• ঢাকা শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
logo

হাসপাতালে অক্সিজেন না পেয়ে সাংবাদিকের মায়ের মৃত্যু

রংপুর প্রতিনিধি, আরটিভি নিউজ

  ২৪ জুলাই ২০২১, ২৩:১৮
রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে
রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (ফাইল ছবি)

রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রোগী ভর্তির ২৭ ঘণ্টার মধ্যে কোনও চিকিৎসক দেখতে না আসায় এবং যথাসময়ে অক্সিজেন সরবরাহ না করায় এক সাংবাদিকের মায়ের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। নিহত আয়েশা ছিদ্দিকা দীপ্ত টেলিভিশনের রংপুর প্রতিনিধি বাবলুর রহমান বারীর মা। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে দায়ীদের চিহ্নিত করে বিচার দাবি করেছেন স্বজনরা।

সাংবাদিক বাবলুর রহমানের অভিযোগ, ঈদের দিন সকাল থেকে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন তার মা আয়েশা ছিদ্দিকা। প্রচণ্ড শ্বাসকষ্ট হচ্ছিল। স্থানীয় চিকিৎসকরা দ্রুত অক্সিজেন দেওয়ার জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দেন। বিকেল ৩টার দিকে মাকে নিয়ে রংপুর মেডিকেলের জরুরি বিভাগে আসেন তিনি। এরপর তাকে হাসপাতালের দ্বিতীয়তলায় দুই নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়।

এ সময় একবার একজন ইন্টার্ন চিকিৎসক এসে তাদেরকে বলেন, জরুরি ভিত্তিতে অক্সিজেন দিতে হবে। এরপর অক্সিজেনের জন্য ওয়ার্ডে কর্তব্যরত নার্স ও ওয়ার্ডবয়সহ অনেকের কাছে ছোটাছুটি করে আকুতি জানান বাবলুর রহমান। কিন্তু কেউ এগিয়ে আসেনি। এদিকে তার মায়ের শ্বাসকষ্ট তখন তীব্র। কোনো উপায় না পেয়ে হাসপাতালের পরিচালক ডা. রেজাউল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করতে তার মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করেন। কিন্তু পরিচালককে পাওয়া যায়নি। পরে অক্সিজেনের দায়িত্বে থাকা বাবু নামে এক কর্মকর্তার কাছে ছুটে যান বাবলুর রহমান।

অবশেষে পাঁচ ঘণ্টা পর রাত ৮টার দিকে তার মাকে অক্সিজেন সরবরাহ করা হয়। তখন তার মায়ের অবস্থার আরও অবনতি ঘটেছে। এ সময় ওই ওয়ার্ডের একজন ইন্টার্ন চিকিৎসক ছাড়া আর কোনও চিকিৎসক ছিলেন না বলে অভিযোগ করেন তিনি।

তিনি জানান, বুধবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে মায়ের অবস্থার অবনতি ঘটলে তাকে এক ঘণ্টা পর হাসপাতালের আইসিইউতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেও কোনও চিকিৎসক ছিলেন না। কর্তব্যরত নার্স আইসিইউতে তাকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেন।

এ সময় দায়িত্বরত নার্স বলেন, অনেক দেরি করে ফেলেছেন। অবশেষে বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে আয়েশা ছিদ্দিকার মৃত্যু হয়।

বাবলুর রহমান বলেন, উত্তরাঞ্চলের অন্যতম বৃহৎ চিকিৎসা কেন্দ্র রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যদি অক্সিজেন না থাকে তাহলে মুমূর্ষু রোগীরা চিকিৎসা পাবে কীভাবে? সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে আকুতি-মিনতি করার পাঁচ ঘণ্টা পর অক্সিজেন পেয়েছি। ততক্ষণে আমার মায়ের যা হওয়ার হয়ে গেছে। এরপর আইসিইউতে আনা শুধু সান্ত্বনা ছাড়া আর কিছুই ছিল না।

তিনি আরও বলেন, হাসপাতালের পরিচালকের মোবাইল ফোনে অন্তত ২০ বার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি। দীর্ঘ ২৭ ঘণ্টা মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ার সময় পর্যন্ত কোনও চিকিৎসক দেখতে আসেননি। শুধু চিকিৎসকের অবহেলা আর যথাসময়ে অক্সিজেন দিতে না পারায় মা মারা গেছেন বলে অভিযোগ করে বিচার দাবি করেন সাংবাদিক বাবলুর রহমান।

এ ব্যাপারে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. রেজাউল ইসলাম মোবাইল ফোনে আরটিভি নিউজকে বলেন, কোনও সাংবাদিক তাকে ফোন করেছে বলে মনে নেই। তবে চিকিৎসা ক্ষেত্রে কোনো দায়িত্বহীনতা থাকলে তদন্ত করে দেখা হবে।
পি

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
ডেঙ্গুতে আরও একজনের মৃত্যু, চলতি বছরে ২৪
ধ্রুব এষ আইসিইউতে
‘ডেঙ্গু মোকাবিলায় সারাদেশে প্রস্তুত হাসপাতালগুলো’
লক্ষ্মীপুরে হামলায় আহত ছাত্রলীগ নেতার মৃত্যু 
X
Fresh