• ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
logo

দাবদাহ-লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ খাগড়াছড়ির মানুষ (ভিডিও)

মো. শাহরিয়ার ইউনুস, খাগড়াছড়ি

  ০৮ জুন ২০১৭, ১৩:০২

প্রচণ্ড দাবদাহে চরম দুর্বিসহ জীবনযাপন করছে খাগড়াছড়ির মানুষ। গরমে বিপাকে পড়েছে শ্রমিক, কৃষক, ছাত্র-ছাত্রী, অফিস-আদালতগামী মানুষ। সকালের রোদের আলোয় জানিয়ে দেয় সারা দিনের দাবদাহ কেমন হবে। রমজানের শুরু থেকেই এ জেলায় গরমের মাত্রা যেনো বেড়েই চলেছে। গরমের তীব্রতায় ডায়রিয়া, নিউমোনিয়াসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশুসহ অনেকেই। তারমধ্যে লোডশেডিংয়ের ভোগান্তিতো আছেই।

এ দাবদাহ যেনো কেড়ে নিয়েছে সাধারণ মানুষের স্বস্তি। জেলাজুড়ে গরমের তাপমাত্রা বাড়তি থাকায় শহরের ব্যস্ততম সড়ক গুলো বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে অনেকটা ফাঁকা হয়ে যায়। কেউ গাছের ছায়ার নিচে আবার কেউ রাস্তার পাশে শরবতের দোকানে আশ্রয় নিতে দেখা যাচ্ছে। সেখান থেকে কিছুটা শীতল হয়ে ফিরলেও তা বেশিক্ষণ ধরে রাখা সম্ভব হয়ে না।

অপরদিকে এ গরমে সাধারণ যানবাহন রিকশা ও টমটম সড়কে তেমন একটা দেখাই মিলে না। এতে শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষের ভোগান্তির পাশাপাশি আয় কমেছে খেটে খাওয়া মানুষের।

শহর ঘুরে কয়েকজন পথচারী ও রাস্তার পাশের ফুটপাতের বিভিন্ন ধরণের দোকান নিয়ে বসা দোকানিরা জানান, বেচা কেনা দূরের কথা রোদের তাপে সড়কের পাশে বসাই যাচ্ছে না। গরমের তাপে অতিষ্ঠ হয়ে দুপরের আগেই বাসায় চলে যাওয়া লাগে। তাছাড়া ক্রেতাই পাওয়া যাই না।

টমটম ও রিকশা চালকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গরমের কারণে তারা দীর্ঘ সময় ধরে টমটম ও রিকশা চালাতে পারে না। তাপমাত্রা বাড়ার আগ পর্যন্ত যে ভাড়া পাওয়া যায় তা নিয়েই অনেকে বাসায় ফিরে যায়।

ট্রাক্টর চালক জানান, আগে দিনে ৮-১০ বার ভাড়া টানতে পারলেও দাবদাহের কারণে এখন তা সম্ভব হয় না। গরমের কারণে এখন কমে ৩-৫ বার ভাড়া টানতে পারি।

চিকিৎসকরা বলছেন, তীব্র গরমে শরীর থেকে অতিরিক্ত ঘাম ঝরছে। এতে শরীর থেকে লবণ বের হয়ে যায়। ফলে শরীরের রক্তচাপ কমে যায়, দুর্বল লাগে, মাথা ঝিমঝিম করে। যারা বাইরে কাজ করেন, প্রয়োজনীয় পানি পানের সুযোগ পান না, তারা মারাত্মক পানিস্বল্পতার শিকার হচ্ছেন। শ্রমজীবী মানুষই এর শিকার হচ্ছেন বেশি।

অন্যদিকে তাপদাহের কারণে সর্দি, কাশি আর নিউমোনিয়াসহ জেলায় বেড়েছে শিশুদের নানা রোগ। হাসপাতালে বাড়ছে রোগীর সংখ্যা।

শিশুদের পরিবারদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গেলো ৭-৮ দিনের গরমে তাদের শিশুরা জ্বর সর্দি কাশিতে আক্রান্ত হচ্ছে।

খাগড়াছড়ি আধুনিক জেলা সদর হাসপাতালের মেডিক্যাল অফিসার ডাক্তার রাজর্ষি চাকমা জানান, গেলো এক সপ্তাহে ধরে সর্দি, জ্বর, কাশি নিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসেছে অনেকে। এরমধ্যে কিছু কিছু ক্ষেত্রে সিবিআর, নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত শিশুরাও আসছে। সেক্ষেত্রে তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হচ্ছে।

গরম আর রোগের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে জেলায় বিদ্যুতের ভোগান্তি। টানা লোডশেডিং ও মাত্রাতিরিক্ত লো-ভোল্টেজে নাকাল এখানকার মানুষ। গরমে হাঁসফাঁস করে বাঁচলেও বিদ্যুতের এ ভোগান্তি যেন এখানকার জনসাধারণকে ভোগাচ্ছে প্রতিনিয়ত। এ ভোগান্তির চাপ পড়েছে শিশুদের পড়া-লেখায়ও।

বিদ্যুতের এমন ভোগান্তির স্বীকার করে এ সমস্যার কারণ তুলে ধরেন খাগড়াছড়ি বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগের সহকারি প্রকৌশলী মো. আলাউদ্দীন সোহাগ। দিলেন রমজানে বিদ্যুতের লোডশেডিং আর লো-ভোল্টেজ সহনীয় রাখার আশার বাণী।

তাপদাহের সাময়িক যন্ত্রণা সহ্য করে নিলেও বিদ্যুৎ ভোগান্তির স্থায়ী সমাধান চান পার্বত্য খাগড়াছড়িবাসী।

এসএস

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh