• ঢাকা মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১
logo

রাজবাড়ীর পদ্মায় ভয়াবহ ভাঙন চলছেই

রাজবাড়ী প্রতিনিধি, আরটিভি নিউজ

  ২৯ অক্টোবর ২০২১, ১৭:৫১
রাজবাড়ীর পদ্মায় ভয়াবহ ভাঙন চলছেই
রাজবাড়ীর পদ্মায় ভয়াবহ ভাঙন, ছবি : প্রতিনিধি

শত চেষ্টা করেও রাজবাড়ীর পদ্মার ভাঙন ঠেকানো যাচ্ছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ড গত দুই মাসে বালুভর্তি হাজার হাজার জিও ব্যাগ ফেললেও পদ্মার গোদার বাজার, সিলমপুর ও মৌলভীরঘাট এলাকার নদীর ভাঙন ঠেকানো যাচ্ছে না। স্থানীয়রা অবশ্য শুষ্ক মৌসুমে কাজ না করে বর্ষায় কাজ করাকেই মূলত দায়ী করছেন।

গত দুই দিন ধরে ফের ভয়াবহ ভাঙন দেখা দিয়েছে রাজবাড়ীর পদ্মায়। মুহূর্তের মধ্যে নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে অন্তত দেড়শ মিটার শহররক্ষা বাঁধের স্থায়ী পাইলিং। সরিয়ে নিতে হয়েছে অন্তত ১৫টি বসতবাড়ি। এখন মারাত্মক ঝুঁকিতে পরেছে রাজবাড়ী শহররক্ষা বাঁধ। ভাঙন ঝুঁকিতে শত শত বসতবাড়ি, মসজিদ, বিদ্যালয়সহ বহু স্থাপনা।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, পদ্মায় হঠাৎ পানি বাড়ায় প্রচণ্ড ঘূর্ণায়মান স্রোতের টানে দুইদিন ধরে হঠাৎ ভয়াবহ ভাঙন দেখা দেয় রাজবাড়ী পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের গোদার বাজার এলাকায়। মুহূর্তেই নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে স্থায়ী পাইলিংয়ের সিসি ব্লক। আর শহর রক্ষা বাঁধ ঘেঁষে থাকা বসতবাড়িগুলো ভেঙে অন্য স্থানে সরাতে ব্যস্ত বাসিন্দারা। গত দুই দিনে সরিয়ে নিতে হয়েছে ১৫টি বসতবাড়ি।

গোদার বাজার এলাকার বাসিন্দা সবুজ আহম্মেদ বলেন, গত জুন মাসে ৩৭৬ কোটি টাকা ব্যয়ে রাজবাড়ী শহররক্ষা বাঁধের স্থায়ী পাইলিংয়ের কাজ শেষ হয়। কাজ শেষ হওয়ার একমাস পর থেকে ছয় দফার ভাঙনে নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে ১ হাজার মিটারেরও বেশি এলাকা। বাঁধের ২০টি পয়েন্টে এ বছর ভাঙন দেখা দিয়েছে। এসব এলাকা থেকে সরিয়ে নিতে হয়েছে অন্তত ২০০ বসতবাড়ি। তাই দাবি উঠেছে কাজের মান ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের তদারকি নিয়ে।

স্থানীয় বাসিন্দা খায়রুল ইসলাম বলেন, রাজবাড়ী শহর রক্ষার জন্য শত শত কোটি টাকা ব্যয়ে যে কাজ হয়েছে, তার কোনো তদারকি না থাকা ও কাজের মান ভালো না হওয়ায় আজকের এই ভাঙন। দুর্নীতিবাজরা লাভবান হয়েছে আর ক্ষতি হচ্ছে আমাদের। এখন শহররক্ষা বাঁধের ওপর আশ্রয় নিতে হবে। আর বাঁধ ভেঙে গেলে পানি ঢুকে পড়বে শহরে। তখন বুঝবে শহরের বড় বড় অট্টালিকায় থাকা বড় বড় মানুষেরা।

গোদার বাজার এলাকার বাসিন্দা হাসিনা পারভীন বলেন, ভাঙনের তীব্রতা এতই বেশি যে আতঙ্কিত না হয়ে উপায় নেই। বসতভিটা পরিবার-পরিজন নিয়ে মারাত্মক চিন্তায় আছি। এখন যাওয়ার মতো আর কোনো জায়গা নেই। সরকার যদি এখনই ব্যবস্থা গ্রহণ না করে তবে বড় ধরনের বিপর্যয় নেমে আসবে।

ভাঙন ঝুঁকিতে থাকা গোদার বাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মোকসেদুল মোমিন বলেন, যেভাবে ভাঙন শুরু হয়েছে এখনই ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে গোদার বাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, গোদার বাজার জামে মসজিদ, গোদার বাজার মাদরাসাসহ শত শত বসতবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হবে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) রাজবাড়ীর নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুল আহাদ বলেন, আমরা তিনবার সার্ভে করেছি। তিনবারই দেখেছি নদীর পদ্মার গতিপথ পরিবর্তন হয়েছে। হঠাৎ করে ভাঙন যে আকার ধারণ করেছে তাতে মনে হচ্ছে জিও ব্যাগে এই ভাঙন রোধ করা সম্ভব নয়। ফেলতে হবে জিও টিউব। জিও টিউব ফেলার জন্য পর্যাপ্ত মেশিন ও শ্রমিক প্রয়োজন। ভাঙন ঠেকাতে দুইদিন ধরে আমরা টিউব ব্যাগ নদীতে ফেলছি।
পি/টিআই

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
পদ্মায় গোসলে নেমে ৩ কিশোরের মৃত্যু
বন্ধুদের সঙ্গে গোসল করতে নেমে আর ফিরল না সোহান
ছুটির ৫ দিনে পদ্মা সেতুতে যত টাকার টোল আদায়
পদ্মায় গোসল করতে নেমে ২ শিশু নিখোঁজ 
X
Fresh