• ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
logo

‘প্রধানমন্ত্রীর পুরস্কার পেলাম, বাবাকে নির্যাতনের বিচার পেলাম না’

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি, আরটিভি নিউজ

  ০১ আগস্ট ২০২১, ১৬:৪৪
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত থেকে পুরস্কার নিচ্ছেন সাব্বির হোসেন জয়
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত থেকে পুরস্কার নিচ্ছেন সাব্বির হোসেন জয়, ছবি: প্রতিনিধি

‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত থেকে ৪ বার পুরস্কার পেয়েছি। আরো দুইবার পুরস্কার পাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু করোনার কারণে এই দুইবারের পুরস্কার অপেক্ষমান রয়েছে। এছাড়া প্রেসিডেন্ট স্কাউট পদক পেয়েছি। আন্তর্জাতিক রোবট অলিম্পিয়াডে তৃতীয় স্থান অধিকার করেছি। এতো পুরস্কার পাওয়ার পরেও প্রশাসনসহ সমাজের গণ্যমান্য ব্যক্তিদের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও আমি আমার বাবাকে নির্যাতনের বিচার পেলাম না!’

এভাবেই কান্নাজড়িত কণ্ঠে কথাগুলো বলছিলেন গোপালগঞ্জের সরকারি কোটালীপাড়া ইউনিয়ন ইন্সটিটিউশনের এসএসসি পরীক্ষার্থী সাব্বির হোসেন জয়। সাব্বির কোটালীপাড়া উপজেলার তারাশী গ্রামের মিজানুর রহমান তালুকদারের ছেলে সাব্বির হোসেন জয়।

সে ২০১৫ সালের শিশু দিবসে চিত্রাঙ্কণ প্রতিযোগিতায় গোপালগঞ্জ জেলায় প্রথম, ২০১৭ সালের ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ বিষয়ে রচনা প্রতিযোগিতায় ঢাকা বিভাগে দ্বিতীয়, ২০১৮ সালের ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ বিষয়ে রচনা প্রতিযোগিতায় প্রথম, ২০২০ সালের ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ বিষয়ে রচনা প্রতিযোগিতায় ঢাকা বিভাগে প্রথম স্থান অধিকার করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত থেকে পুরস্কার গ্রহণ করেন।

এছাড়াও সাব্বির হোসেন জয় প্রেসিডেন্ট স্কাউট পদক ও আন্তর্জাতিক রোবট অলিম্পিয়াডে তৃতীয় স্থান অধিকারসহ অসংখ্য পুরস্কার পেয়েছেন বলে পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে।

সাব্বির হোসেন জয়ের মা স্বপ্না রহমান বলেন, আমার প্রতিবেশী স্কুল শিক্ষক ফিরোজা খানম আমাদের জায়গা অবৈধভাবে দখল করে ভবন নির্মাণ করছেন। আমরা বাঁধা দিতে গেলে সে একাধিকবার লোকজন নিয়ে আমার স্বামীকে মারধর করেছে। সর্বশেষ গত শুক্রবার সে আমার স্বামীকে লোকজন নিয়ে মারধর করেন। আমার স্বামী বর্তমানে উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সাব্বির হোসেন জয়ের বাবা মিজানুর রহমান তালুকদার বলেন, ফিরোজা বেগম যে জায়গায় ভবন নির্মাণ করছেন সেই জায়গায় নিয়ে আদালতে মামলা চলছে। এছাড়াও ওই জায়গার উপর ১৪৪ ধারা জারি রয়েছে। ফিরোজা বেগম এই ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে ভবন নির্মাণ করেছেন। আমি বাধা দিতে গেলে তিনি লোকজন নিয়ে আমাকে মারধর করেন।

মিজানুর রহমান তালুকদার আরও বলেন, ফিরোজা খানমের স্বামী জালাল উদ্দিন ফকির সেনাবাহিনীতে চাকরি করেন। তার কথা বলে ফিরোজা বেগম প্রতিনিয়ত আমাদেরকে হুমকি দেয়। সর্বশেষ তিনি গত শুক্রবার (৩০ জুলাই) লোকজন নিয়ে আমাকে মারধর করেন। এ বিষয়ে আমার স্ত্রী স্বপ্না রহমান বাদী হয়ে কোটালীপাড়া থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।

সাব্বির হোসেন জয় বলেন, ‘এ নিয়ে ফিরোজা খানম আমার বাবাকে তিন বার মারধর করেছেন। এ ঘটনার বিচারের জন্য আমি একজন শিশু হয়ে প্রশাসন, জনপ্রতিনিধিসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের কাছে বার বার গিয়েছি। আমি এর কোন বিচার পাইনি। এখন আমি মানবতার মা, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করছি।’

নাম প্রকাশ না করা শর্তে এলাকার একজন গৃহিণী বলেন, শিক্ষক ফিরোজা খানম আমাদের মহল্লার প্রায় ১০টি পরিবারকে প্রতিনিয়ত নির্যাতন করছে। মিজানুর রহমান তালুকদারের মতো সে একাধিক ব্যক্তিকে লোকজন নিয়ে মারধর করেছেন।

এ বিষয়ে ফিরোজা খানমের কাছে জানতে চাইলে তিনি অবৈধভাবে জায়গা দখল ও মিজানুর রহমান তালুকদারকে মারধরের কথা অস্বীকার করেন।

অভিযোগের তদন্তকারী কর্মকর্তা কোটালীপাড়া থানার এসআই আজাদ আরটিভি নিউজকে বলেন, অভিযোগটির তদন্ত চলছে। সত্যতা পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পি

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
প্রধানমন্ত্রীর পুরস্কার পাওয়া মাউথ পেইন্টার ইব্রাহিমের কষ্টে দিন কাটছে    
X
Fresh