• ঢাকা শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
logo

‘কীভাবে বেঁচে গেলাম জানি না’

সরোয়ার আমিন বাবু, মুহাম্মদ শাহীনুজ্জামান

  ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ১৯:৩১

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের ওপর জাতিগত নিধন চলছে। জাতিসংঘের প্রতিবেদন অনুযায়ী এরইমধ্যে প্রায় সাড়ে তিন লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। তাদের মধ্যে অনেকেই আহত হয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। যার মধ্যে ৬১ জন গুলিবিদ্ধ, ১১ জন বোমায় আঘাতপ্রাপ্ত। এই গুলিবিদ্ধদের মধ্যে অনেকেরই বয়স ১৮ এর নিচে।

তেমনই এক হতভাগ্য কিশোরীর নাম উম্মে সালমা। গেলো ৬ সেপ্টেম্বর থেকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ২৬ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসা নিচ্ছে।

রাখাইন রাজ্যের বুথিডং জেলার তাঙ্গানা গ্রামের বাসিন্দা ছিল সালমা। সেখানে একটি স্কুলে নবম শ্রেণিতে পড়ত।

সেখানকার অত্যাচারের কথা সে আরটিভি অনলাইনকে জানিয়েছে। শুধু বাঁচার জন্য মিয়ানমারের বুথিডং থেকে মংডু পর্যন্ত সে ১০ দিন হেঁটেছে একটি দলের সঙ্গে। কিন্তু মংডু থেকে বাংলাদেশ বার্ডারের কাছাকাছি এলে দেখে ফেলে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। শুরু হয় নির্বিচার গুলি। গুলিবিদ্ধ হয়েও সৌভাগ্যক্রমে বেঁচে ফিরেছে সালমা। কিন্তু তার সঙ্গে যারা ছিল তাদের অনেকেই আর বেঁচে ফিরতে পারেনি।

আরটিভি অনলাইনকে সালমা আরো বলে, ‘বার্মার মিলিটারিরা আমাকে গুলি করেছে। গুলি লেগে আমার পা ভেঙে গেছে। গুলি আমার পায়ের ভেতর রয়ে গেছে। তারা আমাদের ঘর-দুয়ার পুড়িয়ে দিয়েছে। দৌড়িয়ে দৌড়িয়ে মারছে, গুলি করছে, জবাই করে ফেলছে। যেখানে পাচ্ছে সেখানেই মেরে ফেলছে। কীভাবে বেঁচে গেলাম জানি না।

সে আরো বলে, ‘বড় বড় মৌলভীদের জবাই করে ফেলছে।বড় বড় মানুষদের গুলি করে মেরে ফেলছে। আমাদের গ্রাম জ্বালিয়ে দিয়েছে। এজন্য আমাদের গ্রামের মানুষেরা পাহাড়ের মধ্যে আশ্রয় নেয়। সেখান থেকে প্রায় ১০ দিনের মতো হেঁটে মংডু এলাকায় এসে পৌঁছাই। কিন্তু সেখানেও গুলি করছিল বার্মার মিলিটারিরা। পরে আমরা পাহাড় পেরিয়ে বাংলাদেশের বর্ডারের কাছে আসলাম।

সেখানে একটা বিল ছিল। সেটি পার হওয়ার জন্য বিলে নামার সঙ্গে সঙ্গেই মিলিটারিরা আমাদের গুলি শুরু করে। পরে আমরা সেই বিলের মধ্যে শুয়ে পড়ি মরার মতো করে। কিন্তু আমাদের সঙ্গে যারা ছিল তাদের অধিকাংশই মারা গেলো। কেউ কেউ আধমরা হয়ে পড়ে রইল। সেখানে আমার মায়ের গায়ে তিনটি গুলি লাগে। আর আমার পায়ে একটা গুলি লাগে। এরকম আরো অনেকে ছিল।

আধা ঘণ্টা পর্যন্ত সেখানে মিলিটারি আমাদের ওপর গুলি করেছে। সেখান থেকে বর্ডার পেরিয়ে বাংলাদেশে আসি। পরে কক্সবাজার হসপিটালে ভর্তি হই। সেখান থেকে আমাকে এই হাসপাতালে পাঠানো হয়।

জেবি/সি

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
দগ্ধ শিশু লামিয়াও বেঁচে রইল না
সখীপুরে প্রবাসীর স্ত্রীর একসঙ্গে ৬ সন্তান জন্ম, বেঁচে নেই কেউ
রাজ-বুবলীর ‘বেঁচে যাওয়া ভালোবাসা’তে মুগ্ধ নেটদুনিয়া (ভিডিও)
সেতু থেকে খাদে পড়ে ৪৫ বাসযাত্রীর মৃত্যু, অলৌকিকভাবে বেঁচে গেল শিশু 
X
Fresh