• ঢাকা শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
logo

কেন্দ্রের মধ্যেই স্বাস্থ্য কর্মকর্তার সঙ্গে অসদাচরণ, টিকাদান কর্মসূচি বন্ধ

চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি, আরটিভি নিউজ

  ২২ নভেম্বর ২০২১, ১১:৪৩
কেন্দ্রের মধ্যেই স্বাস্থ্য কর্মকর্তার সঙ্গে অসদাচরণ, টিকাদান কর্মসূচী বন্ধ
ফাইল ছবি

চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার স্বাস্থ্য ও পরিবার-পরিকল্পনা কর্মকর্তার সঙ্গে অসদাচরণের অভিযোগ উঠেছে দুই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। এ সময় মারধর করা হয় তার গাড়িচালককে। এর প্রতিবাদে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে আলমডাঙ্গা উপজেলায় অস্থায়ী স্বাস্থ্য কেন্দ্রের টিকাদান কর্মসূচি। টিকাদান কেন্দ্র বন্ধ হয়ে যাওয়ায় চরম বিপাকে পড়েছেন টিকাপ্রত্যাশীরা। ওই ঘটনায় দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।

আজ সোমবার (২২ নভেম্বর) জেলা প্রশাসককে বিষয়টি অবহিত করবেন বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) চুয়াডাঙ্গার নেতারা।

এর আগে রোববার দুপুরে চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন কার্যালয়ে টানা ১ ঘণ্টা জরুরি বৈঠক করেছেন জেলার তিন উপজেলার স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা, বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) চুয়াডাঙ্গার সভাপতিসহ জেলার ১৭ জন চিকিৎসক। অভিযুক্ত দুই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে মানববন্ধনের মাধ্যমে কঠোর কর্মসূচির ঘোষণার হুঁশিয়ার দিয়েছেন চিকিৎসকরা।

আলমডাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার-পরিকল্পনা কর্মকর্তা হাদি জিয়া উদ্দিন আহমেদ জানান, গত বৃহস্পতিবার সকালে মুন্সীগঞ্জ উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রে প্রচুর ভিড় হওয়ায় আমাকে বিষয়টি জানান সেখানে দায়িত্বে থাকা চিকিৎসক। কিছুক্ষণ পর ওই কেন্দ্র পরিদর্শনে যাই। ভিড় উপেক্ষা করে আমি কেন্দ্রের ভেতরে যাই। এ সময় আমার গাড়িচালক নুর আলম টিকাকেন্দ্রে ঢুকতে গেলে সেখানে দায়িত্বরত মুন্সীগঞ্জ পুলিশ ক্যাম্পের উপপরিদর্শক সালাউদ্দিন ও সহকারী উপপরিদর্শক মখলেছুর রহমান তাকে বাধা দেয়। পরিচয় দেওয়ার পরও বাকবিতণ্ডা শেষে ওই দুই পুলিশ কর্মকর্তা নুর আলমকে চড়-ঘুসি ও মারধর করে। ঘটনাটি আমার সামনে হওয়ায় এগিয়ে গিয়ে পরিচয় দেওয়া সত্ত্বেও আমার সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন ওই দুই পুলিশ কর্মকর্তা। একপর্যায়ে আমাকে মারার জন্য রুখে আসে তারা। পরে আমার নাম জিজ্ঞাসা করে খাতায় লিখতে যায়। আমি লজ্জায় অপমানিত হয়ে কেন্দ্র থেকে চলে আসি।

তিনি আরও বলেন, আমার চালকও একজন স্বাস্থ্যকর্মীর মধ্যেই পড়ে। তারা তাকে মারধর করতে পারেন না। স্বাস্থ্যকেন্দ্রের মধ্যেই যদি পুলিশ কর্তৃক মারধর ও লাঞ্ছিতের শিকার হতে হয়, তাহলে আমাদের নিরাপত্তা কে দেবে?

তিনি বলেন, আমি ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে পুলিশ প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন, জেলা স্বাস্থ্য বিভাগসহ জেলা মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনকে জানিয়েছি। এ ছাড়া শনিবার ওই দুই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে সিভিল সার্জন বরাবর একটি চিঠি পাঠিয়েছি। ওই ঘটনার পর থেকে আলমডাঙ্গা উপজেলায় অস্থায়ী স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোতে অনির্দিষ্টকালের জন্য টিকাদান কর্মসূচি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। শুধু আলমডাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে টিকাদান কর্মসূচি অব্যাহত রয়েছে। বাকি অস্থায়ী পাঁচটি কেন্দ্রে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে টিকাদান কর্মসূচি।

বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) চুয়াডাঙ্গা শাখার সভাপতি ডা. মার্টিন হীরক চৌধুরী জানান, ওই ঘটনার বিষয়ে সিভিল সার্জনের সঙ্গে বৈঠক করেছি আমরা জেলার ১৭ জন চিকিৎসক। আগামীকাল সোমবার (২২ নভেম্বর) জেলা প্রশাসকের কাছে যাব। ওই দুই পুলিশ কর্মকর্তার শাস্তি না হলে আগামী মঙ্গলবার আলমডাঙ্গা উপজেলায় ও সদর হাসপাতাল চত্বরে মানববন্ধনের মাধ্যমে কঠোর কর্মসূচিতে দেওয়া হবে।

পুলিশ সুপার জাহিদুল ইসলাম জানান, ঘটনার দিন বিকেলেই অভিযুক্ত দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে মুন্সীগঞ্জের পুলিশ ক্যাম্প থেকে আলমডাঙ্গা থানায় বদলি করা হয়েছে। আমরা বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করছি। সত্যতা পেলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এসএস/টিআই

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh