• ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
logo

কচুর লতি বিক্রি করে ভাইরাল সেই অধ্যাপক

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি, আরটিভি নিউজ

  ১৫ মে ২০২২, ১৫:৫১
কচুর লতি বিক্রি করে ভাইরাল সেই অধ্যাপক
কচুর লতি বিক্রি করছিলেন ড. আবু বকর সিদ্দিক প্রিন্স

বাজারে বসেই কচুর লতি বিক্রি করছিলেন ড. আবু বকর সিদ্দিক প্রিন্স নামে এক অধ্যাপক!

ছোট একটি বাজার ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলার রাঙ্গামাটিয়া ইউনিয়নের বাবুলের বাজার। ছোট এই বাজারে বসে ড. আবু বকর সিদ্দিক প্রিন্স নামে এক অধ্যাপক কচুর লতি বিক্রি করছিলেন।

এই দৃশ্য দেখে অনেকে আশ্চর্য হয়। অনেকে ছবি তুলছেন। অনেকে আবার অবাক দৃষ্টিতে দেখছেন। সেই ছবির কয়েকটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরালও হয়ে যায়।

কচুর লতি বিক্রি করা সেই শিক্ষক বরিশাল ট্রাস্ট ইউনিভার্সিটির সহকারী অধ্যাপক ও মার্কেটিং বিভাগের প্রধান। পরিবার নিয়ে ঢাকায় বসবাস করলেও কৃষিকে ভালোবাসে তিনি রাঙ্গামাটিয়া ইউনিয়নে হাতিলেইট গ্রামে শ্বশুরবাড়ি এলাকায় বাণিজ্যিকভাবে চাষাবাদ শুরু করেছেন। ৮ একর জমিতে গড়ে তুলেছেন ‘কিষান সমন্বিত কৃষি উদ্যোগ’ নামে একটি কৃষি খামার। নিজের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বছরে ছয় মাস ছুটি নিয়ে খামারে কৃষিকাজ করেন প্রিন্স। স্থানীয় প্রায় সবধরনের কৃষিপণ্য উৎপাদন করেন।

জানা গেছে, অধ্যাপক প্রিন্সের বাড়ি বরিশালের ঝালকাঠির রাজাপুরে। তার বাবা ছিলেন একজন সেনা কর্মকর্তা। বাবার চাকরির সুবাধে পরিবারসহ ঢাকায় আর্মি কলোনিতে থাকতেন। ২০০২ সালে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর শেষ করেন। পরে ২০০৮ সালে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এআইইউবি থেকে কৃষি ব্যবসায় এমবিএ ডিগ্রি নেন। ২০১৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমফিল এবং ২০১৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন।

ড. প্রিন্স বলেন, জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে, সেইসঙ্গে আমাদের কৃষিজমির সংখ্যা কমছে। এ পরিস্থিতিতে অল্প জায়গায় উৎপাদন করতে হবে বেশি। নইলে ভবিষ্যতে খাদ্য ঘাটতি দেখা দেবে। সেই চিন্তা থেকেই আমি বাগান করি। পরিকল্পিত একটি ফলের বাগান গড়তে সময় লাগে কমপক্ষে সাত থেকে আট বছর। ‘কিষান সমন্বিত কৃষি উদ্যোগ’ বাগানটির বয়স হয়েছে সাত বছরেরও বেশি। দেশে আরও অনেক কৃষি উদ্যোক্তা তৈরি করতে।

নিরাপদ ও বিষমুক্ত ফল আবাদ করাই প্রিন্সের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য। তারা বাগানে রাসায়নিক সারের পরিবর্তে নিজের উৎপাদিত কেঁচো সার ও জৈব সার ব্যবহার করেন। ফলগাছে পোকা-মাকড় নিধনে বেশি ব্যবহার করেন বিভিন্ন ধরনের ট্র্যাপ বা ফাঁদ।

‘কিষান সমন্বিত কৃষি উদ্যোগ’ নামে তার বাগানে আছে, দেশি-বিদেশি পাঁচ হাজার ফলগাছের একটি নার্সারি রয়েছে বাগানে। এ ছাড়া তিন প্রজাতির পাঁচ হাজার ড্রাগন ফল গাছ। আছে মাহালিশা, কিউজাই, ব্রুনাই কিং, বাউ-৪, কাঁচামিঠা, তাইওয়া গ্রিন, কাটিমন, পালমার, মল্লিকাসহ ১০ প্রজাতির আম, চায়না থ্রি, মঙ্গলবারিসহ তিন প্রজাতের লিচু, মিশরীয় শরিফা, স্ট্রবেরি, চেরি, থাই পেয়ারা, আম, লেবু, জাম্বুরা, লটকন, মাল্টা, সফেদা, আতাফল, কদবেল, আমলকি, ডেউয়া, ডুমুর, কাঠবাদাম, জামরুল, থাই জাম্বুরা, লটকন, মল্টা ও কলা ইত্যাদি ফলগাছ।

‘কিষান সমন্বিত কৃষি উদ্যোগ’ নামের একটি ফেসবুক গ্রুপে আবু বকর সিদ্দিক প্রিন্স লিখেছেন, স্থানীয় বাজারে ১৬ কেজি কচুর লতি বিক্রি করলাম, কেজি ৫০ টাকা। বাজারের সবচেয়ে দামি সবজি এখন। পাইকার বলেছিল ৪০ টাকা, দিই নাই। তবে লতির সম্ভবত জাত পাত আছে। আরেকটু মোটা সেগুলো একটু কম। যদিও তিন জনের কাছ থেকে বাজার দামের থেকেও কম নিয়েছি। কারণ, তাদের কাছে লতি কেনার তেমন টাকা ছিল না। লতিটা বিলের পাশের এলাকার একটা অভিজাত আইটেম। কারণ, এখানে হরহামেশা গুঁড়া মাছ পাওয়া যায়। আইডিয়ায় নেওয়া। মনে হচ্ছিল, খেতে এক মণ উৎপাদন হলে হলেও বিক্রি হতো। এই সময় ধান কাটা কামলাদের হাতে টাকা থাকে।

পোস্টে তিনি আরও লেখেন, পোস্টটি দেখার পর ছবির পাশের পিচ্চিটার জন্য মায়া লাগতেছে, বেচারার বয়স সম্ভবত ৫-৬ বছর হবে। আমাদের ৫-৬ বছর বয়সের বাচ্চাদের সঙ্গে একটু পার্থক্য করি।

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
প্রাইভেটকারে আগুন লেগে কৃষক লীগ নেতাসহ নিহত ২
ভৈরবে বোরো ধানের বাম্পার ফলন, শঙ্কায় কৃষক
বিয়ের কেনাকাটা করে বাড়ি ফেরা হলো না চাচা-ভাতিজির
ময়মনসিংহে ট্রেনে কাটা পড়ে ২ জনের মৃত্যু
X
Fresh