• ঢাকা মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১
logo

ক'রোনায় মৃ'ত স্বামীর ম'রদেহ নিয়ে রাতভর শ্মশানে স্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার কুষ্টিয়া, আরটিভি নিউজ

  ০৫ জুলাই ২০২১, ১০:৫৬
করোনায় মৃত স্বামীর মরদেহ নিয়ে রাতভর শ্মশানে স্ত্রী
মরদেহ নিয়ে রাতভর শ্মশানে স্ত্রী

সনাতন ধর্মের মৃত ব্যক্তিকে মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকজন এর সহায়তায় সমাহিত করা হয়েছে। কারণ করোনায় মারা যাওয়া ব্যক্তির সৎকারে কেউ এগিয়ে আসেনি। এর আগে মানুষের আসার অপেক্ষায় স্বামীর মরদেহ পাশে নিয়ে রাতভর পাহারা দিয়েছেন স্ত্রী। হৃদয় বিদারক এই ঘটনাটি ঘটেছে কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার মিরপুর পৌরসভা এলাকায়।

জানা গেছে, মিরপুর পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডের হরিতলা এলাকার প্রফুল্ল কর্মকার (৭০) করোনায় আক্রান্ত হয়ে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। শনিবার (৩ জুলাই) রাতে হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে তার মৃত্যু হয়। রাতেই দু’জনকে সঙ্গে নিয়ে অ্যাম্বুলেন্সে করে মিরপুর পৌর শ্মশানে স্বামীর লাশ নিয়ে যায় স্ত্রী কল্পনা।

কল্পনা জানান, অ্যাম্বুলেন্স যখন মিরপুরে পৌর শ্মশানে পৌঁছায় তখন মধ্যরাত। শ্মশান গেটে তালা। সে সময় শ্মশান দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিরা নিজ নিজ বাড়িতে অবস্থান করছিলেন। খবর দেয়া হলেও করোনা আক্রান্তের মৃত্যু শুনে তারা কেউ আসেনি। তবে তাদের কাছ থেকে শ্মশানের চাবি নেয়া হয়। পরিবারের অন্য সদস্যরাও করোনায় আক্রান্ত হওয়ায় তারা আসতে পারেননি।

এরপর স্থানীয়দের খবর দেয়া হয়। তারাও কেউ আসেননি। পরে শ্মশানে লাশ নামানো সম্ভব হয়নি। খানিক বাদে শ্মশানের পাশে গোপালপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বারান্দায় মরদেহ নামিয়ে ফেরত চলে যায় অ্যাম্বুলেন্স। একে একে ফেরত চলে যান সঙ্গে থাকা দু’জনও।

তিনি আরও জানান, তিনি ফেরত যাননি। সারারাত ধরে মানুষের অপেক্ষায় স্বামীর লাশের পাশে পাহারায় ছিলেন। সকাল অবধি অপেক্ষার পরও মরদেহ সৎকারে শ্মশান কমিটি বা নিজ আত্মীয়-স্বজনদের সাহায্য পাননি তিনি। এক পর্যায়ে বিষয়টি অবহিত করেন স্থানীয় প্রশাসনকে। স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তায় পরে মুসলিম সম্প্রদায়ের কয়েকজন এসে শ্মশানের পাশেই মাটিচাপা দেন প্রফুল্ল কর্মকারকে।

সোমবার (৫ জুলাই) সকালে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মৃত প্রফুল্ল কর্মকারের স্ত্রী কল্পনা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। নিজের স্বামীর মরদেহ ধর্মীয় রীতিতে সৎকার করতে না পেরে তিনি চরম শোকাহত।

স্থানীয় পৌর কাউন্সিলর জাহিদুল ইসলাম আরটিভি নিউজকে জানান, প্রফুল্ল কর্মকারের পরিবারের অন্যান্য সদস্যরাও করোনা আক্রান্ত। সে কারণে তার পরিবারের সদস্যরা মরদেহ সৎকার করতে পারেননি। তবে হিন্দু সম্প্রদায়ের কেউ মরদেহটির সৎকার করার জন্য এগিয়ে আসেননি। রোববার (৪ জুলাই) সকালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিষয়টি জানালে তিনি স্থানীয় মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকজন এর সহায়তায় তাকে সমাহিত করার ব্যবস্থা করেন।

তিনি আরও জানান, প্রফুল্ল কর্মকার গত সপ্তাহ ধরে মিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন ছিলেন। তার শারীরিক অবস্থা খারাপ হলে গত শনিবার রাতে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। সঙ্গে ছিলেন স্ত্রী কল্পনা। মৃত্যুর পর মরদেহ বাড়ি নিতে চাইলেও করোনার নিয়মে তা পারেননি স্ত্রী কল্পনা।

মিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লিংকন বিশ্বাস আরটিভি নিউজকে জানান, বিষয়টি জানার পরপরই পৌর মেয়র ও স্থানীয় কাউন্সিলরকে অবহিত করেন। তারা স্থানীয় লোকজনকে দিয়ে সমাহিত করার কাজটি সম্পন্ন করেছেন।

জিএম/পি

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
শিল্পী সমিতির নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে নিপুণের মন্তব্য
গরম নিয়ে সবশেষ যে তথ্য জানাল আবহাওয়া অফিস
ইরানের হামলার পর যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসরায়েল
ফ্লাইওভার থেকে ৫০ যাত্রী নিয়ে পড়ে গেল বাস, নিহত ৫ 
X
Fresh