে বোয়ালমারী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘ভাইরাল হওয়া ভিডিওর ওই দুই ব্যক্তিকে সেনাবাহিনী আটক করে আমাদের কাছে হস্তান্তর করে। পরে সঞ্জয় সাহার মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।’
গলির ভেতরে পড়ে ছিল ১৮ লাখ টাকা, অতঃপর...
রাজশাহীতে রাস্তায় পরিত্যক্ত অবস্থায় থাকা ১৮ লাখ টাকা ও একটি সোনালী রঙের ধাতব বস্তু কুড়িয়ে পেয়ে থানায় জমা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
রোববার (১৮ আগস্ট) ভোরে নগরীর ভদ্রা এলাকায় রাস্তা থেকে ওই টাকা ও ধাতব বস্তুটি কুড়িয়ে পান শিক্ষার্থীরা। পরে বেলা ১১টার দিকে কয়েকজন শিক্ষার্থী টাকা ও ধাতব বস্তুটি নগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানায় সেনাবাহিনী ও একজন ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে জমা দেন।
ওই ধাতব বস্তুটিতে ১৮টি ছিদ্র রয়েছে। এগুলো কোনো সংকেত কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ ছাড়া এ টাকা কোথা থেকে এসেছে তা তদন্ত করে দ্রুতই ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
জানা যায়, রোববার ভোর ৫টার দিকে রাজশাহী নগরীর বোয়ালিয়া থানার ভদ্রা এলাকার একটি গলির রাস্তায় ব্যাগভর্তি টাকা পড়ে ছিল। বেলা ১১টার দিকে কয়েকজন শিক্ষার্থী টাকাগুলো উদ্ধার করে থানায় জমা দেন।
এ সময় নগরীর বড়কুঠি ভূমি অফিসের সহকারী কমিশনার (ভূমি) এবং সেনাবাহিনীর ওয়ারেন্ট অফিসার ইকবাল হোসেনের উপস্থিতিতে বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম মাসুদ পারভেজ টাকাগুলো তাদের কাছ থেকে বুঝে নেন।
থানায় টাকা জমা দিতে আসেন নাটোরের সিংড়া উপজেলার রহমত ইকবাল ডিগ্রি কলেজের শিক্ষার্থী আকাশ আলী, আক্কাস আলীসহ কয়েকজন শিক্ষার্থী। তারা বর্তমানে ভদ্রা এলাকায় থাকেন।
তারা জানান, সাধারণ মানুষের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য তারা রাতভর নগরীর ভদ্রা এলাকায় অবস্থান করছিলেন। রাতের ডিউটি শেষে ভোরে বাসায় ফিরছিলেন তারা। এ সময় ওই এলাকার একটি গলির রাস্তায় ব্যাগটি পড়ে থাকতে দেখেন। ব্যাগে লাথি দিয়ে তারা বুঝতে পারেন ভেতরে কিছু আছে। তখন তারা ব্যাগটি খুলে অনেকগুলো টাকা দেখতে পান। পরে ব্যাগের ভেতরে ১০০০ টাকার নোটের ১৮টি বান্ডিল পান।
তারা আরও বলেন, যে ধাতব বস্তুটি আমার পাই সেটি সোনালী রঙের। তবে স্বর্ণের কি না সেটি যাচাই করা যায়নি। এদিকে ওই বস্তুটিতে মোট ১৮টি ছিদ্র আছে। টাকার বান্ডিলও আছে ১৮টি। এটি কোনো সংকেতও হতে পারে।
রাজশাহীর বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম মাসুদ পারভেজ বলেন, একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে টাকাগুলো তারা বুঝে নিয়েছেন। বিষয়টি অবশ্যই খতিয়ে দেখা হবে। এ টাকার মালিক কে, এগুলো অবৈধ কি না কিংবা কোনো অপরাধী এ টাকা বহনের সময় ফেলে গেছে কি না, তা তদন্ত হবে। এ ছাড়া আদালতের অনুমতি নিয়ে টাকাগুলো দ্রুতই রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দেওয়া হবে।
ওসি আরও বলেন, টাকার সঙ্গে সোনালী রঙের একটি ধাতব বস্তুও জমা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। তবে আমরা যাচাই করে জেনেছি এটি সোনার নয়। তবে তাতে অনেকগুলো ছিদ্র আছে। এই বিষয়টি আমরা তদন্ত করে দেখছি।