• ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
logo

আশ্বাসের মুলা ঝুলিয়ে বছরের পর বছর পার

টাঙ্গাইল (উত্তর) প্রতিনিধি, আরটিভি নিউজ

  ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২১, ২৩:০৯
আশ্বাসের মুলা ঝুলিয়ে বছরের পর বছর পার
আশ্বাসের মুলা ঝুলিয়ে বছরের পর বছর পার

টিনের ঘরের চালা দিয়ে দিনের বেলায় দেখা যায় আকাশ আর রাতের বেলা চাঁদ-তারা। সামান্য বৃষ্টিতে উঠান ভেজার আগেই ভিজে যায় ঘর। মরিচা পড়ে টিনের আস্ত নেই। টিনের বড় বড় ফুটো ব্যবহার করা হয়েছে ছেঁড়া কাঁথা ও পলিথিন। ঘর নির্মাণের পর আর মেরামত করা হয়নি।

এমন বেহাল দশা টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার চারটি পুরাতন আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরগুলোতে। আশ্রয়ণ প্রকল্পগুলো হলো পাঁচটিকড়ী, দেওপাড়া, কাজলা ও লক্ষিন্দর ইউনিয়নের সানবান্দা আশ্রয়ণ প্রকল্প। নির্মাণের পর অধ্যবধি পর্যন্ত কোনো সংস্কার কাজ হয়নি। এদের মধ্যে একেবারেই বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে সানবান্দা আশ্রয়ণে। এসব ঘর সংস্কারের কথা বলে দুই বছর ধরে মুলা ঝুলিয়ে রেখেছে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা।

প্রতিবছর টিআর, কাবিখা, কাবিটার টাকা লুটপাট হলেও অসহায় লোকজনদের জন্য যেন কোনো মাথা ব্যাথাই নেই। শুধু সংস্কারের আশ্বাসই দিয়ে যাচ্ছে পরিবারগুলোকে।

সরেজমিনে সানবান্দা আশ্রয়ণে ছবি তুলতে গেলে তেড়ে আসেন মর্জিনা বেগম (৪০) নামে একজন বাসিন্দা। বাঁধা দেন ছবি তুলতে। পরিচয় জানার পর ক্ষোভ নিয়ে আরটিভি নিউজকে বলতে থাকেন, মেলা মানুষ আসে এখানে। ফটো তুলে। যাওয়ার বেলা বলে কাজ হবে। পরে দেখি আর তো কাজ হয় না। ঘরে কারেন্ট নাই। আমাদের সোলার দিয়েছিল। সেটাও নষ্ট হয়ে গেছে। এখন অন্ধকারে থাকা লাগে। আশ্রয়ণটির বয়স প্রায় ১৭ বছর। মোট ঘর রয়েছে ৬০টি। এমন দশায় অনেকই চলে গেছেন। যাদের যাওয়ার কোনো জায়গা নেই তাদের মতো এখনও বাস ২৬টি পরিবারের।

আশ্রয়ণের বাসিন্দা বৃদ্ধা খোদেজা আরটিভি নিউজকে জানিয়েছেন, বৃষ্টির মধ্যে কি রাত কি দিন পলিথিনের কাগজ পেঁচিয়ে থাকতে হয়।

বয়সের ভারে কুজো হওয়া নূরুল ইসলাম আরটিভি নিউজকে বলেন, বৃষ্টির দিনে উঠানে ভিজার আগেই ঘর ভিজে গেছে। পলিথিন দিয়ে আর কত পানি শুকানো যায়।

লক্ষিন্দর ইউনিয়নের সানবান্দা এলাকার ইউপি সদস্য বাহদুর মিয়া আরটিভি নিউজকে জানিয়েছেন, শুধু ঘর দিয়েই পানি পড়ে না। তাদের টয়লেটও নাই। সোলার প্রায় সবগুলো নষ্ট, টিউবওয়েলও নাই। অন্য জায়গা থেকে পানি এনে পান করতে হয়। উপজেলায় বিষয়টি জানানো হয়েছে এখন পর্যন্ত কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। একই অবস্থা উপজেলা আরও তিনটি পুরাতন আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরগুলোর।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর চারটি আশ্রয়ণ প্রকল্পের মেরামত-সংস্কার নিমিত্ত এলজিইডি কর্তৃক প্রকল্প প্রস্তুত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পাঠানো হয়েছে। সেখানে মেরামত ব্যয় ধরা হয়েছে ২ কোটি ৭৫ লাখ ৬২ হাজার টাকা।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা এনামুল হক আরটিভি নিউজকে বলেন, সরেজমিন পরিদর্শন করে সংস্কারের জন্য প্রকল্প প্রস্তুত করে প্রায় দুই বছর আগে প্রকল্প পরিচালক বরাবর পাঠানো হয়েছে। এটি পাস হয়ে আসলে সংস্কার করা হবে।

ইউএনও মো.সোহাগ হোসেন আরটিভি নিউজকে বলেন, আমি উপজেলায় কয়েকদিন আগে যোগদান করেছি। আশ্রয়ণ প্রকল্পগুলো পরিদর্শন করবো এবং স্থানীয়ভাবে যেগুলোর সমাধান করা সম্ভব তা করা হবে। আগের নথিগুলো দেখা হবে।

এমআই

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
পাহাড়ে রাতে র‌্যাব-পুলিশের অভিযান, ১০ অপহৃত উদ্ধার
সময় বাড়ায় মেট্রোরেলে স্বস্তি, রাতেও যাত্রীর চাপ
রাত ১টার মধ্যে যেসব জায়গায় ঝড়ের শঙ্কা
দুবাইয়ে ইমাম-মুয়াজ্জিনদের বেতন বাড়ানোর নির্দেশ
X
Fresh