স্ত্রী হত্যার দায়ের স্বামীর মৃত্যুদণ্ড
নীলফামারীতে স্ত্রীকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে স্বামী আলমগীর হোসনকে (২৮) ফাঁসির আদেশ দিয়েছে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ আদালত।
মঙ্গলবার (২১সেপ্টেম্বর) দুপুরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক মাহবুবুর রহমান এই আদেশ দেন।
ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি আলমগীর হোসেন নীলফামারী জেলার ডিমলা উপজেলার ঝুনাগাছ চাপানী ইউনিয়নের দক্ষিণ সোনাখুলি গ্রামের সিরাজুল ইসলামের ছেলে।
অভিযোগ পত্র বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি আলমগীর হোসেন ও নিহত সুমি আক্তারের মাঝে প্রেম ভালোবাসার সম্পর্ক ছিল। ২০১৪ সালের ২৪ ডিসেম্বর তারা গোপনে নীলফামারী নোটারী পাবলিক কার্যালয়ে এসে এফিডেফিট করেন। পরদিন আনুষ্ঠানিকভাবে। উভয় পরিবার তাদের বিয়ে মেনে নিয়ে কাবিননামা রেজিস্ট্রি করে বিবাহের কাজ সম্পন্ন হয়।
ছেলের পরিবারের দাবীকৃত যৌতুকের ১ লাখ ৫০ হাজার টাকার মধ্যে ১ লাখ টাকা দিয়ে একটি অটো চার্জার রিকশা কিনে দেয় মেয়ের পরিবার। পরবর্তীতে আরও ৫০ হাজার টাকার জন্য মেয়েকে নানান ভাবে শারীরিক ও মানুষিক নির্যাতন করে আলমগীর হোসেন।
২০১৬ সালের ৯ সেপ্টেম্বর রাতে যৌতুকের টাকা নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর ঝগড়া বিবাদের এক পর্যায়ে আলমগীর হোসেন স্ত্রী সুমিকে সজোরে ধাক্কা দিলে বিছানার শক্ত কাঠের সাথে লেগে সুমির মাথায় রক্তক্ষরণ হয়। সাথে সাথেই সুমি মৃত্যুবরণ করেন।
পরে মৃত্যুর ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার জন্য স্বামী আলমগীর হোসেনসহ অন্য আসামীরা স্ত্রী সুমির গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ঘরের তীরের সাথে ঝুলিয়ে রাখে এবং গায়ে ঘাস মারার বিষ ছিটিয়ে দেয়।
এ বিষয়ে মামলা দায়ের করা হলে ডিমলা থানার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক আতিকুর রহমান মামলার প্রধান আসামি আলমগীর হোসেন ছাড়া বাকি ৭ আসামিকে অব্যহতি দিয়ে চার্জশিট প্রদান করে। পরে বাদীপক্ষ আদালতে নারাজি করলে পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দেয় আদালত। পিবিআই অধিকতর তদন্ত করে আলমগীর হোসেনসহ ৮ আসামিকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দেয়।
আসামি পক্ষের আইনজীবী মো. আল বরকত হোসেন জানান, আদালত উক্ত মামলায় ১ নম্বর আসামিকে দোষী সাব্যস্ত করে ফাঁসির আদেশ দেয়। অপর ৭ জন আসামিকে বেকসুর খালাস প্রদান করেন।
তিনি জানান, যেহেতু এক নম্বর আসামিকে আদালত ফাঁসির আদেশ প্রদান করেছে। আমরা এই রায়ে হাইকোর্টে আপিল দায়ের করবো।
আলমগীর হোসেন ছাড়াও তার বাবা সিরাজুল ইসলাম, মা আনোয়ারা বেগম, চাচা জিয়াউর রহমান, ওবায়দুর রহমান, ফুফু রোসনা আক্তার,নিকট আত্মীয় আব্দুর রাজ্জাক ও আব্দুল মান্নান আসামী ছিলেন।
এসএস
মন্তব্য করুন