• ঢাকা বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১
logo

দীর্ঘ দেড় বছর পর খুলছে শরীয়তপুরের ৯০২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান 

শরীয়তপুর প্রতিনিধি, আরটিভি নিউজ

  ১১ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৮:৫১
দীর্ঘ দেড় বছর পর খুলছে শরীয়তপুরের ৯০২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান 
ফাইল ছবি

করোনা সংকটে প্রায় দেড় বছর বন্ধ থাকার পর আগামীকাল রোববার (২ সেপ্টেম্বর) খুলছে শরীয়তপুরের ৯০২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। দীর্ঘদিন পর স্কুল খোলায় উৎসাহিত শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষকরা।

জেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ঘুরে দেখা গেছে, এরই মধ্যে শিক্ষার্থীদের পাঠদানের জন্য সম্পূর্ণরূপে প্রস্তুত করা হয়েছে বিদ্যালয়গুলো। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা থেকে শুরু করে স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য রাখা হয়েছে হ্যান্ড স্যানিটাইজার মাস্ক হ্যান্ডওয়াশসহ সবধরনের সুরক্ষা সামগ্রী। জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার নির্দেশনা অনুযায়ী দীর্ঘদিন পর সশরীরে বিদ্যালয়ে আগত শিক্ষার্থীদের বরণ করা হবে ফুল দিয়ে। সে প্রস্তুতিও রয়েছে তাদের।

জেলার ৯০২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে ৬৯৮টি ও মাধ্যমিক উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে ২০৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। সাম্প্রতিক বন্যার কারণে ৫৩টি প্রাথমিক ও ৩টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্লাবিত হওয়ায় খুলে দেয়া নিয়ে দেখা দিয়েছিল অনিশ্চয়তা। ইতিমধ্যে বন্যা পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হওয়ায় বিদ্যালয় আঙিনা থেকে নেমে গেছে বন্যার পানি। তবে দু-একটি বাদে প্রায় সবকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা সশরীরে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করে নিজস্ব বিদ্যালয়ের নির্দিষ্ট ক্লাস রুমেই ক্লাস করতে পারবেন।

এদিকে শিক্ষার্থীদের সুরক্ষায় শরীয়তপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এ কে এম এনামুল হক শামীম তার নিজ উদ্যোগে শিক্ষার্থীদের সুরক্ষায় নড়িয়া ও ভেদরগঞ্জ উপজেলার ৩৬৭ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ১ লাখ মাস্ক বিতরণ করেছেন। এরই মধ্যে নেতা কর্মীদের মাধ্যমে প্রত্যেকটি বিদ্যালয়ে মাস্ক পৌঁছে দেয়া হয়েছে।

শিক্ষার্থী আরিফা আক্তার আরটিভি নিউজকে বলেন,‌ ‘দীর্ঘদিন পর আমাদের বিদ্যালয় খুলছে। আমাদের কাছে অনেক ভালো লাগতেছে। আমরা আবার বিদ্যালয় যাবো বন্ধুদের সঙ্গে দেখা হবে। আবার এক সঙ্গে পড়াশোনা ও খেলাধুলা করতে পারবো। এটা আমাদের জন্য খুবই আনন্দের। বাড়িতে বসে থাকতে আর ভালো লাগেনা।’

আন্ধারমানিক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আরটিভি নিউজকে জানান, আমাদের বিদ্যালয়ের দুটি ভবন রয়েছে। একটি ভবনের চতুর দিকে এখনো অনেক পানি। বিদ্যালয়ের মাঠে ও হাঁটুর ওপরে পানি রয়েছে। তবে পাশে আরেকটি পুরাতন ভবন আছে। সেই ভবন থেকে বন্যার পানি নেমে গিয়েছে। এরই মধ্যে পুরাতন ভবনটি ধুয়ে মুছে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে পাঠদানের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। আগামীকাল রোববার সেই ভবনেই শিক্ষার্থীদের ক্লাস নেয়া হবে। আশা করি তেমন কোনো সমস্যা হবে না।

পূর্ব নড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আসমা আক্তার আরটিভি নিউজকে জানান, প্রায় দেড় বছর পর স্কুল খুলছে। আমাদের বিদ্যালয়টি বন্যার পানিতে তলিয়ে আছে। জানিনা বিদ্যালয় ক্লাস করতে পারব কিনা। তবে আমাদের জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মহোদয় বিকল্পভাবে বিদ্যালয়ের পাশেই একটি বাড়িতে খালি ঘরের মধ্যে ক্লাস করার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। শিক্ষার্থীদের পাঠদান এ কোন সমস্যা হবে না ইনশাআল্লাহ। তবে নিজ বিদ্যালয়ের ক্লাসরুমে শিক্ষার্থীদের নিয়ে ক্লাস করতে পারব না ভেবে মনটা একটু খারাপ। তবে পানি নামতে শুরু করেছে শীঘ্রই আমরা বিদ্যালয়েই ক্লাস করতে পারব।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ আরটিভি নিউজকে জানান, দীর্ঘদিন পর খুলছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। তাই উৎসবমুখর পরিবেশে সবাই যাতে শিক্ষা গ্রহণ করতে পারবে সেই ভাবে প্রস্তুতি নিয়েছি আমরা। ইতিমধ্যে আমাদের সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে।

তিনি আরও জানান, বন্যার কারণে যে সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বা বিদ্যালয় পানি রয়েছে। সে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাশেই বিকল্প ভাবে পাঠদানের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। আগামীকাল রোববার প্রথম দিন থেকেই সকল শিক্ষার্থী ক্লাস করতে পারবে। কোন শিক্ষার্থী পাঠদান থেকে বিরত থাকবে না। এছাড়া নির্দেশনা রয়েছে দীর্ঘদিন পর বিদ্যালয় আসা শিক্ষার্থীদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেয়ার।

জিএম

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh