মা-বাবার কাছে টাকা চাওয়ায় প্রবাসী ছেলেকে পিটিয়ে হত্যা
ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার পাগলা থানার চাকুয়া গ্রামে বাবা, মা ও ছেলে মিলে পিটিয়ে হত্যা করেছে এক প্রবাসী যুবককে।
বৃহস্পতিবার (২৬ আগস্ট) ভোরে মমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এর আগে বুধবার (২৫ আগস্ট) সকালে এ ঘটনাটি ঘটে। এ ঘটনার পর অভিযুক্ত বাবা, মা ও ছোট ভাই পলাতক রয়েছেন।
নিহত উপজেলার নিগুয়ারী ইউনিয়নের চাকুয়া গ্রামের ইসহাক ঢালীর ছেলে শারফুল ইসলাম ঢালী (৩২)।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, শারফুল ইসলাম ঢালী দীর্ঘ ৯ বছর লেবাননে ভালো বেতনে চাকরি করেন। গত ৬ মাস আগে তিনি দেশে ফিরে আসেন। প্রবাসে কর্মরত অবস্থায় আয়-রোজগারের সব টাকা তিনি তার বাবার নামে দেশে পাঠিয়ে দেন। পরে দেশে ফেরত আসার পর তার বাবা তাকে কোনো টাকা দেবে না বলে জানান। এমনকি হাত খরচের টাকাও শারফুল ঢালী তার বাবার কাছে চেয়ে পেতেন না। এ নিয়ে বাবা ছেলের মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া-বিবাদ হতো।
এদিকে বুধবার (২৫ আগস্ট) সকাল সাড়ে ৬টার দিকে টাকা-পয়সা নিয়ে ঝগড়ার একপর্যায়ে বাবা ইসহাক ঢালী, মা হোসেনা আরা (৪৭), ছোট ভাই আশরাফুল ঢালী (২৮) লোহার রড ও শাবল দিয়ে শারফুল ঢালীর মাথা, পা ও বুকে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে গুরুতর জখম করে। এ সময় বসতঘরের একটি রুমে তালাবদ্ধ করে আটকে রাখেন। শারফুল ঢালীকে মারার সময় তার চাচা-চাচিসহ এলাকাবাসী উদ্ধার করতে গেলে ইসহাক ঢালী, হোসনে আরা, আশরাফুল ঢালী রড, শাবল ও রামদা দিয়ে এলাকাবাসীকে তাড়া দেয়।
দীর্ঘক্ষণ পর তার চাচা ও নুরুল ইসলাম ঢালী স্থানীয় ইউপি (নিগুয়ারি) চেয়ারম্যান শেখ শাহাবুদ্দিনকে ঘটনাটি জানান।
ইউপি চেয়ারম্যান স্থানীয় ব্যক্তিদের সঙ্গে নিয়ে শারফুল ঢালীকে তাদের বাড়ি থেকে গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে মমেক হাসপাতালে ভর্তি করে। পরে বৃহস্পতিবার (২৬ আগস্ট) সকাল সাড়ে ৬টার দিকে শারফুল ঢালী চিকিৎসাধীন অবস্থায় মমেক হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন।
নিগুয়ারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহাবুদ্দিন শেখ জানান, শারফুল বিদেশে থাকাবস্থায় সব টাকা তার বাবা ও মা কাছে পাঠাত। বাবা ও মা খারাপ প্রকৃতির লোক ছিল। টাকার হিসাব চাওয়ার কারণে ছেলেকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
পাগলা থানার ওসি মো. রাশেদুজ্জামান বলেন, এরই মধ্যে পুলিশ ঘটনাস্থলে রয়েছে। এ ঘটনায় একটি হত্যা মামলার প্রস্তুতি চলছে।
জিএম
মন্তব্য করুন