• ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
logo

কুমিল্লার পর চাঁদপুরে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ, ১৪৪ ধারা জারি

আরটিভি নিউজ

  ১৪ অক্টোবর ২০২১, ০৮:৫২
ফাইল ছবি

কুমিল্লায় মন্দিরে ‘কোরআন শরীফ’ অবমাননার এমন একটি ঘটনার তথ্য ছড়িয়ে পড়লে সংশ্লিষ্ট মন্দিরে হামলার ঘটনা ঘটে। সেটির জেরে পাশের জেলা চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ বাজার সংলগ্ন একটি মন্দিরেও হামলা ও ভাঙচুর হয়েছে। হাজীগঞ্জের মন্দিরটির নাম লক্ষ্মীনারায়ণ জিওর আখড়া মন্দির। ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল বুধবার (১৩ অক্টোবর) দিনগত রাতে। এ ঘটনায় হামলাকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষও হয়েছে, উপজেলায় জারি হয়েছে ১৪৪ ধারা, মোতায়েন করা হয়েছে বিজিবি। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রথমে লাঠিচার্জ করে। পরে পরিস্থিতি ঘোলাটে দেখে শর্টগানের গুলি নিক্ষেপ করে পুলিশ।

সংঘর্ষের পর হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ৩ জনের মরদেহ আসার কথা জানিয়েছেন কর্তব্যরত চিকিৎসক সুলতান মাহমুদ। তবে সংঘর্ষে কারও নিহত হওয়ার বিষয়ে পুলিশ নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারেনি। মরদেহ ৩টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রয়েছে বলে জানা গেছে।

এ ঘটনায় শ্রমিকসহ যে ৩ জন নিহত হয়েছেন তারা হলেন- হাজীগঞ্জের ৬নং বড়কুল ইউনিয়নের রায়চোঁ গ্রামের চৌধুরী বাড়ির এসএসসি পরীক্ষার্থী মো. আল আমিন রাজু (১৮), রান্ধুনিমুড়ার ইয়াসিন হোসেন হৃদয় (১৪), হাজীগঞ্জের বিজনেস পার্কের শ্রমিক চাঁপাইনবাবগঞ্জের বাবলু (২৮)। হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডিউটি অফিসার ডা. সুলতান মাহমুদ জানান, এ ঘটনায় পুলিশসহ আহত হয়েছেন কমপক্ষে ৫০ জন।

এদিকে হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. এসএম শোয়েব আহমেদ চিশতী জানান, হাসপাতালে অন্তত ১০ জন গুরুতর আহত অবস্থায় এসেছেন। তাদের কয়েকজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রেফার্ড করা হয়েছে।

নিহত আল আমিন রাজুর মা জানিয়েছেন তার ছেলে পত্রিকা কিনতে বাজারে গিয়েছিলো। অন্যদিকে স্থানীয়রা জানায়, রাজমিস্ত্রি বাবলু আন্দোলনকারীদের সঙ্গে ছিলেন না।

হাজীগঞ্জ উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি রুহিদাস বণিক বলেন, ‘রাত ৮টার পর উপজেলার মণিনাগ এলাকা থেকে একটি মিছিল এসে মন্দিরে (লক্ষ্মীনারায়ণ জিওর আখড়া) হামলা চালায়। হাজীগঞ্জ বাজারের ওই মন্দির ছাড়াও আরও কয়েকটি স্থানে মন্দিরে হামলা হয়েছে।’

স্থানীয়রা বলছেন, ‘হামলাকারীদের পুলিশ বাধা দিলে সংঘর্ষ বেঁধে যায়। এসময় পুলিশ গুলি ছোড়ে।’

এ বিষয়ে হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হারুনুর রশিদ বলেন, ‘আমরা পরিস্থিতি সামাল দিতে প্রচেষ্টা চালিয়েছি। হামলাকারীদের শনাক্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা এসএম শোয়েব আহমেদ চিশতী বলেন, ‘৮-১০ জন গুরুতর আহত অবস্থায় এসেছে। তাদের কয়েকজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রেফার্ড (জেলা হাসপাতালে) করা হয়েছে।’

তিনজনের মৃত্যু কীভাবে হয়েছে, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনার আগে মারা গেছে নাকি পরে, সে বিষয়ে কিছু বলতে চাননি চিকিৎসকরা।

সংঘর্ষে নিহতের বিষয়ে নিশ্চিত করে কিছু বলতে না পারলেও ১৭ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন হাজীগঞ্জের ওসি হারুন।

চাঁদপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) মিলন মাহমুদ বলেন, ‘মৃত্যুর কথা শুনেছি। তবে কয়জন, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি এখনও।’

কতটি মন্দিরে ভাঙচুর হয়েছে- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সেটিও এখন নিশ্চিত করে বলতে পারছি না।’

পৌর এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি

সহিংস পরিস্থিতিতে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত হাজীগঞ্জ পৌর এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করেছে প্রশাসন। একই সঙ্গে গতকাল বুধবার রাতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে দুই প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে বলে জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ জানিয়েছেন।

হাজীগঞ্জ থানার ওসি হারুনুর রশিদ রাতে বলেন, ‘হাজীগঞ্জ বাজারের পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।’

কেএফ/এসকে

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
ইফতারি কিনতে গিয়ে সড়ক দুর্ঘটনা, নিহত ৩
গাজায় নিহত ৩২ হাজার ছুঁই ছুঁই
সিলেটে পিকআপ-লেগুনা সংঘর্ষ, নিহত ৩
মালয়েশিয়ায় বন্দুকযুদ্ধে বাংলাদেশিসহ নিহত ৩
X
Fresh