রংপুরে দেড় লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি (ভিডিও)
রংপুরে তিস্তা, ঘাগট, যমুনেশ্বরীসহ বিভিন্ন নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। গেলো কয়েকদিনে অব্যাহত পানি বৃদ্ধির ফলে গঙ্গাচড়া, কাউনিয়া, পীরগাছা, মিঠাপুকুর ও বদরগঞ্জের বিভিন্ন এলাকা তলিয়ে গেছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় দেড় লক্ষাধিক মানুষ।
বদরগঞ্জের যমুনেশ্বরী নদীর পানি মঙ্গলবার ভেঙে হঠাৎ বৃদ্ধি পাওয়ায় তীব্র স্রোতে উপজেলার কয়েকটি পাকা সড়ক ভেঙে ১৫টি গ্রামের প্রায় ৫০ হাজার মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় মানবেতর জীবনযাপন করছেন। উপজেলার সঙ্গে বেশ কয়েকটি ইউনিয়নের যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।
এছাড়া তিস্তা ও ঘাঘটের পানি বাড়া কমার খেলায় চরম দুর্ভোগে রংপুরের গঙ্গাচড়া ও পীরগাছার পানিবন্দি লাখো মানুষ। এসব এলাকায় দেখা দিয়েছে শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকট।
বন্যাকবলিত এলাকায় যে পরিমাণ ত্রাণ বিতরণ করা হচ্ছে তা চাহিদার তুলনায় খুবই সামান্য।
অপরদিকে বন্যাদুর্গত এলাকায় পানিবন্দি মানুষের সহযোগিতায় স্পিডবোট দিয়ে সেনাবাহিনী বিভিন্ন কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছেন।
গেলো কয়েকদিনে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় রংপুর বিভাগের ১ হাজার ৩শ’ ১টি প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়া বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় ৭শ’ মেডিক্যাল টিম গঠন করা হয়েছে। এই টিমে প্রতিটি দুর্গত এলাকায় তিন থেকে চারজন সদস্য থাকবেন।
এদিকে দিনাজপুরে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও বেড়েছে দুর্ভোগ। গাইবান্ধা ও জামালপুরে ভেঙে পড়েছে সড়ক ও রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা। বিশুদ্ধ পানি ও খাবার সংকটে পড়েছে, পানিবন্দি লাখো মানুষ।
সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীর পানি বইছে বিপদসীমার ১শ’৫২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে। শাহজাদপুরের গোপালপুরে বাঁধ ভেঙে বেশ কিছু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। জেলার ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা জানান, এই বন্যায় ৫ হাজার হেক্টর জমির ধান ৭২ কিলোমিটার কাচা সড়ক, ৪০টি ব্রিজ-কালভার্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
লালমনিরহাটে তিস্তা ও ধরলা নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। তবে এখনো কয়েক হাজার ঘরবাড়ী পানিতে ডুবে আছে।
ব্রহ্মপুত্র ও দশআনী নদীর পানি বাড়ায় শেরপুর সদর উপজেলার ৪০টি গ্রাম বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে। তলিয়ে গেছে পাট, রোপা আমন বীজতলা, সবজী ও আউশ-আমন ধান। পানিতে ডুবে বেতমারী ও কামারেরচর ইউনিয়নে দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
উত্তর পূর্বে সিলেট অঞ্চলে সুনামগঞ্জ জেলায় বন্যায় এবার বেশি ক্ষতি হয়েছে। বন্যা সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী সাজ্জাদ হোসেন বলেন, উত্তরে যমুনা নদীর পানি এখন কমতে শুরু করেছে। এই পানি পদ্মা নদী দিয়ে বেরিয়ে যাবে।
এসএস
মন্তব্য করুন