• ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
logo

মৌসুমী ব্যাপারীদের দৌরাত্ম্যে বিপর্যস্ত গরুর খামারিরা

মেহেরপুর প্রতিনিধি, আরটিভি নিউজ

  ৩১ জুলাই ২০২১, ০৮:৪১
মৌসুমী ব্যাপারীদের দৌরাত্ম্যে বিপর্যস্ত মেহেরপুরের গরুর খামারিরা
গরুর খামার

মৌসুমী ব্যাপারীদের দৌরাত্ম্যে গরুর দাম বৃদ্ধি আর করোনার বিরূপ প্রভাবে হাটে ছিল না পর্যাপ্ত ক্রেতা। রাজধানীর কোরবানির পশুর হাট থেকে তাই ফেরত এসেছে মেহেরপুর জেলার হাজার হাজার গরু। এতে চরম লোকসানের মুখে পড়েছেন হাজারো খামারি আর গরুর ব্যাপারী। আগামী দিনে গরু পালন নিয়েও দেখা দিয়েছে চরম সংকট।

জানা গেছে, মেহেরপুর জেলার চাহিদা মিটিয়ে ৩০ হাজারেও বেশি কোরবানি উপযুক্ত গরু এবার তোলা হয় রাজধানী ঢাকার কোরবানির পশুর হাটে। গেল বছর কোরবানির পশু বেশি দরে বিক্রি হওয়ায় এবার আশায় বুক বেঁধেছিলেন অনেকে। এবার সে আশার গুড়ে বালি ঢেলে অবিক্রিত রয়ে যায় কয়েক হাজার গরু।

স্থানীয় গরু ব্যাপারীরা আরটিভি নিউজকে জানিয়েছেন, মৌসুমী গরুর ব্যাপারীদের দৌরাত্ম্যে জেলার গরুর বাজার ছিল চড়া। বেশি লাভের আশায় চড়া দরে গরু কেনা শুরু করেন মৌসুমী ব্যাপারীরা। ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে মৌসুমী ব্যাপারীদের সাথে প্রতিযোগিতায় নামেন দীর্ঘদিন ধরে গরুর ব্যবসার সাথে জড়িত ব্যাপারীরা।

ভুক্তভোগী ব্যাপারী পশ্চিম মালসাদহ গ্রামের হাজিজুল ইসলাম আরটিভি নিউজকে বলেন, বিভিন্ন পেশার মানুষ যাদের হাতে টাকা আছে তারা এবার গরু কেনা শুরু করেন। গরুর ওজন, দর ও বাজারে কত টাকায় বিক্রি হবে এসব বিষয়ে তাদের কোনো ধারণা ছিল না। লাখ টাকার গরু তারা দাম দিয়েছে দেড় লাখ টাকা। ফলে খামারিদের কাছ থেকে আমরা প্রকৃত দামে গরু কিনতে পারিনি। তাই বাজারে তুলেও বিক্রি হয়নি।

ব্যাপারীরা আরটিভি নিউজকে জানিয়েছেন, বেশি দামে গরু কেনা না হলে অনেক গরু বিক্রি করা সম্ভব ছিল। করোনার কারনে ক্রেতা কম থাকলেও দর বেশি, তাই অনেকে গরু না কিনে ফিরে গেছেন।

গরু পালনকারীরা আরটিভি নিউজকে জানিয়েছেন, এবার অনেকের অবস্থা পথের ফকিরের মতো। ঋণ ও গো-খাদ্যের দোকানের বাকি পরিশোধ করা যায়নি। ফলে একটা বড় মানসিক চাপের মধ্যে রয়েছেন তারা।

গরু ব্যাপারী পূর্বমালসাদহ গ্রামের এখলাছ উদ্দীন আরটিভি নিউজকে বলেন, রাজধানীর কোরবানির পশুর বাজারে ক্রেতার উপস্থিতি কম থাকায় আমরা চরম বিপাকে থাকতে হয়েছে। দ্বিগুণ ভাড়া দিয়ে অনেক গরু ফেরত নিয়ে এসেছি। ছোট আকারের কিছু গরু বিক্রি হয়েছে কিন্তু তাতেও লোকসান হয়েছে।

খামারি ও ব্যাপারীরা আরটিভি নিউজকে জানান, গরু পালনকারীদের কাছ থেকে বেশিরভাগ ব্যাপারী বাকিতে গরু কিনে ঢাকার হাটে নিয়ে যায়। গরু বিক্রি না হওয়ায় খামারিদের টাকা পরিশোধ করতে পারছে না ব্যাপারীরা। স্থানীয় বাজারে বিক্রি করতে গেলে অনেক টাকা লোকসান হচ্ছে। তাই গরু এখন গলার কাটা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

কয়েকজন খামারি আরটিভি নিউজকে জানান, কোরবানির আগে গরু বিক্রি করে পরবর্তী বছরে মোটাতাজা করার জন্য ছোট গরু কেনা হয়। এবার খামারি ও গরু পালনকারীদের বেশিরভাগের হাতে টাকা না থাকায় গরু কিনতে পারছেন না তারা।

জেলার গ্রামীণ অর্থনীতিতে উদীয়মান খাত কোরবানির পশু। সে পশু বিক্রির পরেই পরবর্তী বছরে বিক্রির জন্য লালন-পালন শুরু হয়। লোকসানের কবলে আগামি কোরবানির জন্য গরু কেনার অর্থ নেই খামারিদের কাছে। ফলে চরম সংকটের মুখে পড়েছে পশুপালন খাত।

এমআই

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
গরু রেখে পালাল চোর, গাড়িতে আগুন দিলো জনতা
মেহেরপুরে তীব্র তাপপ্রবাহ, ব্যাহত হচ্ছে ফসল ঘরে তোলার কাজ 
মেহেরপুরে গরমে বেড়েছে শরবতের চাহিদা, যত্রতত্র দোকান
মেহেরপুরে তীব্র তাপপ্রবাহ, দুশ্চিন্তায় বোরো ধান চাষিরা
X
Fresh