নদী ভাঙনে নিঃস্ব হচ্ছে বহু মানুষ (ভিডিও)
পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙনে বিলীন হতে চলেছে কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর উপজেলার সাহেবের চর গ্রামটি। এখানকার একমাত্র প্রাথমিক বিদ্যালয়টি নদীগর্ভে হারিয়ে গেছে। ভেঙে গেছে অনেক বাড়ি-ঘর।
পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙনে কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর উপজেলার সাহেবের চর গ্রামটির বেশ কিছু অংশ এর মধ্যে নদীগর্ভে তলিয়ে গেছে। ঘর-বাড়ি হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছেন বহু মানুষ। ধসে পড়েছে গ্রামের একমাত্র সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবন। এতে প্রায় বন্ধ হতে বসেছে শিক্ষা কার্যক্রম। চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে পাঠদান। ভাঙন আতঙ্কে দিন কাটছে নদী পারের হাজারো মানুষের।
সাহেবের চর গ্রামের একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক বলেন, ‘ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে আমরা খুবই বিপদে পড়েছি। ক্লাসরুম ব্রহ্মপুত্র নদী গ্রাস করে নেয়ায় ছাত্র-ছাত্রীদের বসার জায়গাও নেই।’
স্কুল ভেঙ্গে যাওয়ায় ছাত্র-ছাত্রীদের গাছতলায় ক্লাস নিতে হচ্ছে। বর্ষাকাল হওয়ার কারণে সেখানেও ক্লাস করা যাচ্ছে না বলে জানান শিক্ষার্থীরা।
এক স্কুল ছাত্র জানায়, স্কুল ভেঙে যাওয়ায় আমাদেরকে গাছতলায় পড়াশোনা করতে হচ্ছে।
নদী ভাঙনের শঙ্কায় সাহেবের চর গ্রামের বাসিন্দারা দ্রুত ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নিতে বলেন।
সাহেবের চর গ্রামের এক নারী বলেন, ‘নদীডা যদি বাইন্ধা-ছাইন্ধা দিতে পারইন তাহলে আমরা গরিব দরিব মানুষ কিছুদিন গাঙের পারে বাড়ি বাইন্ধা থাকতে পারি।’
স্থানীয়রা জানান, বিগত ৮ বছর ধরেই এখানকার নদী পারের মানুষদের বাড়ি এখান থেকে ওখানে নিতে হচ্ছে। একমাত্র স্থায়ী বাঁধ হলেই এখানকার মানুষ রক্ষা পাবে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ভাঙনরোধে এখন পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি প্রশাসনকে। তবে পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
কিশোরগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম আরটিভিকে বলেন, ‘ভাঙন রোধের জন্য আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। আশা করছি অচিরেই ভাঙন রোধের জন্য ব্যবস্থা নিতে পারবো।’
এদিকে যমুনা নদীর ভয়াবহ ভাঙনের কবলে পড়েছে সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুর উপজেলা ও এনায়েতপুর থানার বেশকিছু গ্রাম। ভাঙন রোধে কর্তৃপক্ষ এখন পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা না নেয়ায় চরম উৎকণ্ঠার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন ওইসব এলাকার বাসিন্দারা।
নদী পারের বাসিন্দা এক নারী জানান, ল্যাট্রিন, টিউবয়েল, গাছপালা সব দেবে গেছে। ছেলে-মেয়েদের নিয়ে কোনোরকমে বাড়ি ছেড়ে এসেছি।
স্থানীয়রা জানান, নদী ভাঙনে সব বাড়ি-ঘর চলে যাচ্ছে। তবে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কোনো নামগন্ধ নেই। তারা আসেও না বাঁধও বাঁধে না। শুধু আশা দিয়ে রাখা হয়।
তবে ভাঙন রোধে জরুরি পদক্ষেপ নেয়ার পাশাপাশি স্থায়ী প্রকল্প গ্রহণ করার আশ্বাস দিলেন স্থানীয় সাংসদ ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী।
সিরাজগঞ্জ-৬ আসনের সংসদ সদস্য আরটিভিকে বলেন, ‘আমরা নদী শাসনের কাজটা সমাপ্ত করছি। বর্ষাকালে এই ভাঙন দেখা দেয়। গেলোবারও দেখা দিয়েছিল। ভাঙনরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা পানি উন্নয়ন বোর্ড নিবে।’
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী হাসান ইমাম বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করছি এখানে নদী ভাঙন রোধে স্থায়ী প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিতে। আশা করছি আগামী অর্থবছরেই সেটা হবে।
জেবি/এসএস
মন্তব্য করুন