• ঢাকা বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১
logo

'জুয়ার টাকা না থাকলে মাথা ঠিক থাকে না গিয়াস উদ্দিনের'

নরসিংদী প্রতিনিধি, আরটিভি নিউজ

  ২৪ মে ২০২২, ১৫:২১
'জুয়ার টাকা না থাকলে মাথা ঠিক থাকে না গিয়াস উদ্দিনের'
সংগৃহীত ছবি

নরসিংদীর বেলাবতে স্ত্রীর নামে করা ঋণের চাপ থেকে মুক্তি, জুয়ার টাকা না থাকা ও প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতেই দুই সন্তানসহ স্ত্রীকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেন স্বামী গিয়াস উদ্দিন শেখ।

মঙ্গলবার (২৪ মে) দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে পিবিআই নরসিংদীর পুলিশ সুপার এনায়েত হোসেন মান্নান আসামির দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে হত্যাকাণ্ডের বিস্তারিত বিবরণ দেন।

তিনি জানান, স্ত্রী ও শ্বশুর বাড়ির লোকজনের কাছ থেকে নেওয়া টাকা, বিভিন্ন সমিতির ও সুদের টাকা মিলিয়ে প্রায় ১০ লাখ টাকার ঋণে পরে সে। আর এই ঋণের চাপ থেকে মুক্তি, জুয়ার টাকা না থাকা ও প্রতিপক্ষ চাচাতো ভাইকে ফাঁসাতেই দুই সন্তানসহ স্ত্রীকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেন স্বামী। শনিবার গভীর রাতে ছুরিকাঘাত ও ক্রিকেট ব্যাট দিয়ে আঘাত করে স্ত্রী রহিমা বেগমকে হত্যা করেন। পরে রাতে তার বাড়িতে অবস্থানের কথা সন্তানরা বলে দেবে এমন আশঙ্কায় সন্তানদেরও খেলার ক্রিকেট ব্যাট দিয়ে পিটিয়ে ও শ্বাসরোধে হত্যা শেষে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যান।

পিবিআই এর পুলিশ সুপার আরও জানান, সন্দেহজনক তথ্য দেওয়ায় তাকে আটক করলে পুলিশী জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার দায় স্বীকার করে সে। হত্যা শেষে নাটক সাজাতে বাড়ি ছেড়ে যান তিনি। আটকের পর তার দেওয়া তথ্যমতে ওই গ্রামের গঙ্গাজলি বিল থেকে হত্যায় ব্যবহৃত ছুরি ও জঙ্গল থেকে রক্তমাখা ক্রিকেট ব্যাট উদ্ধার করে পিবিআই।

পিবিআই এর পুলিশ সুপার আরওও বলেন, পেশাদার জুয়াড়ি গিয়াস উদ্দিন শেখের হাতে জুয়ার টাকা না থাকলে মাথা ঠিক থাকে না। এছাড়া এক নারীর সঙ্গে তার ফোনে নিয়মিত কথা বলার তথ্যও পাওয়া গেছে। এসব বিষয় মাথায় রেখে আরও কেউ এই নির্মম হত্যার সঙ্গে জড়িত কী না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

গত শনিবার (২১ মে) গভীর রাতে ছুরিকাঘাত ও ক্রিকেট ব্যাট দিয়ে আঘাত করে নির্মমভাবে স্ত্রী সন্তান হত্যার পর পালিয়ে যান তিনি। সকালে স্ত্রী সন্তানের মরদেহ উদ্ধারের খবর পেয়ে বাড়ি ফিরে প্রতিপক্ষের ওপর হত্যার দায় চাপানোর চেষ্টা করেন স্বামী গিয়াস উদ্দিন শেখ। পরে পিবিআই এর তদন্তে বেরিয়ে আসে হত্যার প্রকৃত রহস্য।

এদিকে গত রোববার সকালে প্রতিবেশিদের ডাকাডাকিতে সাড়া না দেওয়ায় ঘরে ঢুকে তিনজনের মরদেহ দেখতে পেয়ে বেলাব থানায় খবর দেয় স্থানীয়রা। খবর পেয়ে পাটুলী ইউনিয়নের ভাবলা গ্রামের রং মিস্ত্রী গিয়াস উদ্দিন শেখের নিজ দুই বসত ঘর থেকে স্ত্রী রহিমা বেগম (৩৫), একমাত্র ছেলে রাব্বি শেখ (১৩) ও একমাত্র মেয়ে রাকিবা শেখ (৬) এর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। খবর পেয়ে ছুটে আসেন বাড়িতে না থাকা রঙ মিস্ত্রী গৃহকর্তা গিয়াস উদ্দিন শেখ। এসময় সীমানা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে চাচাতো ভাই এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে থাকতে পারেন বলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও গণমাধ্যমের কর্মীদের নিকট সন্দেহ প্রকাশ করেন তিনি। পেশাগত কাজে বাড়ির বাইরে অবস্থান করাসহ তার দেওয়া অন্যান্য তথ্য সন্দেহজনক হওয়ায় তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে পুলিশ। রোববার রাতে নিহত রহিমা বেগমের ভাই মোশারফ হোসেন বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামি করে বেলাব থানায় হত্যা মামলা করেন।

এদিকে পিবিআই এর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্ত্রী সন্তানকে হত্যার কথা স্বীকার করেন আটক স্বামী গিয়াস উদ্দিন শেখ। পরে গতকাল সোমবার বিকেলে নরসিংদীর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রকিবুল হকের আদালতে মামলার একমাত্র আসামি হিসেবে হত্যার দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন স্বামী।

এখন পর্যন্ত বেলাব থানায় অজ্ঞাত আসামি করে করা মামলায় গিয়াস উদ্দিন শেখকে একমাত্র আসামি করা হয়েছে। আদালত তাকে জেলহাজতে পাঠিয়েছেন। এই হত্যা মামলাটি তদন্তের জন্য পিবিআই এর নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে। তবে পরকীয়া ও ঋণের মোট কত টাকা আছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
জোরপূর্বক ব্যাংক একীভূতকরণ দায়মুক্তির নতুন মুখোশ: টিআইবি
বাংলা ভাষায় মুক্তি পাবে ‘পুষ্পা টু’, কণ্ঠ দিচ্ছেন যে বাঙালি গায়ক
প্রেমিকাকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে প্রেমিক গ্রেপ্তার
প্রেম করে বিয়ের ২ মাসের মাথায় প্রবাসীর স্ত্রীর আত্মহত্যা 
X
Fresh