বন্যার পানি ঢুকে পড়েছে সৈয়দপুর বিমানবন্দরে
বর্ষণ থেমে গেলেও ভারত থেকে নেমে আসা উজানের ঢল আর খড়খড়িয়ার দু’বাঁধ দিয়ে পানি ঢোকায় সৈয়দপুরের বন্যা পরিস্থিতির অবনতি অব্যাহত রয়েছে।
সৈয়দপুর বিমানবন্দরের দক্ষিণাংশের প্রায় ১০০ মিটার দেয়াল ভেঙে বন্যার পানি ঢুকছে। তবে রানওয়েতে এখনো পানি না ওঠায় বিমান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। এদিকে বানভাসিরা বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নিয়েছেন। তবে খাদ্য ও খাবার পানি সংকট দেখা দিয়েছে আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে।
সৈয়দপুর উপজেলার বোতলাগাড়ী, কামারপুকুর, কাশিরাম বেলপুকুর, বাঙালিপুর ইউনিয়নের ৪০টি ওয়ার্ডের প্রায় ৮০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। আর সৈয়দপুর পৌর এলাকার ১৫টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১১টিতে প্রায় ২০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
পানিবন্দি মানুষের জন্য সৈয়দপুর কলেজ, হাজারি হাট উচ্চ বিদ্যালয়, ইউপি পরিষদ, সৈয়দপুর স্টেডিয়াম, কাজিরহাট প্রাথমিক বিদ্যালয়, লুৎফর রহমান কিন্ডার গার্টেন ও কয়ানিজ পাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয় ও সৈয়দপুর মহাবিদ্যালয় মিলে ১০টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে।
এছাড়াও বিদ্যুৎ ব্যবস্থা না থাকায় অন্ধকারে সৈয়দপুর কলেজ এলাকার বানভাসি মানুষগুলো তাদের মালামাল নিয়ে কোমর পানি দিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে গেছেন। অনেকেই আহত হয়েছেন। কেউ জিনিসপত্র হারিয়ে ফেলেছেন।
আশ্রয়কেন্দ্রগুলো ঘুরে দেখা গেছে, খাদ্যাভাবে মানুষ ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। তারা বলছেন, আশ্রয়কেন্দ্রে অনেকে আসে ছবি তোলে, আবার কেউ আশ্বাস দেয়। কিন্তু কেউ খাবার দেয় না।
সৈয়দপুর মহাবিদ্যালয় আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নেয়া ১১ নম্বর ওয়ার্ডের মুছি পাড়ার আকলিমা বেগম জানান, আশ্রয়কেন্দ্রে আসার পর মেয়র, কাউন্সিলর, উপজেলার চেয়ারম্যান সকলে আসলেও কেউ খাবার দেয়নি। এমন কি পরের দিনও কেউ আসেনি। এমন অভিযোগ সব আশ্রয়কেন্দ্রের মানুষের।
এদিকে খড়খড়িয়া নদীর ভাঙা বাঁধটি রক্ষায় সেনাবাহিনী ও স্থানীয়রা মিলে কাজ করছেন। তবে স্রোতের কারণে ভাঙা বাঁধটি রক্ষায় সময় লাগছে। একই অবস্থা শহরের বসুনিয়া পাড়া এলাকার বাঁধটিরও।
সৈয়দপুর পৌরসভার মেয়র আমজাদ হোসেন সরকার জানান, সৈয়দপুর শহরের দিনাজপুর রোডের ওপর দিয়ে পানি প্রবাহ কিছুটা কমেছে। তবে রাস্তাঘাটের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। আর আশ্রিত মানুষদের খাবার সহায়তার ব্যবস্থার কাজ চলছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের সৈয়দপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী (পাউবো) শহীদুল ইসলাম জানান, শহররক্ষা বাঁধের দু’টি স্থানে ভাঙন বেড়ে ১০০ মিটারে গেছে। ভাঙন রোধে সেখানে সেনাবাহিনী ও পৌর পরিষদসহ স্থানীয়রা সম্মিলিতভাবে কাজ করছে।
সৈয়দপুর উপজেলা চেয়ারম্যান মোখছেদুল মোমিন বলেন, বন্যাকবলিত এলাকা পরিদর্শন করে সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়ার কথা বলেছি।
জেবি/এসএস
মন্তব্য করুন