শসা চাষে লাভবান হচ্ছে নড়াইলের চাষিরা
নড়াইলে দিন দিন বাড়ছে ক্ষীরা আর শসার চাষ। কম খরচে বেশি লাভ হওয়ায় চাষিরা এদিকে ঝুঁকছেন। রোববার (১ আগস্ট) বিকেলে সরেজমিনে গিয়ে এই তথ্য জানা যায়।
কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, এ বছর জেলায় ১৫০ হেক্টর জমিতে শসা ও ক্ষীরা চাষ হয়েছে। যা গত বছরের চেয়ে ১০ হেক্টর বেশি। সদরের সিঙ্গাশোলপুর ইউনিয়নের শোভারঘোপ, বড়গাতি, চুনখোলা,তারাপুর বিছালী ইউনিয়নের বিছালী, চাকই, আড়পাড়া, মির্জাপুর, মধুরগাতি, কলোড়া ইউনিয়নের বিড়গ্রাম, মুশুরি, কলোড়া,আগদিয়া এবং ভদ্রবিলা ইউনিয়নের ভদ্রবিলা, মিরাপাড়া ও পাইকাড়া গ্রামেই প্রধানত বাণিজ্যিক ভিত্তিতে এই শসা ও ক্ষীরা চাষ হচ্ছে।
সদরের সিঙ্গাশোলপুর ইউনিয়নের চুনখোলা গ্রামের ভূমিহীন জাহান্দার বিশ্বাস (৪০) দীর্ঘ ১১ বছর অন্যের জমি বর্গা নিয়ে শসা ও ক্ষীরা চাষ করছেন। এ কাজে তার স্ত্রী রূপালী বেগমও সরাসরি সহায়তা করে থাকেন। এই ফসল বিক্রি করে তিনি নিজ গ্রামে ১৫ শতক জমি কিনে একটি আধা-পাকা ঘরও নির্মাণ করেছেন। বর্তমানে তিনি প্রায় ১ একর জমিতে শসার চাষ করছেন। প্রতি বছর এ চাষ থেকে প্রায় ১ লাখ টাকা ঘরে তোলেন।
পার্শ্ববর্তী বড়গাতি গ্রামের প্রান্তিক চাষি প্রদীপ বিশ্বাস (৩৬) প্রায় ৮ বছর ধরে ৬০ শতক জমি লিজ নিয়ে শসা ও ক্ষীরা চাষ করছেন। বছরে তিনি খরচ বাদে ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা ঘরে তোলেন।
একই গ্রামের প্রান্তিক চাষি ভূবন বিশ্বাস (৩২) প্রায় ৬ বছর ধরে ৫০ শতক জমি বর্গা নিয়ে শসার চাষ করছেন। প্রতি বছর তিনি প্রায় ৪০ থেকে ৪৫ হাজার টাকা লাভ করেন। নড়াইলে এভাবে অনেকেই ক্ষীরা ও শসার আবাদ করে এখন ভাগ্য বদল করছেন। অল্পদিনেই ফলন এবং ভালো দাম পাওয়ায় দিন দিন এর আবাদ বাড়ছে। প্রতিদিন দেড় থেকে ২শ মন শসা ও ক্ষীরা জেলার হাট-বাজারে বিক্রি হচ্ছে। বর্তমানে জেলায় প্রায় সাড়ে ৩ হাজার কৃষক এ চাষের সঙ্গে যুক্ত। জেলার চাহিদা মিটিয়ে খুলনা, যশোর, রাজশাহী এবং ঢাকায় এ শসা ও ক্ষীরা রপ্তানি হচ্ছে।
বিছালী গ্রামের শসা ও ক্ষীরা ব্যবসায়ী মো. মিঠু মোল্যা আরটিভি নিউজকে বলেন, বাজারে এখন ৫শ থেকে ৬শ টাকায় মন বিক্রি হচ্ছে। এর আগে চাষিরা ৮শ থেকে ৯শ টাকাও বিক্রি করেছেন। নড়াইলের চাহিদা মিটিয়ে প্রতিদিন নড়াইল থেকে ২০টি ছোট ট্রাক শসা ও ক্ষীরা যশোর, খুলনা, রাজশাহী ও ঢাকায় রপ্তানি করা হয়।
সিঙ্গাশোলপুর ইউনিয়নের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা শামীমা ইয়াসমিন আরটিভি নিউজকে বলেন, সিঙ্গাশোলপুর ইউনিয়নে প্রায় ৫শ চাষি এই শসা ও ক্ষীরার সঙ্গে সমন্বিতভাবে মরিচ, ধুন্দল ও চাল কুমড়ার চাষ করছেন। ফলে এসব চাষিরা বেশ লাভবান হচ্ছে।
নড়াইল কৃষি অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক দীপক কুমার রায় আরটিভি নিউজকে বলেন, জেলার দক্ষিণাঞ্চলের মাটি শসা ও ক্ষীরা চাষের জন্য উত্তম। আর কিছু দিন পর গ্রীষ্মকালীন শসা ও ক্ষীরার জাত মারা যাবার পর শীতকালীন জাতের বীজ বপন করবেন চাষিরা।
জিএম
মন্তব্য করুন