• ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
logo

যমুনার ভাঙনে ভূমি কমছে মানিকগঞ্জের

আরটিভি অনলাইন রিপোর্ট, মানিকগঞ্জ

  ০৬ জুলাই ২০১৭, ১১:৪২

ধীরে ধীরে যমুনা নদীর ভয়াল ভাঙনে বিলীন হয়ে যাচ্ছে মানিকগঞ্জ জেলার ভূমি। হাজারো পরিবারকে নিঃস্ব করে হারিয়ে গেছে অনেক এলাকা। চলতি মৌসুমে ৩ শতাধিক বাড়িঘর ও জমি হারিয়ে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন দৌলতপুর উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নের নদীভাঙন কবলিত মানুষেরা।

ভাঙনকবলিত ইউনিয়নগুলো হলো চরকাটারী, বাঁচামারা ও বাঘুটিয়া ইউনিয়ন।

এদিকে সব থেকে ভয়াবহ ভাঙন দেখা দিয়েছে চরকাটারী ইউনিয়নের লালপুর, চরকাটারী, কাঠালতুলি, চরকাটারী মন্ডলপাড়া, বোর্ড ঘর বাজার ও চরকাটারী বাজার এলাকায়। যমুনা নদীর পাড়ে চরকাটারী ইউনিয়নে জিও ব্যাগ ফেলে অস্থায়ীভাবে করা প্রতিরক্ষামূলক বাধে ধস দেখা দেওয়ায় হুমকির মুখে পড়েছে ওইসব এলাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ-মাদ্রাসা, হাট-বাজার, রাস্তা-ঘাটসহ শ’ শ’ বাড়িঘর।

এ বছর নদীতে পানি আসার মাস খানেক আগে চরকাটারী ইউনিয়নে যমুনা নদীর পূর্ব পাড়ে নদী ভাঙন রোধকল্পে ১ কোটি ৩৮ লাখ টাকা ব্যয়ে বালি ভর্তি জিও ব্যাগ ফেলে অস্থায়ী প্রতিরক্ষা বাধ তৈরি করে পানি উন্নয়ন বোর্ড। কিন্তু নদীর তীব্র স্রোতে বিলীন হয়ে যায় সেই প্রতিরক্ষামূলক বাধ। ফলে ঐতিহ্যবাহী চরকাটারী সবুজ সেনা উচ্চ বিদ্যালয়, চরকাটারী বাজার, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ভূমি মসজিদ, মাদ্রাসাসহ কয়েকশ বাড়িঘর ভাঙনের হুমকির মুখে পড়ে।

বুধবার সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে যমুনা নদীর ভাঙনের শিকার ওই এলাকার খেটে খাওয়া মানুষ তাদের বাড়িঘর অন্য জায়গায় সরিয়ে নিচ্ছেন। কেউ কেউ নিজের ভিটে মাটি হারিয়ে অন্যের জমির ওপর আশ্রয় নিয়ে খোলা আকাশের নিচে দিন পার করছেন।

চরকাটারী মণ্ডল পাড়ার আব্দুল খালেক মণ্ডল জানান, নদীতে হঠাৎ পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নদী ভাঙন শুরু হয়। এবার নিজের বাড়িতে থাকতে পারবেন কিনা তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেন তিনি।

চরকাটারী বোর্ড ঘর বাজার এলাকার আলমগীর হেসেন জানান, যমুনা নদীর ভাঙনে বাড়িঘর, জায়গাজমি নদীতে বিলীন হওয়ায় পরিবার নিয়ে অন্যের জমি ভাড়া করে কোনো মতে থাকছেন তিনি। ভাঙন রোধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না বলে তার অভিযোগ। এমন ভাঙন যদি অব্যাহত থাকে ভবিষ্যতে কি করবেন তার জানা নেই।

এ বিষয়ে চরকাটারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল বারেক মণ্ডল জানান, যমুনা নদীর ভাঙনে চরকাটারী স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কল্যাণ কেন্দ্র, ২টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কয়েকশ বাড়িঘর ও আবাদি জমি নদী গর্ভে চলে গেছে। তিনি ভাঙ্গন প্রতিরোধে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান।

এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী আব্দুল হামিদ বলেন, এরই মধ্যে ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করা হয়েছে। অর্থ বরাদ্দের জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে পত্র পাঠানো হয়েছে। জরুরী ভিত্তিতে ভাঙন রোধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার কানিজ ফাতেমা বলেন, যমুনা নদীর কয়েকটি অস্থায়ী প্রতিরক্ষামূলক বাধের কিছু কিছু জায়গায় ধস দেখা দিয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড, জেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসনের সমন্বয়ে সবধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এসএস

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh