• ঢাকা শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
logo

সন্দেহ-সংশয়ের ভোটে কঠোর নিরাপত্তায় নারায়ণগঞ্জ

  ১৫ জানুয়ারি ২০২২, ১৪:৫৬
সন্দেহ-সংশয়ের ভোটে কঠোর নিরাপত্তায় নারায়ণগঞ্জ
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে কঠোর নিরাপত্তা

নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন (নাসিক) নির্বাচনে প্রচার-প্রচারণা শুক্রবার মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। এখন ভোটের অপেক্ষায় নারায়ণগঞ্জ সিটির ৩০ লাখ বাসিন্দা। এই বিশাল জনগোষ্ঠীর মধ্যে এবার সিটি নির্বাচনের মোট ভোটার ৫ লাখ ১৭ হাজার ৩৬১ জন। ভোটারদের মধ্যে পুরুষ ভোটার ২ লাখ ৫৯ হাজার ৮৩৯ জন, নারী ভোটার ২ লাখ ৫৭ হাজার ৫১৮ এবং তৃতীয় লিঙ্গ ৪ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। ভোটারদের মধ্যে ৪২ হাজার ৪৩০ জন নতুন ভোটার রয়েছেন।

এর আগে গতকাল শুক্রবার সারাদিন মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা প্রচার-প্রচারণা, গণমিছিল, পথসভার মাধ্যমে উত্তাপ ছড়িয়েছে সিটি করপোরেশন এলাকায়। চোখে পড়ার মতো গণমিছিল আওয়ামী লীগের মেয়রপ্রার্থী ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী ও স্বতন্ত্র প্রার্থী তৈমূর আলম খন্দকারের। কাউন্সিলর প্রার্থীরাও তাদের নিজ নিজ ওয়ার্ডে প্রচারণার ক্ষেত্রে পিছিয়ে নেই।

এবার নির্বাচনে মোট সাতটি দল অংশগ্রহণ করেছে। মেয়র পদে নির্বাচন করছেন ৭ জন। সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১৪৮ জন এবং সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ৩৪ জন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন।

এবারই প্রথম নারায়ণগঞ্জ সিটির সব কেন্দ্রে ইভিএমে ভোট হবে। ৫ লাখ ১৭ হাজারের বেশি ভোটার রায় দেবেন মেয়র, সাধারণ কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর (নারী) প্রার্থীদের। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভী ও স্বতন্ত্র প্রার্থী তৈমূর আলম খন্দকার রয়েছেন মেয়র পদে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতায়। তাদের ছাড়াও মেয়র পদে লড়াইয়ে আছেন আরও পাঁচ প্রার্থী। এর আগে গত ২৮ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দ পেয়েই প্রার্থীরা নেমে পড়েছিলেন প্রচারের মাঠে। তাদের সেই আনুষ্ঠানিক প্রচারের সময় শেষ হলো শুক্রবার মধ্যরাতে।

জমজমাট প্রচারের শেষ দিনে নানান অভিযোগ করেছেন প্রধান দুই প্রার্থী। ভোটের পরিবেশ নিয়ে শঙ্কার কথা বলে আবার নিজেদের জয়ের আশাও প্রকাশ করেছেন তারা।

এদিকে নাসিকের ২৭টি ওয়ার্ডে ঘুরে দেখা গেছে, উৎসবমুখর পরিবেশে কাউন্সিলর প্রার্থী ও তাদের সমর্থকরা বাদ্য-বাজনা সহকারে নেচে-গেয়ে রাত পর্যন্ত ভোটারদের দ্বারে দ্বারে নিজ নিজ প্রতীকে ভোট চান প্রার্থীরা। সিটির অলিগলিসহ প্রধান প্রধান সড়ক পোস্টারে পোস্টারে ছেয়ে গেছে।

গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় শহরের ২ নম্বর রেলগেট এলাকায় বঙ্গবন্ধু সড়কে আইভীর নৌকা প্রতীকের সমর্থনে পথসভা হয়। বের করা হয় মিছিল। অন্যদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী তৈমূর আলম খন্দকারের হাতি প্রতীকের সমর্থনে বন্দরের সিরাজুদ্দৌল্লাহ ক্লাব মাঠে নির্বাচনি সভা শেষে একটি মিছিল বন্দরের বিভিন্ন এলাকা প্রদর্শন করে। শনিবার সকালে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়রপ্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভী ও স্বতন্ত্র প্রার্থী তৈমূর আলম খন্দকার সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।

গতকাল শহরের মিশনপাড়া এলাকায় নিজের প্রধান নির্বাচনি ক্যাম্পে তৈমূর আলম খন্দকার অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগ প্রার্থীর নির্বাচন পরিচালনা কমিটি চাপ সৃষ্টি করে জনতার রায়কে ভিন্ন খাতে নেওয়ার চেষ্টা করছে। তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন হোটেলে সরকারদলীয় নেতারা অবস্থান নিয়েছেন। সার্কিট হাউস ও ডাকবাংলো ব্যবহার করছেন। তাদের কারণে নারায়ণগঞ্জের নির্বাচনি পরিবেশ নিয়ে জনমনে সংশয় সৃষ্টি হয়েছে। আমাকে ও আমার কর্মীদের বিভিন্নভাবে হয়রানি করা হচ্ছে।

অন্যদিকে দেওভোগস্থ চুনকাকুটিরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়রপ্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভী বলেন, তরুণ ও নারী ভোটাররা আমাকেই ভোট দেবে। ভোটকেন্দ্রে যাতে কোনো সহিংসতা ও বিশৃঙ্খলা না হয়, সেদিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নজর রাখতে হবে। ভোটাররা ভোটকেন্দ্রে আসতে পারলে আমার বিজয় নিশ্চিত।

লাখো ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হওয়ার আশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, আমাকে পরাজিত করতে অনেকগুলো পক্ষ মাঠে কাজ করছে।

একনজরে নাসিক নির্বাচন

নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের এবারের নির্বাচনে মেয়র পদে ৭ জন, সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১৪৮ জন ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৩২ জন লড়ছেন।

নারায়ণগঞ্জে রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন ঢাকার আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মাহফুজা আক্তার। তার সঙ্গে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে আছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ মতিয়ুর রহমান, থানা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান, আবদুল কাদির, আফরোজা খাতুন প্রমুখ। প্রতি কেন্দ্রে থাকছেন একজন করে প্রিসাইডিং কর্মকর্তা। ১ হাজার ৩৩৩ জন সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা।২ হাজার ৬৬৬ জন পোলিং কর্মকর্তা। ১৯২ কেন্দ্রের ১ হাজার ৩৩৩টি কক্ষ।

নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে ৩০ জন ম্যাজিস্ট্রেট থাকবেন বলে জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জায়েদুল আলম জানিয়েছেন। প্রতিটি কেন্দ্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কমপক্ষে চার থেকে পাঁচটি টিম থাকবে; যার প্রতিটি টিমে ৪ থেকে ৫ জন পুলিশ সদস্য ও ২০ থেকে ২২ জন আনসার সদস্য থাকবেন। এ ছাড়া নির্বাচনকালে ১৪ প্লাটুন বিজিবিসহ ২৭টি ওয়ার্ডে ও শহরে ৫ হাজার র‍্যাব ও পুলিশ মোতায়েন থাকবে। এ ছাড়া ২৭টি ওয়ার্ডে ২৭ জন ম্যাজিস্ট্রেট এবং ৯ জন ভ্রাম্যমাণ ম্যাজিস্ট্রেট নির্বাচনকালে দায়িত্ব পালন করবেন।

এমআই/টিআই

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
‘আগামী নির্বাচনে অংশ না নিলে বিএনপির অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যাবে’
‘উপজেলা পরিষদ নির্বাচন উৎসব মুখর পরিবেশে হবে’
উপজেলা নির্বাচন ঘিরে দূরত্ব বাড়ছে বিএনপির কেন্দ্র ও তৃণমূলে 
শিল্পী সমিতির নির্বাচনে জিতে যা বললেন মিশা সওদাগর
X
Fresh