• ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
logo

ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রীর বাবার নামে বিদ্যুৎ বিল আসে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাড়িতে

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি, আরটিভি নিউজ

  ২৬ মে ২০২২, ১০:২৮
ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রীর বাবার বিদ্যুৎ বিল এখনো আসে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাড়িতে

দেশ ভাগের সময় বন্ধুর সঙ্গে ১৯৪৭ সালে জায়গা বিনিময় করে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলায় চলে যান ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর এলাকার কাজীপাড়ার বাসিন্দা মাখন লাল সাহা। সেই মাখন লাল সাহার ছেলে ডা. মানিক লাল সাহা এখন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী।

ত্রিপুরা তো বটেই ব্রাহ্মণবাড়িয়াতেও এখন ডা. মানিক সাহাকে নিয়ে আলোচনা। মানিক সাহা মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর জানা গেল, তাদের পৈতৃক ভিটা এখনও রয়ে গেছে। এমনকি মানিক সাহার বাবা মাখন লাল সাহার নামে এখনও ওই বাড়ির বিদ্যুৎ বিল আসে।

বলতে গিয়ে কেঁদে দিলেন মাখন লাল সাহার বাড়ির বাসিন্দা মো. শরিফুল ইসলাম মালদার। এ সময় আরটিভি নিউজকে বলেন, আমার বাবা নূর মিয়া মালদারের বাড়ি ছিল আগরতলার ধলেশ্বরে। দেশ ভাগের সময় বাংলাদেশে আসার সুবাদে বাবার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা হয় মাখন লাল সাহার। আলাপচারিতার মধ্যেই তারা বাড়ি বিনিময় করেন। আমার খুব লাগছে যে ভারতে আমাদের যে বাড়ি আর আমরা যে বাড়িতে থাকি সেই বাড়ির একজন ত্রিপুরার মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন।

এক প্রশ্নের জবাবে কাঁদতে কাঁদতে তিনি বলেন, আমার বাবার কথা অনুযায়ী এখনও বিদ্যুতের মিটারের নামটি বদল করেনি। যখন মাখন কাকার নামে বিদ্যুতের বিল আসে তখনই কাকা ও আব্বার কথা খুব মনে পড়ে। আমি আমার সন্তানদেরকেও বলেছি যেন এ নামটা পরিবর্তন না করে।

এদিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মানুষ ‘নিজ এলাকার’ একজন পাশের দেশের রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হওয়ায় বেজায় খুশি। বিষয়টি নিজেদের গর্ব উল্লেখ করে এতে দু’দেশের মধ্যে আরও বেশি সুসম্পর্ক গড়ে উঠবে বলে এলাকার মানুষ আশা প্রকাশ করেন।

ত্রিপুরা রাজ্য বিজেপির সভাপতি ডা. মানিক লাল সাহা সেখানকার মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন। এর আগের মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দে পদত্যাগের পর তিনি শপথ নেন।

পৌর এলাকার প্রধান সড়ক টিএ রোড হয়ে কাজীপাড়া ঢুকতেই মাখন লাল সাহার সেই বাড়ি। মাখন লাল সাহা যে দালান ঘরটিতে থাকতেন সেটি বেশ পুরোনো অবস্থায় আগের অবয়বেই রয়ে গেছে। মাখন লাল সাহা ও তার ভাইয়েরা যে জায়গাটি বিনিময় করে গেছেনে সেখানে একাধিক বাড়ির পাশাপাশি দোকানপাট রয়েছে। বাড়ির যে উঠান ও বাগান ছিল সেখানটায়ও ঘর উঠে গেছে। বাড়িটি ২৪ শতাংশের বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।

ফালু শীল নামে কাজীপাড়ার বাসিন্দা বলেন, ‘বাড়ির পাশের একজন মানুষ অন্য রাষ্ট্রের একটি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, এটি অনেক আনন্দের। খরবটি জানার পর থেকে আমার খুব ভালো লাগছে।

বাড়িটির বাসিন্দা শরিফুল ইসলাম মালদার জানান, মানিক সাহার পিতার বাড়িতে আমার জন্ম। সেই দিক থেকে আমাদের সম্পর্ক আত্মার। সে কারণে ভারত থেকে পাকিস্তান ও পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশ হওয়ার পর আজও আমাদের বাড়ির বিদ্যুৎ বিল মাখন লাল সাহার নামে রয়েছে।

এ সময় স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে শরিফুল বলেন, আমার বাবা নূর মিয়া মালদার ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজে পড়তেন। থাকতেন কাজীপাড়া কিবরিয়া মহলে। তখন ব্রাহ্মণবাড়িয়াও ত্রিপুরার অংশ। কাজী পাড়ায় থাকা সময়ে মাখন লাল সাহার সঙ্গে বন্ধুত্ব। দেশ ভাগের সময়ে পরিস্থিতি পরিবর্তিত হতে থাকে। তখন দুই বন্ধু একে অপরের বাড়ি বিনিময়ের প্রস্তাব করেন। কম সময়ের মধ্যেই তা কার্যকর হয়। সেই থেকে তারা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কাজীপাড়ার বাসিন্দা। আর আমাদের আগরতলার বাড়ির বাসিন্দা মাখন লাল সাহা।

শরিফুল আরও বলেন, আমার ভাই মানিক সাহা ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী হওয়ায় আমরা বেশ খুশি। কয়েক মাস আগেও মাখন কাকার স্বজনরা আমাদের বাড়ি এসেছিলেন। আমাদের খোঁজ নিয়েছেন।

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh