• ঢাকা শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
logo

ভোটের আগে ভোট দিয়ে প্রার্থী নির্বাচন করলো গ্রামবাসী

পঞ্চগড় প্রতিনিধি, আরটিভি নিউজ

  ০৩ অক্টোবর ২০২১, ১০:৪৪
ভোটের আগে ভোট দিয়ে প্রার্থী নির্বাচন করলো গ্রামবাসী
ভোটের আগে ভোট দিয়ে প্রার্থী নির্বাচন করলো গ্রামবাসী

দেশের সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর নির্বাচনের দিনক্ষণ ঠিক হয়। নির্ধারিত তারিখেই ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়, এটাই আইনগত নিয়ম। কিন্তু পঞ্চগড়ের একটি গ্রামে তাদের ইউপি সদস্য প্রার্থী নির্ধারণ করতে তফসিল ঘোষণার পূর্বেই গ্রামবাসীরা একত্রিত হয়ে তাদের ভোটপ্রদান করেছেন।

এরকম একটি ভোটপ্রদান পঞ্চগড়ে এর আগে কখনও দেখা যায়নি। ইউপি সদস্য হিসেবে ভোটে প্রার্থী করার জন্য ভোটের আগেই সরকারি ভোটের আদলে ভোটগ্রহণের ঘটনা বিরল। ইউপি নির্বাচনের জন্য এখনও তফসিল ঘোষণা হয়নি তার আগেই পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার ময়দানদিঘি ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের কেরানিপাড়া গ্রামের চারজন ইউপি সদস্য প্রার্থীর জনমত যাচাইয়ের জন্য অস্থায়ী ভোটকেন্দ্র করে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

গতকাল শনিবার (২ অক্টোবর) সকাল ১০টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে চলে বিকেল ৫টা পর্যন্ত। এ ঘটনায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলায়। মূলত আসন্ন ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ইউপি সদস্য প্রার্থী চূড়ান্ত করতে ভোট দিয়েছে বোদা উপজেলার ময়দানদিঘি ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের কেরানিপাড়া গ্রামবাসীদের এই আয়োজন।

গতকাল শনিবার (২ অক্টোবর) দুপুরে ময়দানদিঘি ইউনিয়নের কেরানীপাড়ার হায়াতুন নবীর বাড়ির সামনে দেখা যায়, সামিয়ানা এবং কাপড় দিয়ে তৈরি করা হয়েছে অস্থায়ী ভোটকেন্দ্র। কেন্দ্রের সামনে নারী পুরুষ ভোটারদের লাইন।

কেন্দ্রে ভোটারদের নিরাপত্তা দিচ্ছেন ওই গ্রামের যুবক হাসনুর নামে। তিনি যুবক আনসারের ভূমিকায়। কেন্দ্রের ভেতরে কেরানীপাড়া গ্রামের রবিউল ইসলাম নামে একজন রিটার্নিং অফিসারের ভূমিকা পালন করছেন।

মফিজুল ইসলাম প্রিজাইডিং অফিসার, সেলিম পোলিং অফিসার এবং আবুবক্কর সিদ্দিক নামে একজন পোলিং এজেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। অস্থায়ী ভোটকেন্দ্র বানিয়ে সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত চলে নিরবিচ্ছিন্ন ভোটগ্রহণ। জাঁকজমকপূর্ণ ভোটগ্রহণ দেখতে আশপাশের কয়েকটি গ্রামের লোকজন ছুটে আসে ভোট দেখার জন্য।

স্থানীয়রা আরটিভি নিউজকে জানিয়েছেন, গ্রামের শিক্ষিত যুবকদের দিয়ে রিটার্নিং অফিসার, প্রিজাইডিং অফিসার, ভোটগ্রহণকারী কর্মকর্তা বানানো হয়।চারজন প্রার্থী ওই নির্বাচনে অংশগ্রহন করেছেন ভোটের মাঠে। প্রার্থীরা হলেন কেরানীপাড়া গ্রামের মো. তোয়াবুর রহমান, আব্দুল মোতালেব, আব্দুর রহমান এবং শাহীনুর ইসলাম। ১৫৪ জন নারী পুরুষ ভোটপ্রদান করেন। চারজন প্রার্থীর নাম ও ছবি সম্বলিত ব্যালট পেপার ছাপানো হয় ভোটের আগের দিন। ব্যালট পেপারের মাধ্যমে গোপন বুথে সিল মেরে ভোটপ্রদান করেন ভোটাররা। লাইনে দাঁড়িয়ে উৎসবমুখর পরিবেশে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। শান্তিপূর্ণ ভোটগ্রহণের পর বিকেল সাড়ে ৫টায় শুরু হয় ভোট গণনা।

গণনা শেষে ফলাফল ঘোষণা করেন রিটার্নিং অফিসার রবিউল ইসলাম। এ সময় আব্দুল মোতালেবকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। তিনি ৪৯ ভোট পেয়েছেন তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দী প্রার্থী তোয়াবুর রহমান ৪৬, আব্দুর রহমান ৩০ এবং শাহিনুর ইসলাম পেয়েছেন ১৭ ভোট।

কেরানিপাড়া গ্রামের যুবক মফিজুল ইসলাম প্রিজাইডিং অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন তার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কেরানিপাড়া গ্রামের চারজন ইউপি নির্বাচনে সদস্য পদে নির্বাচন করতে চায়। এ নিয়ে তাদের পরিবারের মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। দ্বন্দ্ব সংঘাতে পরিণত হতে পারে, এমন আশঙ্কা থেকেই ওই গ্রামের শিক্ষিত যুবকরা উদ্যোগ নেয় অস্থায়ী ভোটকেন্দ্র বানিয়ে চার প্রার্থীর মধ্যে একজন প্রার্থী নির্বাচন করে আগামী ইউপি নির্বাচনে তার পক্ষে গোটা গ্রামবাসী সমর্থন দিয়ে কাজ করবে।

এই সিদ্ধান্তে গ্রামবাসী একমত হয়ে অস্থায়ী ভোটকেন্দ্র বানিয়ে শনিবার কেরানিপাড়া গ্রামে ভোটগ্রহণের আয়োজন করা হয়।

ভোট দিতে আসা আমিনা বেগম আরটিভি নিউজকে জানিয়েছেন, আমাদের গ্রামে ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বারপ্রার্থী চারজন। আমরা চাই একজন প্রার্থী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলে আমাদের গ্রাম থেকে মেম্বার নির্বাচিত হবে। চারজনের মধ্যে জনপ্রিয়তা যাচাইয়ের জন্য আমরা এই ভোটের আয়োজন করেছি। আমি নিজেও ভোট দিয়েছি ব্যালটের মাধ্যমে।

বিজয়ী প্রার্থী আব্দুল মোতালেবকে ফুলের মালা দিয়ে বরণ করেন গ্রামবাসীরা। এ সময় তাকে নিয়ে আনন্দ মিছিল করে এলাকবাসী।

এমআই/টিআই

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
বিজয় নিয়ে আশাবাদী নিপুণ, ফল যা হোক মেনে নেবেন কলি
সহকর্মী ও গণমাধ্যমকে এড়িয়ে গেলেন ইলিয়াস কাঞ্চন
ভোটগ্রহণ শেষ, কিছুক্ষণের মধ্যেই গণনা শুরু
এফডিসিতে শাবনূর, ভোট চাইতে হুমড়ি খেয়ে পড়লেন প্রার্থীরা
X
Fresh