• ঢাকা শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
logo

চুরির অপবাদে গাছের সঙ্গে বেঁধে যুবককে নির্যাতন

কুড়িগ্রাম (উত্তর) প্রতিনিধি, আরটিভি নিউজ

  ২৬ জুন ২০২২, ২৩:৪৪
চুরির অপবাদে গাছের সাথে বেঁধে যুবককে নির্যাতন
ফাইল ছবি

কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলায় টাকা চুরির অপবাদে গাছের সঙ্গে বেঁধে শহিদুল ইসলাম (৩৪) নামে এক যুবককে নির্যাতন করা হয়েছে। আহত যুবক বর্তমানে রাজারহাট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রয়েছেন।

সে ওই গ্রামের মৃত বক্তার আলীর ছেলে। ঘটনাটি উপজেলার বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের রামহরি গ্রামে গত বুধবার (২২জুন) দুপুরে ঘটে। ৯৯৯ ফোন পেয়ে রাজারহাট পুলিশ আহত যুবককে উদ্ধার করলেও কাউকে আটক করেনি। পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নির্যাতনের ভিডিও প্রকাশ পেলে সকলের দৃষ্টিগোচর হয়।

নির্যাতনের শিকার শহিদুল ইসলাম জানান, আমি দিন মজুরের কাজ করে মায়ের সঙ্গে থাকি। যা আয় হয় তা দিয়ে দু’জনের খেয়ে না খেয়ে দিন কাটে। বয়স হওয়ার কারণে মায়ের ব্রেনের কিছুটা সমস্যা হয়েছে। একটানা বৃষ্টির কারণে বাড়িতে পানি উঠেছে। বুধবার ঘরে কোনো খাবার ছিল না। ওই দিন দুপুরে বিজলির বাজারের পাশে একজনের বাড়িতে খড়ি ফাটার কাজ পাই। আনুমানিক সাড়ে তিনটার দিকে ওই বাজারে গিয়ে একটা দোকানে বাকিতেই খুরমা খেতে যাই।

এ সময় প্রতিবেশী চার ভাই আউয়াল, দুলাল, মানিক এবং আলম এসে আমাকে পাঞ্জা করে ধরে বলে তুই বাড়ি থেকে ১১হাজার ৫০৪টাকা চুরি করে নিছিস। এই বলে ওরা চার ভাই আমাকে তাদের বাড়ির ওঠানে গাছের সঙ্গে বেঁধে মারধর করে। এ সময় আবদুল বাতেন মেম্বার উপস্থিত ছিলেন। তিনি বারবার নিষেধ করার পরেও তারা আমাকে ছেড়ে দেয়নি। পরে কে বা কারা ৯৯৯ ফোন দিলে রাজারহাট থানার পুলিশ এসে আমাকে উদ্ধার করে।

এ সময় পুলিশ তাদেরকে রাগারাগি করে আমাকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করার নির্দেশ দেন। পরে ওরা আমাকে সন্ধ্যায় হাসপাতালে ভর্তি করে দেয় । তাৎক্ষণিক কিছু ওষুধ কিনে দেওয়ার পর থেকে তারা আমার কোনো খোঁজ নেয়নি। গ্রামবাসীরা টাকা তুলে চিকিৎসার খরচ দিচ্ছেন। হাসপাতালে ভর্তি থাকার কারণে এবং পরিবারের আর কোনো লোক না থাকায় মামলা করতে পারেনি। শহিদুলের মা হাওয়া বেওয়া বলেন, মোর ছোয়াটাকে বিনা দোষে মারিল। মুই এটার বিচার চাং।

অভিযুক্ত আউয়াল বলেন, আমার বড় ভাই দুলালের বাড়ি থেকে ১১হাজার ৫৮০ টাকা হারিয়ে গেছে। আমরা নিজ চোখে দেখিনি। আমার ভাতিজি শহিদুলকে বাড়ি থেকে বের হয়ে যেতে দেখেছেন। সে জন্যই তাকে ধরে এনে মারা হয়েছে। তবে ওভাবে মারধর করাটা ঠিক হয়নি। এটা সমাধের শেষ পর্যায় এসে পৌঁছেছে। পুলিশের উপস্থিতিতেই বাতেন মেম্বার সমাধানের আশ্বাস দেন। পরে পুলিশের নির্দেশে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করি এবং চিকিৎসার খরচ দিচ্ছি।

এ বিষয়ে ইউপি সদস্য আব্দুল বাতেন মেম্বার ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকার কথা অস্বীকার করে বলেন, আমি শহিদুলকে মারধর করে ছেড়ে দেওয়া অবস্থায় দেখতে পাই। শহিদুল হাসপাতালে থাকায় কোন সমাধান হয়নি। ঘটনাস্থলে পুলিশ গেলেও কাউকে আটক করেনি।

ডিউটিরত চিকিৎসক ডা. তাসলিমা আক্তার বলেন,শহিদুল ইসলাম বর্তমানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তার বাম হাতের একটি আঙুল ভেঙে গেছে। চিকিৎসা নিলেই সে সুস্থ হয়ে উঠবেন।

রাজারহাট থানার পুলিশ এসআই অনিল চন্দ্র রায় বলেন, ৯৯৯ ফোনে পেয়ে ঘটনা স্থল থেকে শহিদুলকে দড়ি খোলা অবস্থায় আমরা পাই। এরপর তাকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। তবে এখনও কেউ থানায় লিখিত অভিযোগ করেনি।

রাজারহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাজু সরকার বলেন, বিষয়টি আমার নজরে আসেনি। কেউ অভিযোগ করলে অবশ্যই জানতে পারতাম। এরপরেও আমি খোঁজ খবর নিচ্ছি।

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
মাছ ধরতে গিয়ে পুকুরে ডুবে ভাই-বোনের মৃত্যু 
মোটরসাইকেল কিনে না দেওয়ায় স্কুলছাত্রের আত্মহত্যা
কুড়িগ্রামে নদীতে গোসল করতে নেমে কিশোরের মৃত্যু
গরুর মাংসের কেজি ৫৯৫ টাকা, ক্রেতাদের ভিড়
X
Fresh