বানের পানির নিচে কৃষকের স্বপ্ন
আগাম বন্যা ও বানের পানিতে ভেসে গেছে হাওরের ফসল। এ যেন সম্পদহানী নয়, গরীব খেটে খাওয়া মানুষের স্বপ্নভঙ্গ। বানের পানিতে তলিয়ে গেছে তিল তিল করে গড়ে তোলা স্বপ্ন। আর সে স্বপ্ন হারিয়ে দিশেহারা হাওরের প্রায় ৯০ লাখ মানুষ।
পানিতে হাওরাঞ্চল তলিয়ে যাবার পর, ত্রাণ সংকটে পড়েছেন ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা। সরকারের পক্ষ থেকে ত্রাণের ব্যবস্থা করা হলেও, তা পর্যাপ্ত নয় বলে জানিয়েছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা।
কৃষকরা জানান, বছরে একবারই তারা ধানের চাষ করেন যা দিয়ে সারাবছর চলেন তারা। অপ্রত্যাশিত এই আগাম বন্যায় শস্য হারিয়ে দিশেহারা এখন কৃষকরা।
শাল্লায় আরটিভি অনলাইনের সঙ্গে কথা হয় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সঙ্গে। তারা জানান নিজেদের কষ্টের কথা। চান প্রধানমন্ত্রীসহ সবার সহযোগিতা।
গোরাঙ্গ বাবু আরটিভি অনলাইনকে বলেন, আমার ৬ কানি জমিতে ধান চাষ করেছি, কিন্তু বন্যার পানিতে সব তলিয়ে গেছে। প্রতি বছর আমরা এ সময়টার জন্য অপেক্ষা করি ঘরে ধান তুলতে। কিন্তু এবার সেটা আর হলো না। সব পানিতে তলিয়ে গেছে।
তিনি বলেন, পরিবার নিয়ে কিভাবে জীবন পার করবো তা জানি না। ফসল তলিয়ে যাওয়ায় আমার ১০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে ধান আবাদ করেছি। ফসল তো ঘরে তুলতেই পারিনি, উল্টো এখন মাথায় ঋণের বোঝা।
আফাজ উদ্দিন নামে এক কৃষক বলেন, আমার নিজের তেমন জমি নেই। ঋণে টাকা নিয়ে অন্যের জমিতে ধান চাষ করেছি। আমার সব ধান পানির নিচে চলে গেলো। এখন পরিবার নিয়ে কি খাব, কিভাবে চলবো।
তিনি বলেন, অন্য বছর ঘরের খোরাক রেখে বাকিটা বিক্রি করতাম। যা টাকা আয় হতো তা খাটিয়ে আরো বাড়তি কিছু আয় হতো। আর এবার ঋণের টাকাও শোধ করতে পারবো না।
এক বছর কৃষি ঋণ আদায় বন্ধের বিষয়ে সালাম শেখ বলেন, প্রধানমন্ত্রীর এ ঘোষণা আমদের জন্য ভালো। একটা বছর অন্তত নিশ্চিন্তে থাকতে পারবো।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের হিসাবে হাওরের বন্যায় ৪০ লাখ ৩০ হাজার মানুষ (৮ লাখ পরিবার) ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আর কৃষি মন্ত্রণালয়ের হিসাবে ৫ লাখ ৭ হাজার পরিবার বা ২৫ লাখ মানুষ ফসল হারিয়ে ক্ষতির মুখে পড়েছে।
এসএস
মন্তব্য করুন