সুদখোরের টাকার চাপে নাটোরের বড়াইগ্রামে যুবকের আ'ত্মহত্যা
নাটোরের বড়াইগ্রামে সুদখোর সেকেন্দারের (৫০) টাকার চাপে শামীম প্রামানিক (২৫) নামে এক যুবকের আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে। নিহত শামীম উপজেলার বনপাড়া পৌরসভার ১২ নাম্বার ওয়ার্ডের আটুয়া গ্রামের মো. জামাল প্রামানিকের ছেলে।
কাউন্সিলর দুলাল হোসেন ও নিহতের পরিবার জানায়, শামীম তার অভিভাবকদের অজান্তে মাঝগাঁও ইউনিয়নের লাথুরিয়া গ্রামের পলান প্রামানিকের ছেলে সেকেন্দারের কাছ থেকে আট মাস আগে ১০ হাজার টাকা নেয়। সেকেন্দারকে দুই কিস্তি সুদের টাকাও দেয়। পরে শামীম টাকা দিতে না পারায় বেশ কিছুদিন ঢাকায় অবস্থান করে। কয়েকদিন আগে সে গোধড়া গ্রামে নানার বাড়ি আসে।
সেদিন দুপুরে সেকেন্দার লোকজনসহ নানার বাড়িতেই শামীমকে আটক করে এবং টাকা না দিলে গাছে টাঙ্গিয়ে মারধরের হুমকি দেয়। এ সময় শামীম সুদখোরদের হাত থেকে রক্ষা পেতে টাকা দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়। নিহত শামীম টাকার জোগাড় করতে না পেরে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় অপমানে ইঁদুর মারা গ্যাসের বড়ি খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে।
অসুস্থ অবস্থায় স্বজনরা তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার দিবাগত রাত ৯টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
এদিকে সুদ ব্যবসায়ী সেকেন্দারের ভয়ে আটুয়ার ১০/১২ জন লোক গ্রামছাড়া রয়েছে। তাছাড়াও চড়া সুদে টাকা দিয়ে ফাঁকা চেক নিয়ে বিভিন্নভাবে মামলার মাধ্যমে হয়রানির শিকার হয়েছে অন্তত ১০/১২ টি পরিবার। জায়গা জমি বিক্রি করে তারা আজ অসহায়।
রওশন আলী বলেন-শামীমের মতো আজ আমারও বিষ খেয়ে মরা ছাড়া উপায় নেই। সেকেন্দারের কাছ থেকে ২৫ হাজার টাকা নিয়ে দেড় লাখ টাকা দিয়েও রেহাই পাইনি। চেক দিয়ে মামলা করে আমাকে এক বছর জেল খাটিয়েছে।
একই গ্রামের কাজল হোসেন বলেন-এই সেকেন্দারের কাছ থেকে আমি ৫০হাজার টাকা নিয়ে আড়াই লাখ টাকা দিয়েছি। তারপরও সে টাকার জন্য আমাকে মারপিট করে রক্তাক্ত করেছে। আমার শরীরে ৩শ ৮৬ টি সেলাই দেয়া আছে। আজ আমি তার কারণে পঙ্গুত্ব জীবন যাপন করছি।
এদিকে সুদ ব্যবসায়ী সেকেন্দারকে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
বিষয়টি নিয়ে বড়াইগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আনোয়ারুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এ ব্যাপারে অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এম
মন্তব্য করুন