• ঢাকা শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
logo

আবদুল গাফফার চৌধুরীর স্মরণে শোক সভা ও দোয়া মাহফিল

আরটিভি নিউজ

  ২৭ মে ২০২২, ১৫:৩৪
আবদুল গাফফার চৌধুরীর স্মরণে শোক সভা ও দোয়া মাহফিল

বিশিষ্ট সাংবাদিক, গীতিকার, কলামিস্ট ও সাহিত্যিক আবদুল গাফফার চৌধুরী মারা গেছেন। গত ১৯ মে স্থানীয় সময় ভোর ৬টা ৪০ মিনিটে লন্ডনে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।

শুক্রবার (২৭ মে) উত্তরা সেক্টর ৬ পার্কে সদ্য প্রয়াত এই কিংবদন্তির স্মরণে শোক সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।

উত্তরার সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন সপ্তবর্ণা সংসদ আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক কামরুল ইসলাম চৌধুরী। তিনি তার আলোচনায় আবদুল গাফফার চৌধুরীর জীবনের নানা দিক তুলে ধরেন। ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা সংগ্রাম, মুক্তিযুদ্ধ, সাংবিধানিকতার নানা কাহিনি, বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে তার যোগাযোগসহ সত্য প্রকাশে সাহসিকতার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, যা অনেকের প্রেরণা হয়ে যুগ যুগ থাকবে। তার অমর সৃষ্টি একুশের গান বাঙালি জাতিকে বিশ্বে অনন্তকাল বাঁচিয়ে রাখবে।

আবদুল গাফফার চৌধুরীর জীবনের নানা স্মৃতি ও তার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে আলোচনায় অংশ নেন প্রফেসর ডা. সাব্বির আহমেদ খান, সঙ্গীতজ্ঞ রূমী আজনবী, মুক্তিযোদ্ধা আকরাম হোসেন, সাংস্কৃতিক কর্মী সুরুজ্জামান, আবুল কাশেম সরকার।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সপ্তবর্ণা সংসদের সভাপতি মাসুদুল হক চৌধুরী বাহার। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন সিনিয়র সহসভাপতি বাহারুল ইসলাম তালুকদার মিন্টু। দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করেন মাওলানা শফিকুল ইসলাম ও হাফেজ নিজাম উদ্দিন। দোয়া শেষে উপস্থিত সবাইকে তবারক বিতরণ করা হয়।

pjimage-1

'আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি' গানের রচয়িতা আবদুল গাফফার চৌধুরী বরিশাল জেলার মেহেন্দিগঞ্জের উলানিয়া গ্রামের চৌধুরী বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা হাজি ওয়াহিদ রেজা চৌধুরী ও মা মোসাম্মৎ জহুরা খাতুন। তিন ভাই, পাঁচ বোনের মধ্যে বড় ভাই হোসেন রেজা চৌধুরী ও ছোট ভাই আলী রেজা চৌধুরী। বোনেরা হলেন- মানিক বিবি, লাইলী খাতুন, সালেহা খাতুন, ফজিলা বেগম ও মাসুমা বেগম।

১৯৫০ সালে আবদুল গাফফার চৌধুরী পরিপূর্ণভাবে তার কর্মজীবন শুরু করেন। ১৯৫১ সালে ‘দৈনিক সংবাদ’ প্রকাশ হলে আবদুল গাফফার চৌধুরী সেখানে অনুবাদকের কাজ নেন। এরপর তিনি বহু পত্রিকার সঙ্গে যুক্ত হন।

১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে সপরিবারে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে আগরতলা হয়ে কলকাতা পৌঁছান আবদুল গাফফার চৌধুরী। সেখানে মুজিবনগর সরকারের মুখপাত্র সাপ্তাহিক জয়বাংলায় লেখালেখি করেন তিনি। এ সময় তিনি কলকাতায় দৈনিক আনন্দবাজার ও যুগান্তর পত্রিকায় কলামিস্ট হিসেবেও কাজ করেন। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ সালে দৈনিক জনপদ বের করেন।

এরপর ১৯৭৩ সালে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে আলজিয়ার্সে ৭২ জাতি জোট নিরপেক্ষ সম্মেলনে যান আবদুল গাফফার চৌধুরী। দেশে ফেরার পর তার স্ত্রী গুরুতর অসুস্থ হলে তাকে চিকিৎসার জন্য প্রথমে কলকাতা নিয়ে যান। সেখানে সুস্থ না হওয়ায় তাকে নিয়ে ১৯৭৪ সালের অক্টোবর মাসে লন্ডনে যান তিনি। এরপরই তার প্রবাস জীবনের ইতিহাস শুরু হয়।

সাংবাদিকতার পাশাপাশি গল্প, উপন্যাস, স্মৃতিকথা, ছোটদের উপন্যাসও লিখেছেন তিনি। ‘চন্দ্রদ্বীপের উপাখ্যান’, ‘সম্রাটের ছবি’, ‘ধীরে বহে বুড়িগঙ্গা’, ‘বাঙালি না বাংলাদেশি’সহ তার প্রকাশিত গ্রন্থসংখ্যা প্রায় ৩০। এ ছাড়া তিনি কয়েকটি পূর্ণাঙ্গ নাটক লিখেছেন। এর মধ্যে রয়েছে ‘একজন তাহমিনা’ ‘রক্তাক্ত আগস্ট’ ও ‘পলাশী থেকে বাংলাদেশ’।

কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ বহু পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন আবদুল গাফফার চৌধুরী। ১৯৬৩ সালে ইউনেস্কো পুরস্কার পান তিনি। এ ছাড়া বাংলা একাডেমি পদক, একুশে পদক, শেরে বাংলা পদক, বঙ্গবন্ধু পদকসহ আরও অনেক পদকে ভূষিত হয়েছেন।

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
কালীগঞ্জে ঊষার ইফতার ও দোয়া মাহফিল
সেনবাগ প্রেস ক্লাবের ইফতার ও দোয়া মাহফিল 
উত্তরার আগুন নিয়ন্ত্রণে, প্রায় সব দোকান পুড়ে ছাই
উত্তরায় ভয়াবহ আগুন
X
Fresh